কলকাতা: যে কোনও ভোট হলেই ছাপ্পা, বুথ দখল, মারামারি, ভাঙচুর, ভুয়ো ভোটার, এই ধরণের শব্দগুলি শুনতে পাওয়া যায়। বাংলার নির্বাচনে এই শব্দগুলি তো সেই কবে থেকে প্রযোজ্য। লোকসভা হোক কিংবা বিধানসভা, উপনির্বাচন বা পুরসভা, পঞ্চায়েত, যাই হোক না কেন এই শব্দের ব্যবহার হতেই হবে। কিন্তু তা বলে ডাক্তারদের নির্বাচনেও? এটা তো স্বপ্নেও ভাবা যায় না। কিন্তু এই জিনিসও হয়েছে, বাংলার মাটিতে হয়েছে, শহর কলকাতায় হয়েছে। আর তাতেই অবাক তিলোত্তমাবাসী।
আরও পডুন- সরকারি কর্মীদের জন্য সুখর! বাড়তে পারে অবসরের বয়স ও পেনশনের টাকা
গত ৫ তারিখ আইএমএ কলকাতা শাখার নির্বাচন ঘিরে চরম উত্তেজনা ছড়ায় তালতলা আইএমএ শাখায়। সভাপতি পদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। জাল ভোটারের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখানো হয়। বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন প্রার্থী নির্মল মাঝি। ভোট শুরু হওয়ার আগে থেকেই দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়েছিল। সকাল থেকেই উত্তাপ ছিল ভোট কেন্দ্রে। বেলা বাড়তেই আবার উত্তেজনা সৃষ্টি হয় নতুন করে। আইএমএ শাখার মূল গেটের সামনে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখানো হয়। দফায় দফায় বুথ দখল করার চেষ্টা হচ্ছে, জাল ভোটার এনে ভোট করানো হচ্ছে, এমন অভিযোগ তোলা হয় নির্মল মাঝির বিরুদ্ধে। যদিও তিনি পাল্টা বিক্ষোভকারীদের দিকেই একই আঙুল তোলেন। কিন্তু দুই পক্ষের মধ্যে যে বাক বিতণ্ডা, চরম ভাষার প্রয়োগ, তাতে অবাক হয়েছে শহরবাসী।
যে সময়ে সেই গণ্ডগোল হচ্ছিল তখন অনেক পথ চলতি মানুষ সেখান থেকে যাচ্ছিলেন। তাদের অনেকের মনে হচ্ছিল যে কলেজে নির্বাচন হচ্ছে। রাজনৈতিক দলের মধ্যে বাদানুবাদ। কিন্তু বিক্ষোভকারি দুই পক্ষের কাছেই ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোস্টার। তাতেই তাদের সন্দেহ হয় এবং তারা জানতে পারেন যে চিকিৎসক প্রতিনিধির জন্য নির্বাচন হচ্ছে। এতেই তারা অবাক। অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন যে, এই নির্বাচন পঞ্চায়েত ভোটকেও হার মানাচ্ছে। চিকিৎসকদের সংগঠন বা তাঁদের ভোটাভুটির বিষয় অনেকেই জানেন না। তারাও যে এইভাবে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে ‘সংঘর্ষে’ লিপ্ত হতে পারেন তা বেশির ভাগ মানুষের জানা ছিল না। এক্ষেত্রেও তাদের অনেকের প্রশ্ন, চিকিৎসকদের কাজ মানুষের সেবা করা। তারাও এখন কেন পদ দখলের লড়াইয়ে, ক্ষমতা পাওয়ার লড়াইয়ে নামছেন?