কলকাতা: নিজের জেলায় শিক্ষকরা বদলি হওয়ার সুযোগ পাবেন৷ঘোষণা সত্ত্বেও এখনও তা কার্যকর হনি৷ বদলি ও পদোন্নতি সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধা এখনও ঠিকঠাক পাননি রাজ্যের বহু পুলিশকর্মী৷ আর সেই সমস্যা সমাধানে তৈরি হয়েছে৷ এবার পু্লিশ ও শিক্ষক বদলি সংক্রান্ত আর্জি সরাসরি উঠে নবান্নের সভাঘরে৷ মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকের কৃতী পড়ুয়াদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নিজেদের বাবা ও মায়ে হয়ে বদলি আর্জি জানালেন কৃতী দুই পড়ুয়া৷ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পড়ুয়াদের কাছ থেকে সমস্যা শুনে দ্রুত সমাধানের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর৷
আজ নবান্নের সভাঘরে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন মুখ্যমন্ত্রী৷ ভার্চুয়াল মাধ্যমে সংবর্ধনা দেওয়া হয় মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, জয়েন্ট এন্ট্রান্স, আলিম, ফাজিল এবং হাই-মাদ্রাসা সহ বিভিন্ন পরীক্ষায় আদিবাসী ছাত্রছাত্রী-সহ কৃতী পড়ুয়াদের৷ জেলার কৃতী ছেলেমেয়েদের সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ কিন্তু কথোপকথনের মাঝেই গুরুতর দু’টি আরজি শুনে চটজলদি সমাধান আশ্বাস দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
আজ নবান্নের সভাগৃহ মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে ভার্চুয়াল সভায় অংশ নেন উচ্চমাধ্যমিকে অষ্টম স্থান পাওয়া পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মৌমিতা সামন্ত৷ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলাতে গিয়ে মৌমিতা জানান, ‘‘আমার মায়ের স্কুল পশ্চিম মেদিনীপুরে৷ আড়াই ঘণ্টা ধরে তাঁকে বাস সফর করতে হয়৷’’ এরপর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘শিক্ষকদের জন্য একটি পলিসি তৈরি করা হয়েছে৷ কিন্তু হচ্ছে কী জানো, পূর্ব মেদিনীপুরে যা শিক্ষক আছেন, ধরে নাও, স্কুল আছে ৩ হাজার, সেখানে শিক্ষক আছেন ৫০ হাজার৷ ফলে এটা ফেস বাই ফেস শেষ করা হচ্ছে৷’’ এরপর শিক্ষামন্ত্রী দিকে তাকিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘পার্থবাবু বিষয়টি আগে করে দেবেন৷’’
এরপর আরও এক পড়ুয়া পুলিশ বাবার বদলির জন্য আবেদন জানান৷ পশ্চিম মেদিনীপুরে উচ্চমাধ্যমিকে দশম স্থান অধিকার করা সৌমিতা সামন্ত মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, ‘‘ম্যাডাম আপনার কাছে আমার একটা অনুরোধ আছে৷ আমার বাবা বাসুদেব সামন্ত পুলিশ বিভাগে কাজ করেন৷ পুরুলিয়ায় পোস্টিং৷ আমাদের পড়াশুনার কাজে তেমন সহযোগিতা করতে পারেন না৷ যদি আমার বাবার পোস্টিং এই জেলায় করে দেওয়া যায়, তাহলে খুব ভালো হয়৷’’ জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘দ্বিবেদী, স্বরাষ্ট্রসচিব আছেন৷ দেখে দেবে নিশ্চয়ই৷ দেখে দেবে৷ বাবার কল্যাণে মেয়ের কল্যাণ৷’’
গত বছর সরস্বতী পুজোর প্রাক্কালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, খুব দ্রুত শিক্ষকরা তাঁদের জেলায় বদলি হওয়ার সুযোগ পাবেন৷ এবিষয়েও মন্ত্রিসভার অনুমতিও দেওয়া হয়৷ কিন্তু তা এখনও কার্যকর হয়নি৷ উল্টে এখনও বন্ধ আপস ও সাধারণ বদলি৷ তাতে চূড়ান্ত সমস্যায় পড়েছেন বহু শিক্ষক৷ একই সমস্যা ছিল পুলিশ বিভাগেও৷ পুলিশ দিবসে পুলিশকর্মীদের বদলি ও পদোন্নতি সংক্রান্ত সুযোগ সুবিধা দিতে ইতিমধ্যেই বিশেষ বোর্ড গঠন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ যদিও সেই বোর্ড কাজ শুরু করার আগে এবার বদলি সংক্রান্ত জোড়া আর্জি কৃতী পড়ুয়াদের থেকেও শুনতে হল মুখ্যমন্ত্রীকে৷ শিক্ষক ও পুলিশ বদলি সংক্রান্ত সংস্থা সমস্যা যে কতটা গভীরে, তা আরও উঠে এল নবান্নের সভাঘরে৷