কলকাতা: বাঘের আতঙ্কে কাঁটা কুলতলি৷ পুরনো কেল্লার কাছে শোনা গেল দক্ষিণরায়ের গর্জন৷ ডোঙ্গাজোড়ার আশেপাশেই ঘুরছে বাঘ৷ কিন্তু তিন দিন পরেও খাঁচা বন্দি করা গেল না রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারকে৷ ছাগলের টোপ দিয়ে খাঁচা পেতে চলছে বাঘ ধরার চেষ্টা৷
আরও পড়ুন- বিদেশে যাননি, তবুও বাংলায় ওমিক্রন আক্রান্ত ডাক্তারি পড়ুয়া
তিন দিন ধরে ক্রমাগত স্থান পরিবর্তন করে চলেছে বাঘটি৷ বন দফতর সূত্রে খবর, গরানকাঠি থেকে বাঘটি এখন চলে এসেছে পিয়ালী নদীর ধারে ডোঙ্গাঝোড়ার গ্রামে৷ সেখানে পুরনো কেল্লার জঙ্গল থেকেই আজ সকালে শোনা যায় দক্ষিণরায়ের গর্জন৷ এদিন রয়্যাল বেঙ্গলের পায়ের ছাপ দেখেই বনকর্মীরা পুরনো কেল্লার দিকে এগিয়ে যান৷ তাঁরা যখন বাঘের পায়ের ছাপ ক্যামেরাবন্দি করছেন, ঠিক তখনই শোনা যায় বাঘের গর্জন৷ তাঁরা বাঘটিকে দেখতেও পান৷ এর পরেই নদী লাগোয়া জঙ্গল জাল দিয়ে ঘিরে ফেলেন বন দফতরের কর্মীরা৷ ভিতরে পাতা হয়েছে খাঁচা৷ সেখানে টোপ হিসাবে রাখা হয়েছে একটি ছাগল৷ সেই সঙ্গে গ্রামবাসীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বনকর্তারা৷
ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন ডিএফও৷ তিনি বলেন, গতকাল যে বাঘটি গরানকাঠিতে ছিল, সেই বাঘটিই এখানে এসেছে৷ বন দফতরের কর্মী ও স্থানীয় লোকজন সেটিকে দেখেছে৷ গোটা এলাকাটি ঘিরে ফেলা হয়েছে৷ জঙ্গলের মধ্যেই বাঘটি রয়েছে৷ ইতিমধ্যেই দুটি খাঁচা পাতা হয়ে গিয়েছে৷ আশা করি শীঘ্রই বাঘটিকে খাঁচা বন্দি করতে পারব এবং সুস্থভাবে সেটিকে জঙ্গলে ছেড়ে দিতে পারব৷’’ তিনি আরও জানান, ‘‘কারও যাতে কোনও রকম ক্ষতি না হয়, সেটা দেখার জন্য আমরা এখানে রয়েছি৷ ’’
শুক্রবার ভোরে নদীতে কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন চম্পা নস্কর নামে এক মহিলা৷ প্রথমে নদীর পাড়ে রয়্যাল বেঙ্গলের পায়ের ছাপ দেখতে পান তিনি৷ তার পর দেখেন জঙ্গলের ভিতরে বসে আছেন দক্ষিণরায়৷ ডোরাকাটার ভয়ে চিৎকার জোড়েন তিনি৷ তাঁর চিৎকার শুনেই লাঠিসোঁটা নিয়ে ছুটে আসেন গ্রামবাসীরা৷ কিন্তু তাঁরা বাঘের দেখা পাননি৷ তবে পায়ের ছাপ স্পষ্ট৷ এই ঘটনায় কুলতলির গোপালগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের গায়েনচক এলাকায় রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে৷ পুলিশ ও বনদফতরকে খবর দেওয়া হয়৷ খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কুলতলি থানার পুলিশ ও বনদফতরের কর্মীরা৷ আপাতত সেই বাঘটি চলে এসেছে পিয়ালী নদীর তীরে ডোঙ্গাঝোড়ার গ্রামে৷
এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, গতকাল যে বাঘটি গরানকাঠিতে ছিল, সেই বাঘটি কেল্লায় চলে এসেছে৷ বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে গিয়েছিলাম৷ আমাকে দেখেই বাঘটি তেড়ে আসে৷