তৃণমূলের তাবড় নেতা হলেও মমতার নির্দেশ মাত্রই গ্রেফতার, কে এই আনারুল

অভিযোগ, আনারুলের নির্দেশ মতোই আগুন লাগানো হয়েছিল বাড়িতে বাড়িতে

কলকাতা: রামপুরহাটে যে নৃশংস ঘটনা ঘটেছে তার পিছনে আনারুল হোসেন থাকার অভিযোগ উঠছে। এদিন বগটুই গ্রামে পৌঁছনোর পরেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আনারুলের বিরুদ্ধে নালিশ করেন নিহতদের পরিবার৷ তাদের অভিযোগ, আনারুলের নির্দেশ মতোই আগুন লাগানো হয়েছিল বাড়িতে বাড়িতে। পুলিশকেও নাকি সে নিয়ন্ত্রণ করেছে। এরপরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং নির্দেশের কার্যত ঘণ্টাখানেকের মধ্যে তারাপিঠ থেকে গ্রেফতার হয়েছেন আনারুল। কিন্তু এখন প্রশ্ন, কে এই আনারুল হোসেন? কীসের এত প্রতিপত্তি তাঁর?

আরও পড়ুন- সিটের রিপোর্ট পেশ আদালতে, সাসপেন্ড হলেন রামপুরহাট থানার আইসি

বর্তমান প্রেক্ষিতে আনারুলের একটা পরিচয় আছে। তিনি হলেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি। তবে তিনি এক সময় কংগ্রেস করতেন। পরে ১৯৯৮ সালে তৃণমূলে যোগ দেন। রামপুরহাট লাগোয়া সন্ধিপুরে নামের এক এলাকার বাসিন্দা আনারুল। তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তিনি দলের গুরুত্বপূর্ণ এবং দক্ষ কর্মী ছিলেন বলেই জানা যায়। বগটুইয়ে দলের সংগঠন সামলাতেন আনারুলই। এও খবর যে তিনি রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ও বিধানসভার বর্তমান ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। শোনা যায়, তাঁর দখল এমন ছিল এলাকায় যে তিনি পুলিশকেও নিয়ন্ত্রণ করতেন। প্রথম জীবনে রাজমিস্ত্রি হিসেবে কাজ শুরু করলেও পরে রাজনীতিতে এসে তাঁর জীবন সম্পূর্ণ বদলে যায়। বর্তমান সময়ে জেলার বালিখাদানের ব্যবসাতেও নজরদারি চালাতেন তিনি বলে জানা গিয়েছে। আর ভোটের সময়েও তাঁর কথা মতো কাজ হত এলাকায়। সংগঠনের ব্যাপারে তাঁর কথাই নাকি শেষ কথা ছিল।

৫২ বছরের আনারুলের এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে৷ আনারুলের জীবন শুরু হয়েছিল একজন রাজমিস্ত্রী হিসাবে৷ ২০১১ সাল থেকে তিনি ঠিকাদার হিসাবে ব্লকে ছিলেন৷ এখানে সংগঠন সামলানোর কাজ করতেন৷ তবে বগটুই গ্রামে যে ঘটনা ঘটেছে তা নাকি আনারুল করিয়েছেন। এমনই দাবি নিপীড়িতদের পরিবারের সদস্যদের। তাদের কথায়, আনারুল সব জানতেন। তাও কিছুই করেননি। উপ প্রধান ভাদু শেখের তিনি ঘনিষ্ঠ ছিলেন বলে দাবি। তাই তাঁর খুনের পর বাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে আনারুলের নেতৃত্বেই বলে অভিযোগ। যদিও আনারুল জানিয়েছেন, তিনি নির্দোষ। যখন ঘটনা ঘটে তখন নাকি তিনি গ্রামে ছিলেন না, হাসপাতালে ছিলেন। এদিকে তাঁর অনুগামীদের আরও বিস্ফোরক দাবি। তারা বলছেন, অনুব্রত মণ্ডল ফাঁসিয়েছেন আনারুলকে। তিনি ভালো লোক।

আরও পড়ুন- ব্রেকিং: ফের অভিষেককে তলব ইডির! এই মাসেই আবার হাজিরার নির্দেশ

তবে ইতিমধ্যেই তাঁর গ্রেফতারি নিয়ে তরজা শুরু হয়ে গিয়েছে। বিরোধীদের দাবি, এই গ্রেফতারি প্রমাণ করে দেয় যে বগটুইয়ের ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস এবং রাজ্য পুলিশ জড়িত। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে পুলিশের ওপর ক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন, আনারুল হোসেনকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছেন। এতেই গোটা বিষয় পুরোপুরি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। সিপিএম নেতা মহঃ সেলিম আবার এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে দাবি করেছেন যে, অনুব্রত মণ্ডলরা নিয়ন্ত্রণ করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাঁর হাতে কিছুই নেই।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen + 11 =