কলকাতা: এক সময় তিনি ছিলেন অধিকারী গড়ের দাপুটে তৃণমূল নেতা৷ জমি আন্দোলনের সময় তাঁর বাইকের পিছনে সওয়ার হয়ে নন্দীগ্রাম ঘুরেছিলেন তৎকালীন বিরোধী দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সেই আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধেই রয়েছে পাঁশকুড়ার তৃণমূল নেতা কুরবান শাহকে খুন করার অভিযোগ৷
আরও পড়ুন- অনুব্রতর গড়ে শোভন-বৈশাখী, জোড়া রোড শো শোভন জুটির!
প্রথম জীবনে তাঁর রাজনীতিতে অভিষেক হয়েছিল সিপিএমের হাত ধরে৷ কিন্তু ২০০৬ সালে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কৃত হন আনিসুর৷ পরে তিনি যোগ দেন তৃণমূলে৷ মেদিনীপুরে বেশ প্রভাব ছিল আনিসুরের৷ তাঁর নামের সঙ্গে পরিচিত ছিল দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারাও৷ কিন্তু কোনও কারণে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়৷ এছাড়াও দলীয় নির্দেশ অমান্য করে পাঁশকুড়ার পুরপ্রধান হওয়ায় তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গেও বিরোধ বাধে৷ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পুরপ্রধানের পদ ছাড়তে হয় তাঁকে৷ এমনকী ৬ বছরের জন্য দল থেকে সাসপেন্ডও করা হয়৷ তবে এর জন্য তিনি কোনও মামলা করেননি৷ আর তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্কের এই ফাটল ধরার সুযোগেই তাঁকে গেরুয়া শিবিরে নিয়ে আসেন মুকুল রায়৷
কিন্তু বিজেপি’তে যোগ দেওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে৷ তবে সেই মামলায় জামিনও পেয়ে যান আনিসুর। কিন্তু গত বছর দুর্গাপুজোর নবমীর রাতে মাইশোরায় দলীয় কার্যালয়ে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক কার্যকরী সভাপতি তথা পাঁশকুড়া-১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি কুরবান শাহ। সেই হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত হন আনিসুর রহমান৷ তাঁকে মেদিনীপুর জেলে বন্দি করা হয়৷
আরও পড়ুন- বিজেপিতে স্বাগত! অধীরকে গেরুয়া শিবিরে ডাক দিলীপের
দিন কয়েক আগে জেল বন্দি আনিসুর রহমনের একটি পুরনো পোস্ট রিপোস্ট করা হয়৷ যেখানে দেখা যায়, তার বাইকের পিছনে সওয়ার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ আবার মেদিনীপুরের রাস্তায় তাঁর ছবি ও নাম দিয়ে রহস্যময় পোস্ট পড়ে৷ যেখানে লেখা হয়, ‘মীরজাফর সাবধান, দাদা আসছে৷’’ এই পোস্টকে কেন্দ্র করেও বেশ তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি৷
কয়েকদিন আগে নন্দীগ্রামের সভায় মুখ্যমন্ত্রীর মুখে শোনা গিয়েছিল আনিসুর রহমানের নাম৷ ২৬ ফেব্রুয়ারি একটি রাজ্য সরকারের তরফে একটি নির্দেশিকায় বলা হয়, নিম্ন আদালতের সরকারি আইনজীবী বিচারকের কাছে আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে খুন সহ একাধিক ধারায় যে মামলা রয়েছে, সেই মামলা প্রত্যাহার আর্জি জানাবেন৷ কিন্তু আজ তৃণমূল নেতা কুরবান আলি শাহ খুনের ঘটনায় জেলবন্দি আনিসুর রহমানের মামলা প্রত্যাহারের আবেদন খারিজ হয়ে যায়৷ তমলুক আদালতের নির্দেশ খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট৷