বৃষ্টির সন্ধেয় তেলেভাজা চাই! পার্থের আবদার মেটাল জেল, ক্যান্টিন থেকে এল আলুর চপ-বেগুনি

বৃষ্টির সন্ধেয় তেলেভাজা চাই! পার্থের আবদার মেটাল জেল, ক্যান্টিন থেকে এল আলুর চপ-বেগুনি

কলকাতা: ইডি-র কাছে বেশ কয়েকবার আবদার করেছিলেন তিনি৷ কিন্তু ইডি সেই আবদার রাখেনি৷ এবার খাওয়া নিয়ে জেল কর্তৃপক্ষের কাছেও নানা ‘বায়না’ জুড়েছেন৷ সোমবার সন্ধ্যেয় বৃষ্টি ঝরতেই আবদার তেলেভাজা চাই৷ কিছুটা নাছোড় হয়ে পড়েন তিনি৷ অবশেষে খানিকটা বাধ্য হয়েই সেই আবদার মেটায় জেল কর্তৃপক্ষ৷ জেল ক্যান্টিন থেকে আনা হল আলুর চপ, বেগুনি৷ স্বাস্থ্যের পরোয়া না করেই জমিয়ে খেলেন এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত  রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ 

আরও পড়ুন- জেলে বসে রামকৃষ্ণ শরণে পার্থ, পড়তে চাইলেন ‘টাকা মাটি মাটি টাকা’, চেয়েছেন খাতা আর কলম

কখনও খাসির মাংস-ভাত, কখনও আবার তেলেভাজা। ইডি হেফাজত থেকে জেল, বন্দিদশায় বারবার খাওয়া নিয়ে আবদার করতে শোনা গিয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। পিছিয়ে ছিলেন না তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ও। তাঁর আবদার ছিল ড্রাই ফুটস৷ তবে ইডি হেফাজতে কোনও আবদারই পূরণ হয়নি তাঁদের। শুক্রবার রাতে জেলে আসার পর থেকে নিজের মতোই রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কারও সঙ্গে বিশেষ কথা বলেননি। সোমবার দুপুরে পাঁচজন কয়েদির মতোই ডাল আর সবজি দিয়ে ভাত খেয়েছেন তিনি।

নাকতলার বাড়িতে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর ২৩ জুলাই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে ইডি। তবে থেকে টানা ৫ অগাস্ট পর্যন্ত ইডি হেফাজতেই রাখা হয়েছিল তাঁকে। তার পর আদালতের নির্দেশে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়৷ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেটে আধিকারিকদের জেরা পর্ব চলার মাঝেও খাওয়া নিয়ে নানা বায়না করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সেখানেও একদিন তেলেভাজা খাওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর স্বাস্থ্যের কথা ভেবে ইডি অনুমতি দেয়নি। এদিনও প্রথমে তাঁর তেলেভাজার আবদার নাকোচ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, তিনি নাছোড়বান্দা। তাঁর জেদের সামনে হার মানতে হয় জেল কর্তৃপক্ষকেই৷ চিকিৎসকরা অনুমতি নিয়ে দেওয়া হয় তেলেভাজা৷ 

জেল সূত্রে খবর, প্রথম দু’দিন স্বাভাবিক বিশ্রাম নিলেও বিনিদ্র রজনী কেটেছে পার্থের৷ তৃতীয়দিন থেকে ভালোই ঘুম হয়েছে তাঁর। একটি চৌকিও দেওয়া হয়েছে তাঁকে৷ ফলে আর মাটিতে কম্বল বিছিয়ে শুতে হয়নি৷ প্রথমে পহেলা বাইশের জন্য বরাদ্দ কমন টয়লেটেই স্নান সেরেছেন তিনি। নিয়মমাফিক সকাল ৬টা থেকে সাড়ে ৬টার মধ্যে খেয়েছেন চা-বিস্কুট৷ প্রাতঃরাশে পেয়েছেন পাউরুটি কিংবা চিড়ে৷ বেলা ১২টার মধ্যেই দুপুরের খাবার৷ মেনুতে ছিল ভাত, ডাল এবং সবজি। রাতে ৮টার মধ্যেই নৈশভোজ সেরে ফেলতে হয়েছে প্রাক্তন মন্ত্রীকে। সংশোধনাগারের অন্য আবাসিকদের মতো সব নিয়ম পালন করতে হচ্ছে তাঁকেও৷ তবে এরই মধ্যে পা ফুলেছে তাঁর৷ ব্যথা রয়েছে কোমরেও। ফলে কয়েদিদের জন্য বরাদ্দ স্নানঘরে আর যেতে পারছেন না তিনি। তাই সেলের বাইরেই জলভরা একটি ড্রাম দেওয়া হয়েছে তাঁকে। সেখান থেকে মগে করে জল নিয়ে কোনও মতে স্নান সারেন পার্থ। জানা গিয়েছে, জেলে দফায় দফায় ঘুমোচ্ছেন তিনি। ঘুম থেকে উঠে আবার খাওয়াদাওয়া করেছেন। খেয়েই আবার ঘুমিয়ে পড়ছেন।