নদিয়া: ছেলে মুর্শিদাবাদের মহম্মদপুর আল-আমিন মিশনের ছাত্র৷ সেখানে থেকেই পড়াশোনা করে। মাকে ফোন করে নারকেল নাড়ু খাওয়ার আবদার করেছিল সে৷ সেইমতো নাড়ু বানিয়েছিল মা-ও৷ নাড়ু পাঠিয়েছিলেন বাবার হাত দিয়ে৷ এদিকে, ছেলেকে নাড়ু দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ছোট্ট মেয়েটার জন্য একটি পুতুল আর স্ত্রীর জন্য একটি কাচের গ্লাসের সেটও কিনেছিলেন বাবা। তখন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা হবে। তাঁর গাড়ি পৌঁছয় জলঙ্গির ফেরিঘাটের কাছে৷ আচমকা তিন-তিনটি বিস্ফোরণ৷ আচমকা বোমা বর্ষণে কিছুটা হতচকিত হয়ে গেলেও মুহূর্তের মধ্যে নিজেকে সামলে নেন তিনি। সেখান থেকে পালানোর চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি৷ পিছন থেকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে পর পর তিনটি গুলিকরা হয় নদিয়ার তৃণমূল নেতা মতিরুল বিশ্বাসকে৷ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি৷ সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর৷
আরও পড়ুন- অবৈধ চাকরি বাঁচাতে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত কী ছিল? শিক্ষাসচিবকে প্রশ্ন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মুর্শিদাবাদের নওদার শিবনগর এলাকায় খুন করা হয় নদিয়ার করিমপুর-২ ব্লকের তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি৷ তাঁর স্ত্রী রিনা বিশ্বাস নারায়ণপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান৷ খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় নওদা থানার পুলিশ৷ রক্তাক্ত অবস্থায় মতিরুলকে উদ্ধার করে আমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তাঁর পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক অবস্থায় চয়ে যায়৷ আমতা হাসপাতাল থেকে তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হলে সেখানেই মৃত্যু হয় নদিয়ার সাদিপুরের বাসিন্দা মতিরুলের।
পুলিশ সূত্রে খবর, ছেলে আরিফের সঙ্গে দেখা করতে মাঝে মধ্যেই আল-আমিন মিশনে আসতেন মতিরুল। অনুমান, দুষ্কৃতীদের কাছে সেই খবর ছিল৷ সেই মতোই হামলার ছক কষেছিল তারা৷ মতিরুলের স্ত্রী জানান, এর আগেও তাঁর স্বামীকে মারার চেষ্টা হয়েছে৷ সে কথা জানত পুলিশও৷ তাঁর নিরাপত্তায় একজন কনস্টেবল এবং একজন সিভিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল৷ ঘটনার সময় তাঁরা সেখানেই ছিলেন৷ কেন তাঁরা পাল্টা গুলি চালাল না, প্রশ্ন তাঁর৷ এই ঘটনায় সিআইডি তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>