কলকাতা: পরীক্ষা দিয়ে সরকারি হাসপাতালে নার্সের চাকরি পেয়েছিলেন তিনি৷ সেই সেই চাকরিই হল কাল৷ চাকরিরত স্ত্রী স্বামীকে ছেড়ে চলে যাবে সেই আশঙ্কায় স্ত্রীর হাত কেটে দিল স্বামী৷ পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামে এই নৃশংস ঘটনাটি ঘটেছে৷ সরকারি নার্সের চাকরি পাওয়ায় কব্জি থেকে স্ত্রীর ডান হাত কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে৷
আরও পড়ুন- জামাই আদরে বরণ ছাত্রীদের, পালন করা হল ‘কন্যাশ্রী ষষ্ঠী’
অভিযোগ, বিচ্ছেদের আশঙ্কাতেই স্বামী এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন৷ শনিবার রাতে কেতুগ্রামের চিনিসপুরে ঘটনাটি ঘটে৷ ঘটনার পর থেকেই পলাতক ওই মহিলার স্বামী শের মহম্মদ শেখ৷ এদিকে এই ঘটনায় কেতুগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷ এই মুহূর্তে ওই মহিলাকে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে ভর্তি করা হয়েছে৷ পরিবার সূত্রে খবর, প্রথম থেকেই মেধাবী ছিলেন রেণু খাতুন৷ তাঁর স্বপ্ন ছিল সেবিকা হওয়ার৷ এ জন্য ট্রেনিংও নেন তিনি৷ দিন কয়েক আগেই তিনি জানতে পারেন নার্সের পরীক্ষায় তিনি সফল হয়েছেন৷ তালিকায় তাঁর নাম উঠেছে৷ এর পরেই তাঁর স্বামীর মনে একটি বদ্ধমূল ধারণা তৈরি হয় যে, স্ত্রী যদি সরকারি চাকরিতে যোগ দেন, তাহলে তাঁকে ছেড়ে চলে যাবেন৷ এমনকী তাঁর বন্ধুরাও তাঁকে সেই কথাই বোঝায়৷ এর পরেই বন্ধুদের সঙ্গেই গোটা ঘটনার পরিকল্পনা করে শের৷
শনিবার গভীর রাতে রেণু যখন ঘুমাচ্ছিলেন, তখন তাঁর মুখে বালিস চাপা দিয়ে তাঁর ডান হাতের কব্জি ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে ফেলেন৷ এর পর তাঁকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ কিন্তু রেণুর হাতের কব্জিটা বাড়িতেই লুকিয়ে রাখে তাঁর স্বামী৷ যাতে চিকিৎসকরা কোনও ভাবেই সেই হাত জোড়া লাগাতে না পারেন৷ শের মহম্মদের মাথায় তখন একটা জিনিসই কাজ করছিল, স্ত্রীর হাত কেটে দেওয়া হলে তিনি আর সরকারি চাকরি পাবেন না৷ যে হাত দিয়ে মানুষের সেবা করবে বলে রেণু নার্সের পরীক্ষা দিয়েছিলেন, সেই হাতই সে কেটে নেবে৷ এই মুহূর্তে রেণুর স্বামী ও তাঁর গোটা পরিবার পলাতক৷ বাড়িতে তালা ঝোলানো হয়েছে৷
রেণুর পরিবার জানিয়েছে, মাঝে মধ্যেই শের মহম্মদ তাঁদের মেয়েকে বলত, পড়াশোনা করছ ঠিক আছে৷ কিন্তু কোনও রকম চাকরি করা যাবে না৷ সেই কথা শোনেনি রেণু৷ সরকারি চাকরি পাওয়ার চরম মাশুল দিতে হল তাঁকে৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>