নথি হাতে চার তৃণমূল নেতার কেলেঙ্কারি ফাঁস শুভেন্দুর

নথি হাতে চার তৃণমূল নেতার কেলেঙ্কারি ফাঁস শুভেন্দুর

কলকাতা: তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিধানসভায় ঝড় তোলার পর সাংবাদিক বৈঠক করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, তৃণমূলের দুর্র্নীতির নথি ধাপে ধাপে তুলে ধরা হবে৷ এদিন প্রামাণ্য নথি সঙ্গে নিয়ে তৃণমূল নেতাদের কেলেঙ্কারির পর্দা ফাঁস করেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক৷ তিনি জানান, একাধিক তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক, ব্লক ও জেলা স্তরের নেতাদের বিরুদ্ধে উৎকোচ নেওয়া প্রমাণ রয়েছে তাঁর হাতে৷ যা ক্রমান্বয়ে প্রকাশ করা হবে৷ এদিন চারজন নেতার অবৈধ সম্পত্তির খতিয়ান তুলে ধরেন তিনি৷ 

আরও পড়ুন- ক্ষতির পরিমাণ কয়েক লক্ষ, দায়ী বিজেপি! নবান্ন অভিযান নিয়ে হাইকোর্টে নয়া মামলা

তাঁর আগে শুভেন্দু বলেন, ২০১১ সালের পর এই প্রথম পার্থ চট্টোপাধ্যয়হীন বিধানসভা চলছে৷ যিনি ১৪ তলা থেকে নির্দেশনামা নিয়ে আসতেন৷ চুরি, দুর্নীতি, কাটমানি, মেধা তালিকাভুক্ত প্রার্থীদের বঞ্চিত করে চাকরি বিক্রি, অপা সিন্ডিকেট নিয়ে কথা বলতে গেলে ‘ডাকাতের সর্দার’ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নামটাও এসে যাবে৷ সেই কারণেই আজ অধ্যক্ষ মুলতুবি প্রস্তাব পড়তে দেননি। তাই আমরা চোরেদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছি৷ শুভেন্দুর দাবি, শতাধিক তৃণমূল বিধায়ক আজ চোরেদের বিরুদ্ধে তাঁদের সঙ্গে গলা মিলিয়েছে। 
 
সাংবাদিক বৈঠকে শুভেন্দু বলেন, ১০০ দিনের কাজে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে কুলতলির বিধায়ক গণেশচন্দ্র মণ্ডলের নামে৷ তিনি জানান, কুলতলিতে মোট ৩৯টি দলিল রয়েছে৷ গণেশচন্দ্র মণ্ডলের নিজের নামে ১৩টি, স্ত্রী মৌসুমী মণ্ডলের নামে ১৬টা, মেয়ে রশনি মণ্ডলের নামে ৪টি, অপর মেয়ে ঋত্বিকা মণ্ডলের নামে ৪টি, শিবপ্রসাদ মণ্ডল (বাবা)-এর নামে ১টি এবং মৌরিহালা মণ্ডল (মা)-এর নামে ১টি করে দলিল রয়েছে৷ তিনি আরও জানান, এই ৩৯টি সম্পত্তিই কেনা হয়েছে ২০১৯ থেকে ’২১ সালের মধ্যে৷  
এর পরেই জাহাঙ্গির খানের নাম নেন শুভেন্দু৷ তিনি বলেন, ‘‘জাহাঙ্গির খান ভাইপোর সবচেয়ে বড় এজেন্ট৷ তিনি দক্ষিণ ২৪ পরগণার একটি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি৷ তাঁরও দলিলের সংখ্যা ৩৯৷ জাহাঙ্গির খান ও তাঁর বাবা আকবর খানের নামে রয়েছে ৬টি সম্পত্তি৷ স্ত্রী সারিকা বিবির নামে রয়েছে ৩১টি সম্পত্তি, শ্যালিকা সুলতানা বিবি খানের নামে রয়েছে ২টি সম্পত্তি৷ সমস্ত সম্পত্তির মূল্য কয়েক কোটি টাকা৷’’
তৃতীয়ত ডায়মন্ডহারবার ১ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধক্ষ তথা যুব তৃণমূলের সভাপতি গৌতম অধিকারীর সম্পত্তির খতিয়ান প্রকাশ করেন বিরোধী দলনেতা৷ তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত গৌতমের ১১টি সম্পত্তির হদিশ মিলেছে৷ যে সম্পত্তিগুলি কেনা হয়েছিল ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্য৷ শুভেন্দু জানান, গৌতম অধিকারীর নামে ৬টি৷ তাঁর স্ত্রী উমা অধিকারীর নামে ৩টি এবং দিশা ও ইশিতা অধিকারীর নামে ২টি করে সম্পত্তি রয়েছে৷ শুভেন্দু আরও বলেন, ২০১৮ সালে এঁরা বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় জয়ী হয়েছিলেন৷ কিন্তু ভোটের আগে যে হলফনামা জমা দিয়েছিলেন, তাতে এই সম্পত্তির উল্লেখ ছিল না৷ এই সম্পত্তিগুলি বেআইনি বলেই দাবি তাঁর৷ শুভেন্দুর কথায়, ১০০ দিনের টাকা আত্মসাৎ করেই এই সকল সম্পত্তি করা হয়েছে৷ 

চার নম্বরে উঠে আসে ডায়মন্ডহারবার ব্লক ২ এর শামীম আহমেদ মোল্লার নাম৷ তাঁর নামে মোট ১০টি সম্পত্তি রয়েছে৷ শুভেন্দুর অভিযোগ, ‘‘ভাইপোর পিএ এস রায় শামিমের নামে সম্পত্তি কিনেছেন৷ তাঁর কাছে ৫০ কোটি টাকার বেশি সম্পত্তি রয়েছে৷’’
তোপ দেগে শুভেন্দু বলেন, সবটাই হয়েছে ডায়মন্ডহারবার মডেলে৷ যে মডেলে সিভিক ভলেন্টিয়ার থেকে শিক্ষক নিয়োগ, সবেতেই টাকা নেওয়া হয়৷ 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 4 =