গুয়াহাটি: বাবা মায়ের জেদ, ছেলেকে ডাক্তার বানাবেই৷ কিন্তু ছেলের সে যোগ্যতা কোথায়? যোগ্যতা থাক আর নাই থাক, হাল ছাড়লে চলবে না৷ যেন তেন প্রকারণে হোক ছেলেকে ডাক্তারিটা পড়াতেই হবে৷ তাহলে উপায়? ভাবতে ভাবতেই বেরিয়া আসে পথ৷ ছেলে যাতে জয়েন্ট এনট্রান্স মেন পরীক্ষায় পাশ করে, সেজন্য গুয়াহাটির একটি কোচিং সেন্টারকে ১৫ থেকে ২০ লক্ষ ঘুষ দেন ওই চিকিৎসক দম্পতি৷! ওই কোচিং সেন্টারই ঠিক করে দেয় কে তাঁদের ছেলের বদলে হাজিরা দেবে পরীক্ষার হল-এ৷
আরও পড়ুন- কমাতেই হবে স্কুল ফি, সুপ্রিম নির্দেশে মুখ পোড়াল বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষ
এ যেন খানিকটা বাস্তবের মুন্নাভাই এমবিবিএস৷ অপমানের বদলা নিতে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হওয়ার জেদ চেপেছিল মুন্নাভাইয়ের৷ আর তাই ডাঃ আস্থানার কলেজের প্রফেসর-চিকিৎসক ডাঃ রুস্তমের বাবাকে ‘অপহরণ’ করে ব্ল্যাকমেল করা হয় তাঁকে৷ পরীক্ষার হল-এ সুকৌশলে কানে ইয়ার ফোন গুঁজে রুস্তমের থেকে সব প্রশ্নের উত্তর জেনে নেয় মুন্নাভাই৷ আর ফল? ডাক্তারির প্রবেশিকায় একেবারে প্রথম হল সে৷ এখানেও ঘটনাটা প্রায় তেমনই৷ গুয়াহাটির ওই চিকিৎসক দম্পতির ছেলের হয়ে পরীক্ষা দিতে পৌঁছে যায় এক ভুয়ো পরীক্ষার্থী৷ পরীক্ষা কেন্দ্রে কোনও সমস্যা হয়নি৷ নির্বিঘ্নেই মেটে সব কিছু৷ ফল প্রকাশের পর দেখা যায় সে ৯৯.৮ শতাংশ নম্বর পয়েছে৷ কিন্তু বিষয়টি কোনও ভাবে ফাঁস হয়ে যায়৷ এর পরই আসল পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধে গুয়াহাটির আজারা থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়।
আরও পড়ুন- আরও কতদিন বন্ধ থাকবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান? ঘোষণা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের
গুয়াহাটির অ্যাডিশনাল ডিসিপি সুপ্রতীপলাল বড়ুয়া জানান, গত ২৩ অক্টোবর এই বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। ঘটনার তদন্তে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা সিট গঠন করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, এই ঘটনায় একটি অডিও ক্লিপিংস অফিসারদের হাতে এসেছে৷ সেখানে অভিযুক্ত পরীক্ষার্থী টেলিফোনে নিজেই অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। অডিও ক্লিপিংসটি প্রকাশ্যে আসতেই বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হয়৷ অভিযোগ পেয়েই তদন্ত শুরু করে গুয়াহাটি পুলিশ৷ বুধবার রাতে অভিযুক্ত পরীক্ষার্থী ও তাঁর বাবাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকা ‘নিট’ পরীক্ষার আয়োজক ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির সঙ্গেও যোগাযোগ করেছে অসম পুলিশ৷