নয়াদিল্লি: গত কয়েক দিন ধরেই দেশের মুদ্রার দরে লাগাতার পতনে বিরোধীদের আক্রমণের মুখে পড়ছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা ছিল এবার হয়তো টাকার দর ৮০-র গণ্ডি পেরিয়ে যাবে টাকার মূল্য৷ সোমবার দিনের মাঝে ডলার পৌঁছে গিয়েছিল ৮০ টাকায়। দিনের শেষে অবশ্য ১৬ পয়সা বাড়ে মার্কিন মুদ্রা। থামে ৭৯.৯৮ টাকায়। কিন্তু, মঙ্গলবার সকাল হতেই মিলল খারাপ খবর৷ প্রথমবার ১ ডলারের নিরিখে টাকার দর পেরিয়ে গেল ৮০-এর গণ্ডি।
আরও পড়ুন- জিওর পর রিলায়েন্স রিটেলের দায়িত্বও ছাড়ছেন মুকেশ আম্বানি, আসছে পরের প্রজন্ম
সোমবার লোকসভায় বাদল অধিবেশনের প্রথম দিনই টাকার দর নিয়ে বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তিনি জানান, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর (ডলার ছিল ৬৩.৩৩ টাকা) থেকে ভারতীয় মুদ্রার দর এখন ২৫% পড়ে গিয়েছে। টাকার দরে এই পতনের অন্যতম কারণ হল বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির পুঁজি তুলে নেওয়া।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর দাবি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে অপরিশোধিত তেলের চড়া দর এবং বিভিন্ন দেশে সুদের হার বৃদ্ধিই টাকার পতনের জন্য দায়ী। তিনি বলেন, বিশেষত আমেরিকায় সুদ বৃদ্ধির কারণে ভারতের শেয়ার বাজার থেকে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি ক্রমাগত পুঁজি সরানোর বিরূপ প্রভাব পড়ছে তার দরে। সোমবার অবশ্য ওই সব বিদেশি সংস্থা শেয়ার কিনেছে ১৫৬.০৮ কোটি টাকার। সেনসেক্স বেড়েছে ৭৬০.৩৭ পয়েন্ট।
কিন্তু, মঙ্গলবার সকাল ৯ টা বেজে ১০ মিনিট৷ টাকার দর ডলারের নিরিখে ৮০.০১ এ লেনদেন করল। টাকার দামে এই রেকর্ড পতন ভারতের ইতিহাসে প্রথম। বিশেষজ্ঞদের কথায়, ৮০-র গণ্ডির একটি আলাদা তাৎপর্য রয়েছে। কারণ এই গণ্ডিকে বর্তমানে একটি প্রান্তিক রেখা হিসাবে ধরা হয়ে থাকে৷ ডলারের নিরিখে টাকার দর ৮০ স্পর্শ করার অর্থ টাকার উপরে অস্বাভাবিক চাপ রয়েছে। এতদিন এই ৮০-র গণ্ডির কাছাকাছি এলেও মঙ্গলবার সেই গণ্ডি পেরিয়ে গেল টাকার দর।
কিন্তু, টাকার দরে এই পতনের ফলে কী কী সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে সাধারণ মানুষকে? প্রথমেই বলে রাখা ভালো, টাকার এই পতনের প্রভাব সরাসরি পড়তে পারে পেট্রল-ডিজেলের উপর। কারণ টাকার দরে পতন ঘটলে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা থেকেই যায়৷ অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সফরের পরেই অপরিশোধিত তেলের আউটপুট বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি থেকে সরে দাঁড়িয়েছে সৌদি আরব৷ সৌদির এই সিদ্ধান্তে রাতারাতি বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ৫ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে।
আগামী দিনে টাকার দরে আরও পতন ঘটবে কিনা, তা নিয়েও অর্থনীতিবিদদের মধ্যে যথেষ্ঠ আশঙ্কা রয়েছে। সম্প্রতি, ব্যাঙ্ক অফ বরোদার তরফে একটি নোটে জানানো হয়েছিল, এই পাক্ষিকে চাপের মধ্যে থাকতে পারে ভারতীয় মুদ্রা। আগামী ১৫ দিনে টাকা র দর ৭৯.৭৫ থেকে ৮০.১৫-এর মধ্যে ঘোরাফেরার সম্ভাবনা রয়েছে।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>