অল্প বিনিয়োগেই দারুণ লাভ! দিশা দেখাচ্ছে আলোর এই ব্যবসা

অল্প বিনিয়োগেই দারুণ লাভ! দিশা দেখাচ্ছে আলোর এই ব্যবসা

কলকাতা: দেশকে আর্থ সামাজিক দিক থেকে স্বনির্ভর করতে আত্মনির্ভর ভারত গঠনের ডাক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যার মূল লক্ষ্য আমদানি কমিয়ে দেশের মাটিতেই উৎপাদন বৃদ্ধি৷ সেই আহ্বানেই দেশ জুড়ে এসেছে স্টার্ট আপের জোয়ার৷ বহু ব্যবসা ইউনিকর্নের তকমা পেয়েছে। নতুন ব্যবসা শুরু করার উদ্যোগ নিতে চাইলে তাঁর পাশে দাঁড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে অনেকেই সাহস জুগিয়ে চাকরি ছেড়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাইছেন। নতুন ভাবে জীবন শুরু করতে চাইছেন৷ কিন্তু, কোন ব্যবসায় সিদ্ধিলাভ হবে, তা নিয়ে রয়েছে বিভ্রান্তি৷ অনেকেই জানেন না, এমন কিছু ব্যবসা রয়েছে যেগুলো খুব কম বিনিয়োগেই শুরু করা যায়। সঙ্গে পরিশ্রমও কম। এমনই একটি ব্যবসা হল মোমবাতি তৈরির ব্যবসা।

আরও পড়ুন- ছাড়িয়ে গেল ৮২! ফের রেকর্ড পতন ভারতীয় মুদ্রার

মোমবাতি তৈরির ব্যবসা অনেকটা ক্ষুদ্র শিল্পের মতো৷ যা ঘরে বসেই করা যায়৷ আবার কেউ চইলে বড় পরিসরে কারখানা গড়েও তা করতে পারেন৷ সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ভারতে মোমবাতির বাজার প্রায় ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেকেই হয়তো বলবেন, এখন তো লোডশেডিং প্রায় হয়ই না৷ তাহলে মোমবাতির চাহিদা বাড়ছে কী ভাবে? আসলে বাড়িতে আলো জ্বালানোর জন্য মোমবাতির ব্যবহারও কমলেও, ঘরের অন্দরসজ্জায় এর ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে। তাই মোমবাতির চাহিদাও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ 

এই ব্যবসায় কত বিনিয়োগ করতে হয়- খুব অল্প পুঁজি নিয়েই মোমবাতি তৈরির ব্যবসা শুরু করা যায়। প্রথমে ৫০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকা হলেই চলবে। মোমবাতি তৈরির মেশিনের আকারও অনেক ছোট৷ ফলে সেগুলো ইনস্টল করতেও খুব বেশি সমস্যা হয় না৷ অল্প জায়গাতেই ধরে যায়। মোমবাতি তৈরির মেশিনের দাম পড়বে ২৫,০০০ টাকা থেকে ৩৫,০০০ টাকার মধ্যে৷ বাজারে তিন ধরনের মেশিন রয়েছে। ম্যানুয়াল মেশিন, আধা-স্বয়ংক্রিয় মেশিন এবং সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় মেশিন। ম্যানুয়াল মেশিনে ঘণ্টায় ১৮০০ মোমবাতি তৈরি করা যেতে পারে৷ এই মেশিন পরিচালনা করাও খুব সহজ। অন্যদিকে, সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় মেশিনে মিনিটে ২০০ মোমবাতি তৈরি করা যায়। 

মেশিন ছাড়াও মোমবাতি তৈরির জন্য মোম, সুতো, রঙ এবং ইথার কিনতে হবে। কেউ যদি সুগন্ধী মোমবাতি তৈরি করতে চান, তার জন্য লাগবে নির্দিষ্ট সেন্ট৷  বাজারের পাশাপাশি অনলাইনেও এই সমস্ত জিনিস কিনতে পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রথমে ম্যানুয়াল মেশিনে কাজ শুরু করা ভালো। ব্যবসায় শ্রীবৃদ্ধি ঘটলে স্বয়ংক্রিয় মেশিন ইনস্টল করা যেতে পারে।

প্রশিক্ষণ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা– মোমবাতির ব্যবসা শুরুর আগে প্রশিক্ষণ নিতে পারলে ভালই হয়। দেশে অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে৷ যেখানে ৩ মাসের কোর্স করানো হয়। চাইলে আপনি নয়াদিল্লির রাজঘাটে মাল্টি ডিসিপ্লিনারি ট্রেনিং সেন্টার, দেরাদুনের মাল্টি ডিসিপ্লিনারি ট্রেনিং সেন্টার, লখনউয়ের উলেন হোসিয়ারি ট্রেনিং সেন্টার, পাটনার ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ মাল্টি ডিসিপ্লিনারি ট্রেনিং সেন্টার,  বারাবাঁকির খাদি গ্রাম শিল্প স্কুল, বীরপান্দির খাদি গ্রাম শিল্প স্কুল থেকে প্রশিক্ষণ নিতেই পারেন৷ এছাড়াও আরও অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে৷ 

কত মুনাফা হবে: ন্যূনতম বিনিয়োগে ব্যবসা শুরু করলে প্রথমদিকে আয় একটু কমই হবে। তবে মনে রাখতে হবে, পণ্যের গুণমান যেমন প্রয়োজন, তেমনই বিপণন কৌশলের উপরেও উপার্জন নির্ভর করবে। শুরুর দিকে মাসে ২০,০০০ টাকা আয় করা সম্ভব। যদি কেউ প্রথম থেকেই ডিজাইনার মোমবাতি তৈরি করেন, তাহলে একধাক্কায় উপার্জন অনেকটাই বাড়তে পারে। আজকাল বাজারে সুগন্ধী এবং ডিজাইনার মোমবাতির ব্যপক চাহিদা রয়েছে।