বর্ধমান: আগামী শিক্ষাবর্ষে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে দূরশিক্ষায় ভর্তি হতে পারবে না পড়ুয়ারা৷ সম্প্রতি একটি তালিকা প্রকাশ করেছে ইউজিসি৷ তাতে কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দূরশিক্ষা কেন্দ্রের অনুমতি পেল, তা উল্লেখ করা হয়েছে৷ উল্লেখজনক ভাবে সেখানে বাংলার দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম থাকলেও, নাম নেই বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের৷ এদিকে, ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি৷ এই অবস্থায় ইউজিসি’র এই তালিকা দেখে নড়েচড়ে বসেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ৷ তাদের পরবর্তী করণীয় কী, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ৷
আরও পড়ুন- ফের বদলে গেল উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষা সূচি, বিজ্ঞপ্তি বিভ্রাটে সংসদ!
কিছু দিন আগেই দূরশিক্ষা বিভাগের অধিকর্তা পদে দায়িত্ব সঁপা হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের অধ্যাপক অরিজিৎ ঘোষালকে৷ অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসাবেই এই পদ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে৷ দূরশিক্ষা বিভাগে কোনও স্থায়ী অধিকর্তা এখনও নেই৷ তবে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি৷ অরিজিৎবাবু বলেন, ‘‘এই বিষয়ে যা বলার উপাচার্যই বলবেন৷’’ এদিকে এই বিষয় সম্পর্কে একেবারেই অবগত ছিলেন না বলে জানিয়েছেন উপাচার্য নিমাইচন্দ্র সাহা৷ তিনি বলেন, ‘‘এই বিষয়টি কেউই জানতাম না৷ কোথায় কী ত্রুটি হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে দূরশিক্ষা বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। আলোচনার পরই কোনও স্থির সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারব৷’’
প্রসঙ্গত, রেগুলারের পাশাপাশি ডিস্ট্যান্স কোর্সেও পঠন পাঠন চালানোর জন্য ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল (ন্যাক)-এর মূল্যায়নে ৪ এর মধ্যে ৩.২৬ নম্বর পেতেই হয়৷ কিন্তু বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষা বিভাগ মূল্যায়নের এই মান পেরতে পারেনি৷ জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালে ন্যাক-এর পর্যবেক্ষক দল এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষা বিভাগের পরিকাঠামো, পাড়াশোনার পরিবেশ সহ একাধিক বিষয় খতিয়ে দেখে৷ কিন্তু বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষা বিভাগকে নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেননি তাঁরা৷ তাঁদের রিপোর্টের ভিত্ততেই দূরশিক্ষার এই তালিকা তৈরি করেছে ইউজিসি৷ খুব স্বাভাবিক ভাবেই ন্যাকের অনুমোদন না মেলায় সেই তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম৷
আরও পড়ুন- ফের বদলাতে পারে উচ্চ মাধ্যমিকের সূচি, আবেদন খোদ শিক্ষামন্ত্রীর
দূরশিক্ষা বিভাগের এক অধ্যক্ষের কথায়, ২০১৬ সালে যখন ন্যাক এসেছিল, তখন এখানে চূড়ান্ত খারাপ পরিস্থিতি৷ চাকরি পাইয়ে দেওয়া নিয়ে চরম দুর্নীতি চলছে৷ পড়াশোনার নামই ছিল না৷ এই পরিস্থিতি দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল ন্যাক-এর টিমও৷ পাঁচ বছর অন্তর অন্তর এই মূল্যায়ন করা হয়৷ অর্থাৎ ২০২১ সালে ফের ন্যাক-এর মূল্যায়ন হবে৷ কিন্তু কোন মাসে হবে, তা জানা নেই৷ ফলে এতজন কর্মী অধ্যাপক কী করবেন তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা৷
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগের প্রতিটি বিষয়ই দূরশিক্ষা বিভাগে পড়ানো হয়৷ বিজ্ঞান শাখার গণিত রয়েছে দূরশিক্ষা বিভাগের ভিতরে৷ এছাড়াও ডিসস্ট্যান্সে বি-এড ও করানো হয়৷ কিন্তু আগামী শিক্ষাবর্ষে যে সকল ছাত্রছাত্রী বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আশায় বসেছিল, তাঁদের সমস্যার মুখে পড়তে হবে৷