কলকাতা: একুশের বিধানসভা নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, রাজ্য জুড়ে রাজনৈতিক বাদানুবাদে ততই ছড়াচ্ছে উত্তাপ। দলীয় অসন্তোষ ও দলবদলের চোরাবালিতে দিশাহারা শাসকদলকে কোণঠাসা করতে উঠে পড়ে লেগেছে বিজেপি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল। তবে বাংলায় পুণরায় ক্ষমতা দখলে মরিয়া তৃণমূল। দলীয় নেতাদের আক্রমণ- প্রতি আক্রমণের এই ধারাতেই এবার সামিল হলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন- ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে পালন করতে চাইলে আগেই দল ছাড়ুন’, বেফাঁস পার্থ
এদিন শাসক ও বিরোধী দলের এই দুই নেতার দ্বন্দ্বে রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল দক্ষিণ কলকাতার বেহালার পরিস্থিতি। বহুদিন পর নিজের পুরোনো আস্তানা বেহালায় দলীয় প্রচারে গিয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। হাতে ছিল গেরুয়া পতাকা। তবে প্রাক্তন তৃণমূল নেতার মিছিলের আগেই এদিন বেহালায় মিছিল করেন শিক্ষামন্ত্রী তথা বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায়। একদা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছত্রছায়ায় তাঁরা ছিলেন সতীর্থ। কিন্তু এখন দুই বিপরীত শিবিরের নেতার মুখে একে অপরের জন্য রয়েছে শুধুই কটূক্তি আর কটাক্ষ।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মিছিলে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সাংবাদিকদের সামনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “বেহালায় আমাদের একটাই প্রভাব, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে নিয়েই আমাদের স্বপ্ন।” এরপর পুরোনো সতীর্থের দিকে কটাক্ষ ছোঁড়েন গেরুয়া নেতাও। প্রতিবেশী বিধায়ক সম্বন্ধে শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বালিগঞ্জ থেকে দাঁড় করাবেন ঠিক করছিলেন। আমিই ওঁকে নিয়ে এসেছিলাম। আজকে তাঁর প্যারালাল মিছিল!” তৃণমূলের মিছিলে ১০ ভাগের এক ভাগও লোক হয় নি বলে দাবি করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন- ‘এত হতাশা কেন’? জুতোর মালা পরানোর প্রসঙ্গে তৃণমূলকে ‘দেউলিয়া’ বলে কটাক্ষ রাজীবের
এখানেই শেষ নয়, বেহালায় নিজের জনপ্রিয়তা সম্পর্কে আশাবাদী শোভন চট্টোপাধ্যায় হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন পার্থ বাবুকে। তাঁর কথায়, “আমি পার্থ বাবুকে বিনয়ের সঙ্গে বলি, বেহালায় দাঁড়াতে যাবেন না। রিস্ক নেবেন না।” বেহালা থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় তথা তৃণমূল কংগ্রেসের বিধানসভার দরজা বন্ধ বলেই মন্তব্য করেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। সব মিলিয়ে দুই রাজনৈতিক শিবিরের যুযুধান নেতার মুখোমুখি লড়াইয়ে যে জমে গেছে বেহালার বিধানসভা, তা বলাই বাহুল্য।