কলকাতা: সোমবার কৃতী ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জাতীয় শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে ফের সবর হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এদিন নবান্নে তিনি বলেন, ‘‘নতুন এই এডুকেশন পলিসিতে স্থানাধিকার থাকবে না৷ সব যদি তুলে দেওয়া হয়, তবে মেধার ভিত্তিতে ছেলেমেয়েরা যে গর্বিত হয়, তাদের জীবনের শুরুর যে সার্টিফিকেট, এই নিয়ম লাগু হলে তারা গৌরবান্বিত হবে কী করে? যেখানে মানুষের মেধা নিয়ে, যোগ্যতা নিয়ে বিচার হয় না সেই এডুকেশন পলিসি আমরা মানি না৷’’
মুখ্যমন্ত্রী এদিন সভায় তিনি ঐক্যশ্রী ও এডুকেশন ঋণের কথাও তোলেন। বলেন এই বছর ঐক্যশ্রী স্কলারশিপ পেয়েছে ৩৭ লক্ষ ছেলেমেয়ে। সব মিলিয়ে তৃণমূল সরকারের সময়কালে এই সংখ্যা ২ কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে। তফশিলি জাতি ও উপজাতিদের ৮১ লক্ষ ছেলেমেয়েদের স্কলারশিপ দিয়েছে সরকার। এদিন কর্মসংস্থানের কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী। জানান, “আমি তো ছেলেমেয়ে খুঁজে বেড়াই। ট্যালেন্টেড ছেলেমেয়ে খুঁজি। আমি চাই তারা গ্রামীণ কাজকর্ম করুক। ফিল্ড ওয়ার্ক করুক। প্রতি বছর অন্তত ৫০০ ছেলেমেয়ে আমরা নেব৷ যারা বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসে সরকারের সঙ্গে কাজ করবে৷ তারা যদি ২-৩ বছর ইনটার্ন হিসেবে কাজ করতে পারে তবে আগামী বছর সার্ভিসের দিক থেকেও তাদের চাকরিতে সুবিধা হবে।’’
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর দরবারে মা-বাবার বদলির আর্জি ২ কৃতী পড়ুয়ার, সমাধানের আশ্বাস মমতার
ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি এদিন শিক্ষকশিক্ষাদেরও প্রশংসায় ভরিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘‘ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলিও অনেক ভাল করছে। সিবিএসই আইসএসই স্কুলগুলির ছাত্রীদেরও আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি৷ অভিনন্দন জানাচ্ছি৷ কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি৷ তারাও ভাল করে পড়াশোনা শেখায়৷ শিক্ষকদেরও ধন্যবাদ৷ যারা পড়াশোনা শেখাতে চায়, তারা মনে রাখে না আমি ক’ঘণ্টা পড়াব৷ তাদের নেশা আমি ভাল ছেলেমেয়ে তৈরি করব৷ আমরা দুটি জিনিস ভুলি না৷ জন্মভূমি আর মাকে যেমন আমরা ভুলতে পারি না৷ তেমনই স্কুল কলেজের টিচারদেরও আমরা ভুলতে পারি না।’’
এদিনের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা করতে গিয়ে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে৷ পারিবারিক অসঙ্গতির কারণে কোনও পড়ুয়া পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে না পারলে, পড়াশোনা চালিয়ে যেতে না পারলে চিঠি লিখে সে কথা জেলা শাসককে জানাতে পারবেন তাঁরা৷ কোনও পড়ুয়ার পড়াশোনা করার ক্ষেত্রে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, এসপি এবং শিক্ষা দফতরকে তা দেখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, রাজ্য সরকার বা শিক্ষা দফতরের কোনও সাহায্য চাইলে বা পারিবারিক কোনও সাহায্যের প্রয়োজন হলে জেলা শাসককে চিঠি লিখে তা জানাতে হবে৷ জেলা শাসক ও শিক্ষা দফতরের আধিকারিকরা কথা বলে সেই চিঠি নবান্নে পাঠিয়ে দেবেন৷ অর্থাৎ এক চিঠিতেই হবে সমস্যার সমাধান৷