কলকাতা: বঙ্গ রাজনীতিতে সম্প্রতি আলোচনার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন শুভেন্দু অধিকারী৷ দলের সঙ্গে তাঁর দূরত্বের পিছনে বিজেপি যোগের ইঙ্গিত খুঁজছেন অনেকেই৷ রবিবার নন্দীগ্রামে সরকারি মঞ্চে তাঁর উপস্থিতির পরও তাঁকে নিয়ে গুঞ্জন বিন্দুমাত্র কমেনি৷ তার উপর রয়েছে শুভেন্দুর নিজস্ব অনুগামীদের কর্মকাণ্ড৷ যা সর্বদাই ইঙ্গিতবাহী৷
আরও পড়ুন- ‘পথশ্রী’ প্রকল্পের টাকা জোগাচ্ছে ‘গৌরী সেন’ কেন্দ্র? উঠছে প্রশ্ন
পূর্ব মেদিনীপুরে পা রাখলেই চোখে পড়বে বেশ কিছু পোস্টার৷ যেখানে বড় বড় হরফে লেখা রয়েছে ‘আমারা দাদার অনুগামী’ বা ‘আমরা দাদার সঙ্গে আছি’৷ হ্যাঁ, দাদার ছত্রছায়াতেই রয়েছেন এই ভাইয়েরা৷ দাদার সঙ্গ ছাড়া এই ‘ভাই’দের অস্তিত্বও যে সংকটে পড়বে, তা তাঁরা বিলক্ষণ জানেন৷ নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদেই এবার ধীরে ধীরে গর্ত থেকে মুখ বার করতে শুরু করেছেন তাঁরা৷ শনিবার রাত থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় স্পষ্ট হতে শুরু করে তাঁদের চেহারা৷ যা রাজনীতির আঙ্গিনায় এখন হট টপিক৷
দেখা যাচ্ছে শুভেন্দু অধিকারীর এই অনুগামীকুলের মূল পাণ্ডা জেলা সভাধিপতি মোশারফ হোসেন ওরফে মধু। এই পোস্টারগুলির নীচে সবার সামনে উঠে এসেছে এই মধু ফ্যান ক্লাবই৷ সম্প্রতি গেরুয়া কার্ডে বিজয়া সম্মিলনীর আমন্ত্রণ আর সঙ্গে রাজস্থানী পাগড়ি মাথায় প্রকাশ্যে এসেছিল শুভেন্দু অধিকারীর ছবি৷ তৃণমূলের প্রথম সারির নেতার এই আমন্ত্রণপত্রে দলের কোনও নামগন্ধ ছিল না৷ বরং , আয়োজকদের পরিচয় হিসেবে লেখা হয়েছে ‘আমরা দাদার অনুগামী’। গেরুয়া কার্ডে পাগড়ি মাথায় তাঁর ছবি ছাপিয়ে ‘দাদার অনুগামী’রা যে ভাবে বিজয়া সম্মিলনীর জন্য সক্রিয় হয়েছিলেন, তা রাজনৈতিক মহলের নজর এড়ায়নি৷ ফেসবুক কিংবা হোয়াটসঅ্যাপেও শুভেন্দুর গেরুয়া পাগড়ি পরা ছবির সঙ্গে লেখা ‘দাদা তুমি এগিয়ে চলো’, ‘আমরা তোমার সঙ্গে আছি’৷ আর সেই উক্তির সঙ্গে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে মোশারফের ছবিও৷
আরও পড়ুন- ‘স্বামীর বাড়িতে থাকতে চাই’, পোস্টার হাতে ধরনায় বাড়ির বৌ!
শুভেন্দু অধিকারী যদি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যান, তাহলে কি তাঁর পথই অনুসরণ করবেন মধু? তাঁর সাফ কথা, ‘আমার রাজনৈতিক গুরু শুভেন্দু অধিকারী। আমি তাঁকেই মান্য করি আর তাঁর সঙ্গেই থাকতে চাই। দল বদলের কথা সময় বলবে৷’’ তবে শুধু মধু নন৷ তাঁর ফ্যানক্লাবের বহু সদস্যই এখন শুভেন্দু অধিকারীর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার দিকে চেয়ে রয়েছেন৷ শুভেন্দুর সিদ্ধান্তের সঙ্গেই বদলাবে তাঁদের গন্তব্যও৷
প্রসঙ্গত, জেলা পর্যবেক্ষক হওয়ার পর কংগ্রেস শিবির থেকে বহু লোক ভাঙিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী৷ পঞ্চায়েত-পুরসভা থেকে শুরু করে জেলা পরিষদ, ভাঙন ধরিয়েছিলেন সবখানেই৷ দল ভাঙানোর সেই খেলায় শুভেন্দুর ডান হত ছিলেন এই মধুই৷ এর পর অবশ্য দাদার পুরস্কারে সভাধিপতির পদে বসেন মোশারফ৷