কলকাতা: কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে মুর্শিদাবাদের নিমতিতা রেলস্টেশনে রাজ্যের শ্রম প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের উপরে হামলা ও বোমা বিস্ফোরনের ঘটনায় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ ঘটনার তদন্তভার হাতে নিয়েছে। ইতিমধ্যেই সংস্থার তদন্তকারীরা রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডি এবং এই ঘটনায় গঠিত রাজ্য পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দলের সঙ্গে কথা বলেছে বলে স্বরাষ্ট্র দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। গত ১৭ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যায় এই ঘটনার পরে প্রাথমিক ভাবে ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করে এনআইএ-র প্রতিনিধিরা মন্ত্রকে রিপোর্ট পাঠানোর পরেই তার গুরূত্ব বুঝে তার তদন্তভার এনআইএ-কে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ২০১৪ সালে খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণের পর নিমতিতা, দ্বিতীয় কোনও বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্তভার নিল NIA। চলতি সপ্তাহেই সেন্ট্রাল ও স্টেট ফরেনসিক রিপোর্ট পাবে সিট, সেই রিপোর্টই তারা হ্যান্ডওভার করে দেবে NIA-কে বলে জানা গিয়েছে। নিমতিতা স্টেশনের ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মের উপর রাজ্যের শ্রম মন্ত্রী জাকির হোসেনের উপর বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। মন্ত্রীকে ওই স্টেশন দিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় এই বিস্ফোরণ ঘটার ফলে মন্ত্রী সহ মোট ২৭ জন গুরুতর জখম হন ওইদিন। বিস্ফোরণের পরেই পুলিশ অনুমান করেছিল, এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে কোনো রিমোট কন্ট্রোল ডিভাইস বোমার মাধ্যমে। তবে পুলিশ ও সিআইডি’র প্রাথমিক যৌথ তদন্তে টাইমার ডিভাইস থেকেও বিস্ফোরণ ঘটানোর তথ্য উঠে এসেছে। আর এই অনুমানের ভিত্তিতেই শুরু হয় তদন্ত।
আরও পড়ুন- ‘বাংলায় জয় শ্রীরাম স্লোগান রোখার চেষ্টা চলছে, বিরোধিতা হচ্ছে CAA-র, তোপ যোগীর
পরবর্তী ক্ষেত্রে রাজ্যের মন্ত্রী জাকির হোসেনের উপর বোমাবাজি ও হামলার তদন্তে নামে তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি। কয়েকদিনের মধ্যেই ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছিল এক বাংলাদেশিকে। জানা গিয়েছে যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে সে স্টেশন চত্বরে হকার ছিল। ধৃতের নাম শেখ নাসিম। তবে এই বিস্ফোরণের ঘটনায় তার একার হাত আছে কিনা সে ব্যাপারে এখনো সন্দেহ রয়ে গিয়েছে। এবার এই ঘটনার তদন্তভার NIA নেওয়াও আরও কিছু বিস্ফোরক তথ্য সামনে উঠে আসবে বলেই অনুমান অধিকাংশের। উল্লেখ্য, যেদিন এই বোমাবাজির ঘটনা হয় সেদিন স্টেশন চত্বরে একটি কালো ব্যাগ পড়েছিল। সেই ব্যাগ সরাতে গিয়ে এই বোমা ফেটে যায়। পরবর্তী সময়ে অনুমান করা হয় যে, রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল। এই ঘটনায় মন্ত্রীসহ তাঁর ২৭ জন অনুগামী গুরুতর আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: অর্ধেক নারী, অর্ধেক পুরুষ! এমনই বিরল পাখি উড়ছে আকাশে
শেখ নাসিমকে নিয়ে গোয়েন্দাদের অনুমান ছিল, বোমা বিস্ফোরণের কয়েক দিন আগে থেকে স্টেশন চত্বরে ঘুরে বেড়াচ্ছিল ওই হকার। ঘুরে বেড়ানোর ছকে আদতে স্টেশনে নিরাপত্তা এবং বিস্ফোরণ ঘটানোর পুঙ্খানুপুঙ্খ পরিকল্পনা করছিল সে। এখন একটাই প্রশ্ন সকলের মনে, শেখ নাসিম নিজে এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে নাকি তার সঙ্গে আরো কয়েকজন জড়িত। এমনকি কোনও জঙ্গি সংগঠনের জড়িত থাকার কথা ফেলে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে খুব শীঘ্রই এই ব্যাপারে আরও বড় তথ্য হাতে পেতে পারে গোয়েন্দারা, অনুমান করা হচ্ছে।