কলকাতা: ভোট মরশুমে বিরোধীদের হাতে ধারালো অস্ত্র হয়ে উঠল রাফাল৷ এবার রাফাল দুর্নীতি নিয়ে বিজেপি’র বিরুদ্ধে খড়গহস্ত তৃণমূল৷ বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে রাফাল দুর্নীতির পর্দা নিয়ে সরহ হল শাসক দল৷
আরও পড়ুন- মঞ্চে মন্ত্রীকে লক্ষ্য করে তৃণমূলের পাথর! থানায় ছুটলেন কেন্দ্রীয় নেতা!
এদিন তৃণমূল ভবন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে দলের মুখ্য সচেতক সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার ক্ষেত্রে ফরাসি কোম্পানি দাসোঁ ভারতের এক দালালকে ৮ কোটি ৬২ লক্ষ টাকা দিয়েছে৷ ফ্রান্সের ‘মিডিয়া পার্ট’ নামে একটি অনলাইন ম্যাগাজিনে এই খবরটি প্রকাশিত হয়েছে৷ প্যারিসের চারজন বিখ্যাত সাংবাদিকের তৈরি ওই অনলাইন ম্যাগাজিনে এই বিষয়টি বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরা হয়েছে৷ আপাতত দুটি পর্ব প্রকাশিত হয়েছে৷ শীঘ্রই চূড়ান্ত পর্ব প্রকাশ করা হবে বলে তাঁরা জানিয়েছেন৷ সেখান থেকে উঠে আসবে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য৷
এই সংস্থার দাবি, ফ্রান্সের অ্যান্টি করাপশন এজেন্সির কাছে একটি ফরাসি এনজিওর তরফে কিছু অভিযোগ করা হয়৷ সেলপা নামে ওই এনজিওটি প্রমাণ সহ দাবি করে যে, রাফাল যুদ্ধ বিমান বিক্রির ক্ষেত্রে দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে৷ পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবিও জানায় তারা৷ তাদের দাবির ভিত্তিতেই শুরু হয় তদন্ত৷ কিন্তু তদন্তের ভিত্তিতে যখন তথ্য উঠে আসতে শুরু করে, সেই সময় তদন্তটি আচমকা বন্ধ হয়ে যায়৷ তদন্তকে ধামাচাপ দেওয়া হয়৷ ভারতেও কিছু সংবাদমাধ্যম রাফাল দুর্নীতি সম্পর্কে কিছু তথ্য তুলে ধরেছিল৷ কিন্তু এখানেও নানাভাবে তদন্ত ধামাচাপ দেওয়া হয়েছে৷
সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, গতকাল কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেছেন, এটা কর্পোরেট ওয়ার্ল্ড৷ এর অর্থ প্রকারন্তরে তিনি স্বীকার করে নিলেন যে একটা দালালি বিনিময় হয়েছে৷ এবং সেটা সামনে এসেছে শুধুমাত্র কর্পোরেট লড়াইয়ের জন্য৷ তৃণমূল মনে করছে, উনি অনেক কিছুই জানেন৷ সরকার অনেক তথ্য জানে৷ সুখেন্দুশেখর বলেন, সরকারের কাছে আমাদের দাবি, সমস্ত তথ্য জনসাধারণের সামনে আনা হোক৷ সংসদে পেশ করা হোক এবং উচ্চ পর্যায়ে তদন্তের মাধ্যমে দুর্নীতির বিষয়টি খতিয়ে দেখা হোক৷
আরও পড়ুন- মহিলা ভোটারকে বুথে যেতে বাধা, হুমকি, কিন্তু কেন? নেপথ্য কাহিনী কী?
তাঁর কথায়, অগাস্টা হেলিকপ্টারের সময় যারা অবৈধ লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত ছিল সেই কোম্পানিকে এবারও দালালি দিয়েছে দাসোঁ৷ রেপ্লিকা বানানোর জন্য ৮ কোটি ৬২ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু তারা প্রমাণ করতে পারেনি যে এই ধরনের কোনও রেপ্লিকা বা ফাইটার প্লেন আদৌ তৈরি করেছিল কিনা৷ এখানে সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে৷ তিনি জানান, কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা দফতরের নিয়ম অনুযায়ী বিদেশ থেকে কোনও অস্ত্র, বিমান, কামান, সাবমেরিন প্রভৃতি কিনতে গেলে কোথাও কোনও দাদালি দেওয়া বা নেওয়া যায় না৷ কোনও লেনদেনের ক্ষেত্রে দালালি দেওয়া হলে তাহলে সেই চুক্তি বাতিল করতে হয়৷ ওই সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করতে হয়৷ ভারত থেকে ওই কোম্পানি যাতে কোনও বরাত না পায়, সেটাও নিশ্চিত করতে হয়৷ কিন্তু সেই নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই একটি কোম্পানিকে কোটি কোটি টাকা দালালি দেওয়া হয়েছে৷ এর পিছনে আরও অনেক বড় মাথা রয়েছে বলেই আমাদের আশঙ্কা৷ প্রতিরক্ষা দফতরকে এড়িয়ে কেন প্রধানমন্ত্রীর দফতর রাফাল চুক্তির ক্ষেত্রে অগ্রনী ভূমিকা পালন করেছিল সেই রহস্যেরও সমাধান করতে হবে৷