একজন প্রাপ্তবয়স্ক স্বেচ্ছায় ধর্মান্তরিত হলে কেউ বাধা দিতে পারে না, রায় হাইকোর্টের

একজন প্রাপ্তবয়স্ক স্বেচ্ছায় ধর্মান্তরিত হলে কেউ বাধা দিতে পারে না, রায় হাইকোর্টের

কলকাতা: কোনও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি স্বেচ্ছায় নিজের পছন্দে বিয়ে করলে বা ধর্মান্তরিত হলে তাতে কারও বাধা দেওয়ার অধিকার নেই৷ সোমবারই এমনই এক গুরুত্বপূর্ণ রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট৷ এক হিন্দু পিতার আবেদনের ভিত্তিতে আদালতের এই রায়৷ 

আরও পড়ুন- ‘আমরা কোন বিজেপি’? গাইঘাটায় প্রকাশ্যে গেরুয়া শিবিরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব!

৪৪ বছরের ওই পিতার অভিযোগ, এক মুসলিম যুবককে বিয়ে করার জন্য ধর্মান্তরিত হয়েছে তাঁর ১৯ বছরের মেয়ে৷ তিনি জানান, গত ১৫ সেপ্টেম্বর তাঁর মেয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়৷ পরের দিন তিনি শোনেন তাঁর মেয়ের ধর্মান্তকরণ করা হয়েছে৷ তাঁকে মুসলিম নাম দিয়ে বিয়ে করেছে ওই মুসলিম যুবক৷ তাঁর অভিযাগ, তাঁর মেয়েকে এই কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছে, কিংবা প্রলুব্ধ করা হয়েছে৷ 

ওই ব্যক্তির নদীয়ার দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা৷ পেশায় কৃষক৷ তাঁর আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত জানান, ‘‘ওই দিন ব্যাঙ্কে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেড়িয়েছিল তাঁর মেয়ে৷ কিন্তু আর বাড়ি ফেরেনি৷ এর পরই মুরুতিয়া থানায় এফআইআর দায়ের করেন তিনি৷ অপহরণের অভিযোগ আনা হয়৷’’ ওই ব্যক্তি তাঁর পিটিশনে জানিয়েছেন, মেয়ের কোনও গতিবিধি দেখে কখনই কোনও সন্দেহ হয়নি তাঁর৷ আন্তঃ ধর্মীয় বিয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ বিবাহ আইন ১৯৫৪ অনুযায়ী তাঁদের বিয়ের বন্দোবস্ত করা হয়৷ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নাম ও ধর্ম পরিবর্তন করে বিয়ে করেন ওই যুবতী৷ 

আরও পড়ুন- সিএএ নিয়ে রাজ্যে সরকার ফাঁদ পাতছে! মতুয়া সমাজকে সতর্ক করলেন শান্তনু ঠাকুর

পুলিশ ওই যুবতীকে খুঁজে পাওয়ার পর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে সে জানায়, সে স্বেচ্ছায় ধর্মান্তরিত হয়েছে এবং বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে৷ কিন্তু তাঁর বাবা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন৷ তাঁর অভিযোগ, এমন  পরিস্থিতির মধ্যে এই বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে, সেখানে সে স্বচ্ছন্দ্য ছিল না৷ তাঁর এই আশঙ্কা নিরসনে ওই যুবতীকে তেহট্টর বর্ষীয়ান জেলা বিচারকের কাছে যাওয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট৷ কোনও জবরদস্তি বা অযৌক্তিক প্রভাব থেকে যাতে সে মুক্ত থাকে সে বিষয়ে নিশ্চিত করার নির্দেশও দেওয়া হয়৷ ওই যুবতীর সঙ্গে কথা বলার পর হাইকোর্টের কাছে রিপোর্ট পাঠানো হয়৷ এর পরই এই তাৎপর্যপূর্ণ রায় দেয় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেঞ্চ৷           
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *