‘‘বিধান পরিষদ আদৌ হবে কি?’’ মমতার আশ্বাসে খোঁচা সোনালীর

‘‘বিধান পরিষদ আদৌ হবে কি?’’ মমতার আশ্বাসে খোঁচা সোনালীর

কলকাতা:  সাতগাছিয়া কেন্দ্র থেকে চার বারের জয়ী প্রার্থী তিনি৷ কিন্তু এই বার বিধানসভা ভোটে টিকিট দেওয়া হয়নি তাঁকে৷ প্রার্থী তালিকায় নাম না থাকায় কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন সোনালী গুহ৷ কিন্তু এর পরেই ঘুরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন৷ ফোন করেন মুকুল রায়কে৷ এক কথায়, বিজেপি’তে যাওয়ার জন্য তিনি প্রস্তুত৷ দল এ বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করছে, জানিয়েছেন মুকুল রায়ও৷ 

আরও পড়ুন-  রাজ-কেন্দ্রে বিদ্রোহ, প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হতেই ‘গৃহযুদ্ধ’ ঘাসফুলের অন্দরে, দলত্যাগের হুঙ্কার

দলত্যাগ প্রসঙ্গে সোনালী বলেন, ‘‘আজ সকালেই মুকুল রায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে৷ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার মধ্যে উনি এ বিষয়ে জানাবেন৷’’ সোনালী জানান, তিনি মুকুল রায়কে জানিয়েছেন, কোনও কেন্দ্র থেকে তিনি দাঁড়াতে চান না৷ সম্মানজনক পদ পেলেই দলের হয়ে প্রচার করবেন৷ বিজেপি’তে যোগ দেওয়ার বিষয়ে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ তিনি৷ 

এদিন সোনালী আরও বলেন, ‘‘সাতগাছিয়া আমার জীবনে রাজনীতির আঁতুরঘর৷ সেখান থেকে তৃণমূলের তরফে যখন টিকিট পাইনি, বিজেপি টিকিট দিলেও হাত জোড় করে ‘না’ বলব৷ তবে শুধু সাতগাছিয়া নয়, অন্য কোথা থেকেও দাঁড়াব না৷’’ তৃণমূল কংগ্রেসের শুরু থেকেই দলের যোদ্ধা ছিলেন তিনি৷ এক সময় ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছায়াসঙ্গী৷ লড়াই করে ক্ষমতায়  এসেছিলেন৷ প্রার্থী তালিকায় নাম থাকায় কান্নায় ভেঙেও পড়েছিলেন৷ তার পরে কেন হঠাৎ করে দল বদলের সিদ্ধান্ত? 

এর জবাবে সোনালী বলেন, ‘‘কান্না এখনও আমার ভিতরে চাপা আছে৷ আজ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেক্রেটারি আমাকে ফোন করে দেখা করতে বলেছিলেন৷ কিন্তু তাঁকে জানিয়ে দিয়েছি, মুকুল রায়ের সঙ্গে আমি যোগাযোগ করেছি৷ এর পর আইপ্যাডের তরফেও ফোন করা হয়েছিল৷ সেই ফোন ধরিনি৷ ফোন করেছিলেন শুভম গোয়েলও৷ তাঁকেও না করে দিয়েছি৷ তবে কোনও নেতৃত্ব ফোন করেনি৷ বরং ছুটে এসেছিলেন আমার কেন্দ্রের কর্মীরা৷’’ 

মুখ্য    মন্ত্রীর সঙ্গে দূরত্ব বাড়াল কেন? ‘‘কারণটা উনিই জানেন৷’’ মন্তব্য সোনালীর৷ ‘‘কেননা দূরত্ব আমি বাড়াইনি, উনি বাড়িয়েছেন৷’’ সোনালী বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা যখন অসুস্থ ছিলেন, তখন টানা ২৭ দিন প্রহরীর মতো সঙ্গে ছিলাম৷ এমনকী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাকে নিজের মা বলেই মানতাম৷ আমার বিশ্বাস উনি থাকলে আজ এত বড় কাণ্ডটা হত না৷’’ 

এদিকে গতকাল প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করার সময় মমতা বলেছিলেন, দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা কিছু লোককে বাদ দিতে হয়েছে৷ যাঁরা বাদ পড়বে তাঁদের বিধান পরিষদ গঠন করে ফিরিয়ে আনা হবে৷ এর মধ্যে রয়েছেন সোনালী৷ ওঁর সুগার হাই৷ এর জবাবে সোনালী বলেন, ‘‘বিধান পরিষদটা আদৌ হবে তো? এই প্রস্তাবটা দিদি ২০১৬তেই এনেছিলেন৷ সেটা সিলেক্ট কমিটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ রাষ্ট্রপতি সাক্ষর করলে তবে বিধান পরিষদ গঠিত হবে৷ যে রাজ্য এত দেনায় জর্জরিত, সেই রাজ্যে বিধান পরিষদ গঠনের জন্য রাষ্ট্রপতি কি সাক্ষর করবেন?’’  

আরও পড়ুন-  এবার জনতার দুয়ারে কমিশনে! প্রথম দফার ভোটে বাংলায় বিপুল বাহিনী!

গত বিধানসভা ভোটেও ১৭ হাজারের বেশি লিড নিয়ে জয়ী হয়েছিলেন সোনালী গুহ৷ এর পরেও কেন বাদ দেওয়া হল? তিনি বলেন, ‘‘কারণটা মমতাদিই বলতে পারবেন৷ আমি তো হেরে যাইনি৷’’ কথা বলতে গিয়ে ফের গলা ধরে আসে তাঁর৷ তিনি বলেন, ‘‘সুব্রত বক্সি বলেছিলেন টিকিট না পেলে আমি মমতাদিকে দিয়ে ফোন করাব৷ সারা রাত ফোন অন রেখেছিলাম৷ কিন্তু ফোন আসেনি৷’’ 

তাঁর কথায়, সাতগাছিয়া কেন্দ্র থেকে জ্যোতিবাবু পাঁচবার জিতেছিলেন৷ আমি তাঁর রেকর্ড স্পর্শ করি, সেটা হয়তো মমতাদি চাননি৷ তবে লড়াই থামেনি৷ মমতাদির জন্য নিজের সবটুকু উজার করে দিয়েছিলাম৷ বিজেপি’তে গিয়ে, সবটা উজার করে দেব৷ ‘অন্তর্জাতিক নারী দিবসের আগে সম্নানিত করা হলাম’৷ দিদির দুর্মতি হয়েছে বলেই পুরনো কর্মীদের পিছনে ঠেলে দিচ্ছেন৷ তাই বলেছি, ওঁনার সুমতি হোক৷ তিনি বলেন, আমার সঙ্গে দুর্নীতিক কোনও যোগ নেই৷ তাহলে এতদিনে আমার বাড়িত সিবিআই-ইডি সবাই হানা দিত৷ আমি ছাপোষা একজন বিধায়ক৷  
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × two =