আন্দোলনের মঞ্চ থেকেই পেল ‘নতুন জীবন’, বিয়ের পিড়িতে খুকুমণি-মিঠুন

আন্দোলনের মঞ্চ থেকেই পেল ‘নতুন জীবন’, বিয়ের পিড়িতে খুকুমণি-মিঠুন

কলকাতা:  এক জনের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুর৷ অন্যজনের নদিয়ার চাপড়া৷ দু’জনে দুই প্রান্তের বাসিন্দা৷ কিন্তু, তাঁদের পথ যেন এক৷ একই কেন্দ্রে এসে মিসেছে ওঁদের জীবনের স্রোত৷ 

আরও পড়ুন- ‘অনুব্রত বাঘ’, বেশি দিন বন্দি করে রাখা যাবে না, বীরভূমে দাঁড়িয়ে হুঙ্কার ফিরহাদের

মিঠুন বিশ্বাস আর খুকুমণি দোলই। তাঁর দু’জনেই হবু শিক্ষক৷ আলাপ হয়েছিল আন্দোলনে ব্যারিকেড তৈরি করতে করতে। এসএসসি নিয়োগ-দুর্নীতির শিকার তাঁরাও৷ অন্য চাকরিপ্রার্থীদের মতো তাঁরাও পথে নেমেছিলেন৷ নিয়োগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে হয়েছেন সরব৷ আন্দোলনের সেই মঞ্চে স্লোগান তোলা কন্ঠে কণ্ঠ মিলেছে ওঁদের৷ অস্ফুটে যেন বলে উঠেছে, ‘ঠোঁটে ঠোঁট রেখে ব্যারিকেড কর’৷

তাঁদের আন্দোলনের সেই পথই বেঁধে দিল বন্ধনহীন গ্রন্থিতে। আলাপ থেকে প্রেম আর সব শেষে শুভ পরিণয়৷ গত অগাস্ট মাসে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন মিঠুন আর খুকুমণি। বিপ্লবের মঞ্চ থেকেই এক হয় তাঁদের চারহাত।

২০২০ সাল থেকে লাগাতার চলছে এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন৷ শুক্রবার সেই আন্দোলন ৬০০ দিনে পা দিল। আন্দোলন শুরু হয়েছিল মেয়ো রোড থেকে৷ ন্যায্য চাকরির দাবিতে আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন মিঠুন-খুকুমণিরা। ২০২১-এর প্রথম দিকে জায়গা বদল করে সেই আন্দোলন মঞ্চ পৌঁছয় সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কের ৫ নম্বর গেটের সামনে৷ সেই মঞ্চে পাশাপাশি বসে নিজেদের সুখ-দুঃখ, পরিবার, আন্দোলনের কথা বলতে বলতেই কখন যেন একে অপরকে ভাল লেগে যায় ওঁদের। এই ভালো লাগা বদলে যায় প্রেমে। এর পর সেন্ট্রাল পার্কের ৫ নম্বর গেটের আন্দোলন পৌঁছয় মেয়ো রোডের  গান্ধীমূর্তির পাদদেশে৷ কিন্তু, একে অপরের হাত ছাড়েননি মিঠুন-খুকুমণি৷ 

আন্দোলনের মাঝেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। সম্মতি জানায় দু’জনের পরিবার-পরিজনেরা। চলতি বছরের অগাস্ট মাসে দুই বাড়ির উপস্থিতিতেই গাঁটছড়া বাঁধেন মিঠুন-খুকুমণি। তবে বিয়ে করে নতুন সংসারের জোয়ারে গা ভাসানোর ফুরসত নেই তাঁদের৷ নেই পরিস্থিতিও। কারণ নিয়ম করে ধর্না-আন্দোলন-মিছিল-স্লোগানই যে তাঁদের জীবন। নিজেদের অধিকার পাওয়ার লড়াইয়ে ব্রতী নবদম্পতি।