‘সব টাকা ওঁর কাছে’, দাবি কুন্তলের, কে এই হৈমন্তী? চেনেন গোপাল দলপতির লাস্যময়ী স্ত্রীকে

‘সব টাকা ওঁর কাছে’, দাবি কুন্তলের, কে এই হৈমন্তী? চেনেন গোপাল দলপতির লাস্যময়ী স্ত্রীকে

কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে আবারও মিলল গ্ল্যামার যোগ! পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের পর এই তালিকায় জুড়ল গোপাল দলপতির দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম।  নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অভিযুক্ত হুগলির যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের মুখেই উঠে এসেছে এক মহিলার নাম। তিনি আর কেউ নন, গোপাল দলপতির দ্বিতীয় স্ত্রী হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়। এই হৈমন্তী প্রসঙ্গে যে তথ্য উঠে আসছে, তা রীতিমতো অবাক করা৷ তাঁর জীবন শৈলী কোনও অংশে এক অভিনেত্রীর চেয়ে কম নয়। কুন্তলের দাবি, গোপালের দ্বিতীয় স্ত্রী এই হৈমন্তীর কাছেই নাকি রয়েছে যাবতীয় টাকা৷  এই টাকা কি দুর্নীতির? সে বিষয়টি অবশ্য মুখ খোলেননি কুন্তল।

আরও পড়ুন- হাইকোর্ট তলব করেনি, বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে! দাবি পর্ষদ সভাপতির

গোপাল-হৈমন্তীর রসায়নও প্রকাশ্যে এনেছেন হুগলির এই যুব তৃণমূল নেতা। হৈমন্তীর কথাতেই নাকি নিজের নাম বদলে ফেলেছিলেন গোপাল দলপতি। হয়েছিলেন আরমান গঙ্গোপাধ্যায়। হৈমন্তীর সঙ্গে পার্টনারশিপে কোম্পানিও খুলেছিলেন তিনি। সেই কোম্পানির নাম দিয়েছিলেন হৈমন্তী অ্যাগ্রো প্রাইভেট লিমিটেড। সেখানে ডিরেক্টর পদে ছিলেন স্বামী-স্ত্রী উভয়ই। কিন্তু, ন’বছর পর আচমকাই একদিন বন্ধ হয়ে গেল কোম্পানিটি। মুম্বইয়ের নরেম্যান পয়েন্টে থেকেও গুটিয়ে নেওয়া হয় দফতর৷  কুন্তলের এহেন দাবি সামনে আসার পর গোপাল দলপতির সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যাচ্ছে না বলেই সিবিআই সূত্রে দাবি। যদিও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানাচ্ছে, গোপাল দলপতির দাবি, তাঁর স্ত্রী তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন।

নিওগ দুর্নীতিতে রহস্যময় নারী যোগের প্রসঙ্গ সামনে আসতেই হৈমন্তীর সন্ধান শুরু করেন তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে, এই হৈমন্তীর সঙ্গে  গ্ল্যামার দুনিয়ার যোগ রয়েছে। এক সময় মডেলিং করতেন হৈমন্তী। সেই সুবাদেই নাকি কুন্তলের সঙ্গে পরিচয় তাঁর। ২০১৫-১৬ সালে গোপাল দলপতির সঙ্গে আলাপ হয় হৈমন্তীর। তারপরেই মডেলিংয়ের দুনিয়ায় তাঁর পা রাখা। অনেকটা ধূমকেতুর মতই টলি পাড়ায় উত্থান তাঁর। তদন্তকারীদের অনুমান, নিয়োগ দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করতেই হৈমন্তীকে টলিউডে পাঠানো হয়েছিল।

দু’বছর আগে অন্য একটি মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন গোপাল। তিহার জেলে বেশ কিছুদিন বন্দিও ছিলেন৷ পরে জামিনে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফেরেন। সিবিআই জানতে পেরেছে, শুধুই দ্বিতীয় স্ত্রী হৈমন্তীর সঙ্গেই নয়, আরও পাঁচটি সংস্থা রয়েছে গোপালের৷ অপার পর চাকরি বিক্রি চক্রের অন্যতম ফোকাস এখন গোপালের গ্ল্যামারাস স্ত্রী হৈমন্তী৷ 

উল্লেখ্য, এর আগে ইডি দফতরে গিয়ে যে নথি জমা করে এসেছিলেন গোপাল দলপতি, সেখানে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের কথা উল্লেখ ছিল৷ সেখানে  আরমান গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘নমিনি’ হিসাবে উল্লেখ ছিল হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম। গোপাল ওরফে আরমানের নাম একাধিকবার উল্লেখ করেছেন কুন্তল। এই গোপাল হলেন তাপস মণ্ডল ঘনিষ্ঠ।

গোপাল দলপতির  আদিবাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের ২ নম্বর ব্লকের খিরিসবাড়ি গ্রামে। সেখানে একাই থাকেন তাঁর মা লক্ষ্মী দলপতি৷ ছেলের কীর্তি প্রকাশ্যে আসার পর গোপাল দলপতির মা জানান, এক ব্যক্তি চিঠি নিয়ে এসেছিল তাঁদের বাড়িতে। কিন্তু সেই চিঠিতে কী রয়েছে, তা তিনি জানেন না।