নন্দীগ্রাম: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারীর মেগা দ্বৈরথকে ঘিরে এমনিতেই সরগরম নন্দীগ্রাম। পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ইতিহাসে এই বিধানসভা কেন্দ্রের তাৎপর্য দশ বছর আগেও ছিল অপরিসীম। আর ২০১১ সালের পর আজ আবারও নন্দীগ্রাম দিয়েই নির্ধারিত হতে চলেছে বাংলার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে হাইভোল্টেজ এই কেন্দ্রে দাঁড়িয়েই এদিন বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০০৭ সালে নন্দীগ্রামের মাটিতে যে কলঙ্কিত রাজনীতির ইতিহাস তৈরি হয়েছিল, ১৪ বছর পরেও তার ঘা মিলিয়ে যায়নি। এদিন ভোট প্রচারে গিয়ে সেই ঘা-কেই খানিক উস্কে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। তাঁর দল থেকে বিশ্বাসঘাতকতা করে বিজেপিতে গেছেন নন্দীগ্রামের যেই দুই হেভিওয়েট নেতা বাস্তবে নাকি সেই শুভেন্দু অধিকারী আর শিশির অধিকারীর অনুমতিতেই পুলিশ ঢুকেছিল ২০০৭ সালের নন্দীগ্রামে, এদিন নিজের কেন্দ্র থেকে দলীয় জনসভায় বসে এমনটাই দাবি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর এই বিস্ফোরক অভিযোগ ইতিমধ্যেই রাজ্য রাজনীতিতে শুরু করেছে তোলপাড়। এমনকি, সরব হয়েছে বাম শিবিরও।
আরও পড়ুন- “ভোটের পর সরকার চালাবো দিলীপ ঘোষ আর আমি”, শুভেন্দুর মন্তব্যের পাল্টা দিলেন কুনালও
যদি তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা নন্দীগ্রামের প্রভাবশালী অধিকারী পরিবারের নাড়া কলকাঠিতেই কলঙ্কিত সেই দিনে পুলিশ ঢুকে থাকে নন্দীগ্রামে, তবে আদতে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকারের উপর আসা আরোপ মিথ্যা প্রমাণিত হয়, এদিন তৃণমূল সুপ্রিমোর ঘোষণার পর এমনটাই দাবি উঠেছে লাল শিবিরের তরফ থেকে। সেসময় যাঁরা এই মিথ্যা প্ররোচনায় সায় দিয়ে বাম সরকারের বদনাম করেছিলেন, আজ প্রকাশ্যে তাঁদের ক্ষমা চাওয়া উচিত বলেও দাবি করেছে বামেরা। তৃণমূল বিজেপির দ্বন্দ্ব, আর তার মাঝে বামেদের এই সমালোচনায় উত্তাপ ছড়িয়েছে ভোটমুখী বাংলায়।
উল্লেখ্য, এদিন নন্দীগ্রাম থেকে দলত্যাগী অধিকারী পরিবারের উদ্দেশ্যে কটাক্ষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আসছে, পুলিশের পোশাক পরে অনেকে গুলি চালিয়েছিল। হাওয়াই চটি পরে এসেছিল। এবারেও সেসব কেলেঙ্কারি করছে। এই বাপ-ব্যাটার পারমিশান ছাড়া সেদিন পুলিশ নন্দীগ্রামে ঢুকতে পারত না, আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি।” শুভেন্দুদের বিরোধিতা করতে গিয়ে আদতে নিজের দলকেই আরো বেশি অস্বস্তিতে ফেললেন না তো তৃণমূল নেত্রী? উঠছে প্রশ্ন।