কলকাতা: বিজেপি’র সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার সভার আগেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার ডায়মন্ড হারবার৷ এদিন তাঁর কনভয় উস্থির শিরাকোল এলাকায় পৌঁছনোর পরই পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে৷ কয়েকশো যুবক হাতে ঝাণ্ডা ও লাঠি নিয়ে জেপি নাড্ডার কনভয় আটকানোর চেষ্টা করে। তাঁর কনভয় লক্ষ্য করে শুরু হয় ইটবৃষ্টি। ইঁটের আঘাতে আহত হন বিজেপি’র নেতা-কর্মীরা৷ পুলিশ ও কার্যকর্তাদের গাড়ির কাঁচ ভেঙে গিয়েছে বলেও খবর মিলেছে৷
আরও পড়ুন- অবস্থার উন্নতি হলেও এখনও সঙ্কটজনক বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, জানাল মেডিক্যাল বোর্ড
বঙ্গ বিজেপি’র সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘ জেপি নাড্ডার কনভয় লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি ঢিল ছোড়া হয়েছে৷ সুস্থ গণতন্ত্রে এটা কাম্য নয়৷ তবে আমাদের সভাপতিও ফিরে যাওয়ার লোক নন৷ বিহার-উত্তর প্রদেশে জঙ্গলরাজ আমরা শেষ করেছি৷ পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলরাজও শেষ করা হবে৷’’ তিনি জানান, ইটের আঘাতে হাতে চোট পেয়েছেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়৷ আহত হয়েছেন মুকুল রায়৷ তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করেও ইঁট ছোড়া হয়েছে বলে তিনি জানান৷ তাঁর এবং মুকুল রায়ের গাড়ি আটকে ধাক্কাধাক্কি করার অভিযোগ উঠেছে৷ জখম হয়েছেন অনুপম হাজরা৷ একাধিক কার্যকর্তা আহত হয়েছেন৷ দিলীপ ঘোষ বলেন, হামলা করেও আমাদের মন ভাঙতে পারবে না৷ তবে ২১ সালের মে মাসে তৃণমূল সরকার আমরা ভেঙে দেব৷ তাঁর কথায়, হাতে প্রাণ নিয়েই লড়াই করছে বিজেপি’র নেতা কর্মীরা৷
গতকাল হেস্টিংসে বিজেপি’র সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার সামনে কালো পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল একদল যুবক৷ পাল্টা আক্রমণে তুমুল উত্তেজনার সৃষ্টি হয়৷ এর নেপথ্যে তৃণমূলের হাত দেখছে বিজেপি৷ কৃষি আইনের বিরোধিতায় এই বিক্ষোভ করা হয়েছে বলে দাবি করে বিক্ষোভকারীরা৷ এই ঘটনায় তৃণমূলের কোনও যোগ নেই বলেই দাবি সাংসদ সৌগত রায়ের৷
আরও পড়ুন- অভিষেক গড়ে নাড্ডার সভার আগেই আক্রান্ত বিজেপি, অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে
কলকাতায় রাজনীতিতে উত্তাপ বাড়তে শুরু করেছে৷ বছর ঘুরলেই বঙ্গ বিধানসভায় হাই ভোল্টেজ নির্বাচন৷ নীলবাড়ি দখলের নীল নকশা তৈরি করা শুরু করে দিয়েছে বিজেপি৷ তারই প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে গতকাল কলকাতায় পৌঁছন বিজেপি’র সর্বভারতীয় সভাপতি জগত প্রকাশ নাড্ডা৷ বুধবার দুপুর ২টোয় হেস্টিংয়ে বিজেপি’র পার্টি অফিসের সামনে এসে দাঁড়ায় নাড্ডার গাড়ি৷ তিনি গাড়ি থেকে নামতেই সেখানে চলে আসে জন ৫০ বিক্ষোভকারী৷ হাতে কালো পতাকা আর মুখে গো ব্যাক স্লোগান৷ মুহূর্তের মধ্যে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে৷ বিক্ষোভকারীদের দিকে তেড়ে যান বিজেপি কর্মীরা৷ দুই শিবিরের সংঘর্ষ থামাতে পুলিশকে নাজেহাল হতে হয়৷
বিজেপি’র অভিযোগ নাড্ডার উপর পরিকল্পিত হামলার পিছনে তৃণমূলের মদত রয়েছে৷ পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের নেতৃত্বেই এই হামলা করা হয়েছে৷ বিদেপি নেতা রাকেশ সিংয়ের দাবি পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের মদতেই এই গণ্ডগোল হয়েছে৷ ঢিল, পাটকেল ছুড়ে জেপি নাড্ডাকে খুনের চেষ্টা করা হয়েছে৷ হেস্টিংস থানায় অভিযোগও দায়ের করেন তিনি৷ ফিরহাদ হাকিল পাল্টা জানান, ওই জায়দায় যে জেপি নাড্ডা আসবেন, তা তিনি জানতেনই না৷ বাইরে অস্থির পরিস্থিতির মধ্যেই পার্টি অফিস উদ্বোধন করেন নাড্ডা৷ ২১-এর নির্বাচনে বিজেপি’র কনট্রোল রুম হতে চলেছে এই পার্টি অফিস৷