কলকাতা: করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের খরচ বেড়ে গিয়েছে বহুগুণ৷ এই পরিস্থিতিতে সংসার চালাতে রাজ্যের কাছে হাউজহোল্ড খাতে ৫৩ লক্ষ টাকা চান রাজ্যপাল৷ যার জবাবে সাফ ‘না’ করে দেয় নবান্ন৷ এর পরই সোমবার বিকেলে চাচাছোলা ভাষায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধরকড়৷
আরও পড়ুন- মুখ্যমন্ত্রীর সংবিধানিক শপথ নিয়ে খোঁচা রাজ্যপালের! বললেন, আমি কারও রবার স্ট্যাম্প নই
এদিন তিনি বলেন, রাজ্যে খোলা টাকা বিতরণ করা হচ্ছে৷ পুজো কমিটিগুলোকে ৫০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হচ্ছে৷ পুরোহিতদের ভাতা দেওয়া হচ্ছে৷ কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন টাকা নেই৷ অথচ রাজভবনের জন্য ৩০-৪০ লক্ষ টাকা রাজ্যের নেই৷ বরাদ্দ করা অর্থও নেই রাজ্যের হাতে৷ ক্ষিপ্ত সুরেই তিনি বলেন, রাজ ভবনকে কোনও কিছুর সঙ্গে সমঝোতা করতে দেব না৷ সরকার ভুল করছে৷ এটা মানা যায় না৷ সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা সম্পর্কে তাঁর জানা উচিত৷ রাজভবনকে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে৷ রাজভবনে মাত্র একজন আইইএস অফিসার এবং একজন ডব্লিউবিসিএস অফিসার রয়েছেন৷ আর কোনও অফিসার নেই৷ ৫০ শতাংশ কর্মী নেই৷
রাজ্যপাল জানান, রাজভবনকে পালটা চিঠি দিয়ে স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কোভিড প্যান্ডামিকের জেরে রাজকোষে টান পড়েছে৷ ব্যয় সঙ্কোচের নীতি নিয়েছে রাজ্য সরকার। সুতরাং রাজ্যপালের চাহিদা অনুযায়ী অতিরিক্ত অর্থ দেওয়া এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রাজ্য সরকার জানিয়েছে, আগামী বছর মার্চ পর্যন্ত সরকারি দফতরে খরচ কমাতে হবে৷ অর্থ দফতরের অনুমতি ছাড়া হবে না কোনও নিয়োগ৷ সরকারি কর্মীরা মহার্ঘভাতা পাচ্ছে না৷ অথচ অনুদানে কমতি নেই৷
আরও পড়ুন- রাজ্য পুলিশের ডিজি এত ‘ক্যালাস’? ‘পুলিশ-রাজে’র বিরুদ্ধে চাঁচাছোলা রাজ্যপাল
প্রসঙ্গত, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে রাজভবনের জন্য ১৬.৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল৷ কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে বেতন-পেনশন ছাড়া সমস্ত খাতেই ৫০ শতাংশ বরাদ্দ কমানো হয়েছে৷ সেই তালিকা থেকে বাদ পড়েনি রাজভবনও৷ কিন্তু রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়৷ রাজ্য সরকারের বরাদ্দ টাকা প্রায় শেষের মুখে৷ রাজভবনের খরচ সামাল দিতেই অতিরিক্ত অর্থ চাওয়া হয়েছিল রাজ্যের কাছে৷ এদিকে, নবান্নের সিদ্ধান্তে পড়েছেন রাজভবনের কর্মীরাও৷ রাজ্যপালের বক্তব্য রাজভবনের সঙ্গে নেতিবাচক ব্যবহার করা হচ্ছে৷ তিনি রাজভবনের মর্যাদে ক্ষুন্ন হতে দেব না৷