বাবার সঙ্গে মাঠে-ঘাটে কাজ, বাড়ি বাড়ি দুধ দিয়েও মাধ্যমিকে তাক লাগালো কিরণ

বাবার সঙ্গে মাঠে-ঘাটে কাজ, বাড়ি বাড়ি দুধ দিয়েও মাধ্যমিকে তাক লাগালো কিরণ

কালনা: অভাবের সংসার৷ সম্বল বলতে এক বিঘা জমি৷ তাই অন্যের জমিতেও চাষ করতে হয় তাঁর বাবাকে। সেই সঙ্গে দুধ বিক্রি করে পেট চলে পরিবারের। পরিস্থিতি এমনই যে, বাবার সঙ্গে মাঠে কাজ করতে হয়েছে কিরণক৷ বাড়ি বাড়ি বেচেছে দুধ৷ এত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে মনপ্রাণ দিয়ে৷ এক মুহূর্তের জন্যেও পড়াশোনায় অবহেলা করেননি৷ দারিদ্র্যর সঙ্গে লড়াই করেই মাধ্যমিকে তাক লাগালেন কালনার কিরণ ঘোষ৷ তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬৪৬৷

আরও পড়ুন- পায়ে লিখে মাধ্যমিক দিয়ে ৬ বিষয়ে লেটার! তাক লাগাল আলম

কালনা ১ ব্লকের আটঘরিয়া-সিমলন পঞ্চায়েতের সারগড়িয়া এলাকার বাসিন্দা কিরণ সোন্দলপুর বৃন্দাদেবী বিদ্যামন্দির স্কুলের ছাত্র। তার বাবার কাছে মাত্র এক বিঘা জমি রয়েছে। তাই সংসার চালাতে অন্যের জমিতেও চাষ করতে হয় তাঁকে৷ কিন্তু তাতেও সব প্রয়োজন মেটে না। তাই মাঝে মধ্যে দুধও বিক্রি করেন কিরণের বাবা সুনীল ঘোষ। পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে বাবাকে সাহায্য করতে হয় কিরণকেও৷ মাঠে চাষের কাজে হাত লাগানোর পাশাপাশি দুধুও বেচেছে সে৷ সেই কিরণই তাক লাগানোর মতো রেজাল্ট করল মাধ্যমিকে৷ সে বাংলায় পেয়েছে ৯৬, ইংরাজিতে ৭৩, অঙ্কে ৯৫, ভৌতবিজ্ঞানে ৯৫, জীবনবিজ্ঞানে ৯৮, ইতিহাসে ৯০ ও ভূগোলে ৯৯। ছেলে ভালো ফল করলেও চিন্তা কাটছে না পরিবারের৷ 

কিরণ জানায়, দিন আনা দিন খাওয়া সংসার তাঁদের৷ তার উপর তার পড়াশোনার খরচ৷ সব কিছু সামাল দিতে অন্যের জমিতে চাষ করার পাশাপাশি দুটি গরু পুষেছে তার বাবা। দুধ বিক্রিও করতে হয় কখনও কখনও। তাঁর কথায়, ‘‘সময় পেলেই বাবাকে মাঠের কাজে সহযোগিতা করি। দুধও বিক্রি করি।” সুনীলবাবু বলেন, “চাষবাস করে সংসার চালাই। তার উপর শারীরিক অসুস্থতা, চিকিৎসার খরচও রয়েছে৷ কী ভাবে ছেলের উচ্চশিক্ষার খরচ সামালব বুঝে উঠতে পারছি না।” বড় হয়ে গবেষক হতে চায় কিরণ। ভূগোল নিয়ে পড়তে চায়৷ আগামী দিনে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে সহযোগিতার আর্জি জানিয়েছে সে৷