কলকাতা: প্রকাশ্যে এল জেল বন্দি সুদীপ্ত সেনের বিস্ফোরক চিঠি৷ এই চিঠিকে কেন্দ্র করে শুরু হল তীব্র রাজনৈতিক বিতর্ক৷ কাকে কত টাকা দিয়েছিলেন, সে কথা উল্লেখ করে সুদীপ্ত সেন চিঠি পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর কাছে৷ তদন্ত চেয়ে যথাযথ পদক্ষেপের দাবিও জানিয়েছে সারদা কর্তা৷ চিঠির সত্যতা অবশ্য যাচাই করেনি আজবিকেল ডট কম৷
আরও পড়ুন- কাটমানি নিতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা, তৃণমূল নেতাকে লাইট পোস্টে বেঁধে রাখল এলাকাবাসী
সাড়ে সাত বছর ধরে জেল বন্দী রয়েছে সারদা কার্তা সুদীপ্ত সেন৷ গ্রেফতার হওয়ার পর এতগুলো বছর কেটে যাওয়ার পর হঠাৎ চিঠি লিখে টাকা নেওয়ার কথা জানালেন সুদীপ্ত৷ তাঁর লেখা এই চিঠিকে কেন্দ্র করে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে৷ জানা গিয়েছে, ১ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই চিঠি লেখেন সুদীপ্ত সেন৷ সংশোধনাগারের নিয়ম মেনে সেই চিঠি পাঠানো হয় কারা বিভাগের এডিজি ও আইজিকে৷ চিঠির সত্যতা স্বীকার করেছে প্রেসিডেন্সি কর্তৃপক্ষ৷ তাঁরা জানিয়েছেন, সুদীপ্ত সেনের লেখা চিঠি নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে৷ ওই চিঠিতে নিজেকে সারাদা গ্রুপ অফ কোম্পানির মালিক বলেই পরিচয় দিয়েছেন সুদীপ্ত৷ ওই চিঠিতে কাকে কত টাকা দিয়েছেন সে কথা উল্লেখ করেছেন তিনি৷ উঠে এসেছে একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নাম৷ তিনি লিখেছেন, তাঁর কাছ থেকে ৬ কোটি টাকা নিয়েছেন অধীর চৌধুরী৷ সুজন চক্রবর্তী নিয়েছিলেন ৯ কোটি টাকা৷ এর পরিপ্রেক্ষিতে অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘তৃণমূল ভয় পেতে শুরু করেছে৷ চরিত্র হননের চেষ্টা করা হচ্ছে৷ এই চিঠির সত্যতা যাচাই করে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ করব৷ এক সময় আমরাই সিবিআই তদন্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলাম৷’’ অন্যদিকে সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘চূড়ান্ত হাস্যকর৷ জালিয়াতি স্পষ্ট৷ রাজ্য প্রশাসনের এক্তিয়ারে রয়েছে সুদীরপ্ত সেন৷ তিনি কী বললেন তার কোনও গুরুত্ব নেই৷ বাম-কংগ্রস শক্তিকে ভয় পাচ্ছে নবান্ন৷’’
আরও পড়ুন- শুভেন্দু তৃণমূলেই! শরিকি বাড়ি তৃণমূল, গলযোগ হয়েই থাকে: ব্রাত্য
মুকুল রায় প্রচুর টাকা নিয়েছেন বলেও দাবি করা হয়েছে চিঠিতে৷ তবে টাকার পরিমাণ তিনি মনে করতে পারছেন না বলে উল্লেখ করেছেন৷ মুকুল রায় বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টাই গটআপ৷ রাজ্যের হেফাজতে থাকা অপরাধীর বক্তব্যের কোনও মূল্য নেই৷’’ এখানেই শেষ নয়, বিমান বসু ২ কোটি টাকা নিয়েছেন বলেও দাবি করা হয়েছে৷ এই কথা শুনে হাসির ছলে বিমান বসু বলেন, ‘‘ও তাই নাকি৷ দেখা যাবে৷’’ এছাড়াও রাজ্যের আরও এক প্রভাবশালী নেতা ৬ কোটি টাকা নিয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে৷ সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেস ও তৃণমূলের অন্যান্য অনেক নেতা টাকা নিয়েছে বলেও চিঠিতে লেখা রয়েছে৷ তবে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি৷ সিবিআই ও রাজ্য পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন সুদীপ্ত সেন৷ যাঁরা টাকা নিয়েছিলেন তাঁরা বিজেপি’তে যাচ্ছেন দেখেও তিনি মর্মাহত বলে উল্লেখ করেন সারদা কর্তা৷