রেশন দোকান থেকে মদ বিক্রির ছাড়পত্র দিক কেন্দ্র, আর্জি রেশন ডিলারদের

রেশন দোকান থেকে মদ বিক্রির ছাড়পত্র দিক কেন্দ্র, আর্জি রেশন ডিলারদের

কলকাতা: কেন্দ্রীয় সরকারের নীতিতে ভাটা পড়েছে উপার্জনে৷  রোজগার বাড়াতে তাই অভিনব আর্জি জানালেন রেশন ডিলাররা৷ বাড়তি রোজগারের আশায় রেশন দোকান থেকেই মদ বিক্রির ছাড়পত্র চেয়ে আবেদন জানানো হল কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে৷ সম্প্রতি এই মর্মে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠিও দিয়েছে রেশন ডিলারদের সর্বভারতীয় সংগঠন অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশন। যার সহ-সভাপতি হলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাই প্রহ্লাদভাই মোদী৷ অন্যদিকে, এই  সংগঠনের মুখ্য উপদেষ্টা তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়।

আরও পড়ুন- দীর্ঘ সময় সাব ইন্সপেক্টর নিয়োগ বন্ধ! তদন্ত প্রক্রিয়া প্রশ্নের মুখে

যদিও রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষের কাছে এই দাবি ‘অবান্তর’৷ তাঁর কথায়, ‘রেশন দোকান থেকে মদ বিক্রি করা হবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না। তেমনটা হলে পাড়ায় পাড়ায় মদের দোকান গজিয়ে উঠবে।’ কিন্তু হঠাৎ কেন রেশন দোকানে মদ বিক্রির ভাবনা মাথায় এল রেশন ডিলারদের?

ডিলারদের একাংশের কথায়, রেশন ব্যবস্থায় দুর্নীতি রুখতে বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এই পদ্ধতিতে গ্রাহকদের আঙুলের ছাপ বায়োমেট্রিক মেশিনে মিলিয়ে দেখা হয়। সেই সঙ্গে চালু করা হয়েছে ওটিপি সিস্টেম। এই সিস্টেমে গ্রাহকের নির্দিষ্ট মোবাইল নম্বরে ওটিপি পাঠানো হয়৷ সেই ওটিপি না দিলে রেশন তোলা যায় না। নতুন সিস্টেমে যাঁর নামে রেশন কার্ড রয়েছে, শুধুমাত্র তিনিই রেশন তুলতে পারবেন। কেন্দ্রীয় সরকারের এই নয়া সিস্টেমের ফাঁদেই পড়েই ব্যতিব্যস্ত  রেশন ডিলাররা৷ 

বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা চালুর আগে কোনও গ্রাহক সাপ্তাহিক রেশন না-তুললে সেটা খোলা বাজারে বিক্রি করে বাড়তি রোজগারের সুযোগ পেতেন ডিলাররা। কিন্তু, এখন আর সেই সুযোগ নেই। তাছাড়া তাঁদের কমিশনও বিশেষ বাড়ানো হয়নি বলে দাবি  ডিলারদের৷ অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশনের সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু বলেন, ‘সমস্ত খরচ মিটিয়ে এখন মাস গেলে পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা উপার্জন করেন ডিলাররা। বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর রেশন ডিলারদের আর্থিক অবস্থা সত্যই শোচনীয় হয়ে উঠছে। তাই তাঁরা বাড়তি রোজগারের রাস্তা খুঁজছেন।’

এই অবস্থায় দোকানে রেশনে সামগ্রী রাখার পাশাপাশি বিমা পলিসি, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, প্যান কার্ডের পরিষেবা, পাঁচ কেজি এলপিজি সিলিন্ডার বিক্রি এবং ওয়াইফাই কানেকশন (আড়াইশো মিটারের মধ্যে) দেওয়ার যায় কি না, সেই ব্যাপারেও রাজ্যগুলির মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে। রেশন দোকানগুলিতে আর কী কী পরিষেবা চালু করা যায়,  সেই ব্যাপারে এশিয়ান ডেভেলপমেন্টের ব্যাঙ্কের সঙ্গেও আলোচনা চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই প্রেক্ষিতে রেশন ডিলারদের একাংশের মত, তাঁদের রেশন দোকান থেকে মদ বিক্রি করতে দেওয়া হোক৷ তাঁদের এই দাবি যুক্তিসম্মত বলেও মত।

এ প্রসঙ্গে রেশন বিশ্বম্ভরের যুক্তি, ‘ফি বছর আমাদের রাজ্যে বহু মানুষ বিষমদের বলি হন। রেশন দোকান থেকে মদ বিক্রি করা হলে এর পরিমাণ অনেকটাই কমবে। সবচেয়ে বড় কথা, এর ফলে উপকৃত হবেন রাজ্যের প্রায় ২০ হাজার রেশন ডিলার৷’