চাকরি প্রার্থীরা কি অনৈতিক দাবি তুলেছিলেন? কেন মেজাজ হারালেন মুখ্যমন্ত্রী? উঠল প্রশ্ন!

চাকরি প্রার্থীরা কি অনৈতিক দাবি তুলেছিলেন? কেন মেজাজ হারালেন মুখ্যমন্ত্রী? উঠল প্রশ্ন!

বনগাঁ: বনগাঁর গোপালনগরে ভোট প্রচারের মঞ্চ থেকে চাকরি প্রার্থী ভিআরপি কর্মীদের রীতি মতো ধমকালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি বললেন, ‘‘সারাক্ষণ শুধু চাই চাই করছেন, কত দেব? দেওয়ারও একটা সীমাবদ্ধতা আছে৷ বলবারও একটা জায়গা আছে৷’’ রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে এভাবেই মেজাজ হারালেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তাঁর হুঁশিয়ারি বেশি বারাবারি করবেন না৷ কিন্তু কেন মেজাজ হারাতে হল তাঁকে? চাকরি প্রার্থীরা কি অনৈতিক দাবি তুলেছিলেন? তাঁরা কি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এই প্রশ্ন করতে পারেন না? এই নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে৷ 

আরও পড়ুন- আরও বাড়ছে সরকারি ছুটি! মতুয়া গড়ে ফের কল্পতরু মমতা, বহু দাবিতে মান্যতা

এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এদিন দেখা গিয়েছে মঞ্চে উপস্থিত ক্যাবিনেট মন্ত্রীদের ভিআরপিরা কী কাজ করেন তা নিয়ে প্রশ্ন করছেন৷ ২০ দিনের কাজ ৪০ দিন করা হয়েছে জানানোর পরও এই কাজ সম্পর্কে জানতে চান তিনি৷ তদুপরি প্রশ্ন উঠছে, ২০ দিনের কাজ ৪০ দিন করা হলেও, বছরের বাকি দিন গুলি কি তাঁরা না খেয়ে কাটাবেন? বেকার শিক্ষিত যুবকদের প্রতি তাঁর ভাষা অশালীন বলেও মন্তব্য করেন সম্বয়৷ তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর তিন দিনের সভার জন্য ১৫ কোটি টাকা খরচ হয়েছে৷ সভা করে কোটি কোটি টাকা খরচ না করে এই টাকা দিয়ে বেকার যুবকদের জন্য কাজ করা হলে তাঁরা উপকৃত হত৷ বাংলার মানুষকে প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়াতে হত না৷ আর কালীঘাটে চিঠি দিতে গেলে যে থানায় টেনে নিয়ে যাওয়া হয় সেই উদাহরণও ভুড়িভুড়ি রয়েছে৷ একটি ক্লাবে চিঠি দিয়ে আসতে হয়৷ দিদিকে বলো কর্মসূচিতে বিভিন্ন স্তরে বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীরা দিনের পর দিন ফোন করেছেন৷ কোনও উত্তর পাননি৷ নবান্নে চিঠি দিয়েও কাজ হয়নি৷ আজ প্রকাশ্য জনসভায় এই বিষয়ে কথা উঠলে বাংলার শিক্ষত যুবকরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে এই টুকু সহনশীলতা কি আশা করতে পারে না? 
 

এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি সভায় চার-পাঁচজনকে শিখিয়ে পড়িয়ে পাঠানো হচ্ছে৷ অস্থায়ী প্রকল্পে কাজ দিলেই স্থায়ী চাকরির দাবি করা হচ্ছে৷ এত টাকা কোথায় পাব? দু’-তিন জন মিটিংটা নষ্ট করে দিল৷ বাড়িতে বা সরকারি দফতরে গিয়ে চিঠি দিলে আমি কাজ করে দেব৷ কিন্তু রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে সরকারি কাজ করব না৷ মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে কে কে যেতে পারবেন এমন কোনও বিধি নিষেধ আছে কি? সারাক্ষণ শুধু চাই চাই এমন কথা কি বলা উচিত তাঁর? তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে৷  

আরও পড়ুন- সঙ্কটজনক বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, হাসপাতালে দেখে এলেন মমতা

রাজনীতির বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যখন কেউ কোণঠাসা হয়ে পড়েন বা অস্বস্তিতে পড়েন তখনই তিনি মেজাজ হারান৷ এর আগেও বহুবার মুখ্যমন্ত্রী মেজাজ হারিয়েছেন৷ যখনই তাঁর বক্তব্যের সামান্য বিরোধিতা করা হয়েছে, তখনই তিনি রেগে গিয়েছেন৷ তাঁর সামনে যে দাবি তোলা হয়েছে, তা কতখানি ন্যায্য বা অনায্য তা বিবেচনা করা হয়নি৷ অভিযোগ, ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তাঁর এই অসহিষ্ণুতা রাজ্যের মানুষ দেখছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, তাঁর বাড়িতে বা দফতরে চিঠি দেওয়া যাবে৷ কিন্তু প্রকাশ্যে কোনও কথা বলা যাবে না৷ আসলে সকলের সামনে কোনও মানুষ যখন কিছু দাবি করেন, তখন প্রমাণ হয়ে যায় সেই কাজ হয়নি৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × 4 =