কলকাতা: ১০১, ১০২ ও ১১০ নম্বর ওয়ার্ডে চলছে অবাধ ছাপ্পা ভোট৷ ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডেও বসতে দেওয়া হয়নি এজেন্ট৷ ভোট লুটের প্রতিবাদে সিপিআইএম প্রার্থী এবং সমর্থকরা আজ বাঘাযতীন মোড়ে অবরোধ করেন৷ এইন তিনটি ওয়ার্ডে পুনর্নির্বাচনের দাবিতেও সোচ্চার হন তাঁরা৷ একেবারে রাস্তায় বসে পড়েন বাম প্রার্থীরা৷ পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে বাঘাযতীন ক্রসিংয়ে উপস্থিত রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী৷
আরও পড়ুন- বিজেপি এজেন্ট দিতে না পারলে তৃণমূলের দায় নয়: অভিষেক
এক বাম প্রার্থীর অভিযোগ, ‘‘এখানে পোলিং এজেন্টদের বসতে দেওয়া হচ্ছে না৷ বাইরে থেকে লোক নিয়ে আসা হচ্ছে৷ রাস্তায় বাইক বাহিনী ঘুরছে৷ অটো করে বাইরে থেকে বুথে বুথে অটো করে লোক নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷ আইকার্ড ছাড়াই ভোট দেওয়ানো হয়েছে৷ এভাবে ভোট হতে পারে না৷ এটা কোনও ভোটই নয়৷ ভোটের নামে প্রহসন৷ আমরা পুনর্নির্বাচনের দাবি করছি৷ ১০১, ১০২ ও ১১০ নম্বর ওয়ার্ডের পুনর্নির্বাচন দাবি করা হয়েছে৷ ’’
বাঘাযতীনে রাস্তায় অবরোধে বসা আরও এর প্রার্থী তমশ্রী মণ্ডল বলেন, ‘‘আজ সকাল ৬টার আগে যখন আমাদের এজেন্টরা বুথে যায়, তখন তাঁদের সেখান থেকে তুলে দেওয়া হয়৷ পুলিশকে জানানোর পরেও কোনও পদক্ষেপ করেনি৷ পুলিশের দাবি, কোনও ঘটনা ঘটেনি৷ তৃণমূল যে ভাবে পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে ভোট করছে সাধারণ মানুষের ভোট লুঠ করছে আমরা তাঁর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছি৷ আমরা পুর্নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি৷ সাধারণ মানুষকে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের সুযোগ করে দিতে হবে৷ ’’
অন্যদিকে, উত্তর কলকাতার বড়তলা থানার সামনে সিপিএমের সঙ্গে এক সঙ্গে অবস্থানে বসেন বিজপি ও কংগ্রেস৷ ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের অধিকাংশ বুথে তৃণমূল প্রার্থী মোহনকুমার গুপ্ত রিগিং করছেন বলে অভিযোগ। ভোট লুঠ চলছে অবাধে। অথচ পুলিশ নীরব দর্শক। এই অভিযোগে বেলা ১২টা নাগাদ কর্মী সমর্থকদের নিয়ে বড়তলা থানার সামনে চলে আসেন সিপিএম ও কংগ্রেস প্রার্থী। থানার বাইরে শুরু হয় বাম-কংগ্রেস ও বিজেপি কর্মীদের স্লোগান সাউটিং৷
এক কংগ্রেস কর্মী বলেন, তিনটি দলের প্রার্থী এক জায়গায় এসে একই অভিযোগ করছে৷ বড়তলার ওসি প্রকাশ্য সংবাদমাধ্যমের সামনে বলছেন তিনি নাকি প্রতিটি বুথে সকাল থেকে পাঁচ-থেকে ছয় বার টহল দিয়েছেন৷ অথচ সবকটি বিরোধীরা দল একত্রে অভিযোগ জানাচ্ছে যে, বুথে এজেন্টদের বসতে দেওয়া হচ্ছে না৷ ভোটারদের মারধর করা হচ্ছে৷ এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে অভিযোগের সারবত্তা৷ অপর এক কর্মীর কথায়, পুলিশ বলছে আপনারা এজিন্ট বসিয়ে দিয়ে আসুন৷ কিন্তু মেরে ধরে এজেন্টদের বার করে দেওয়া হচ্ছে৷ আমাদের ঘিরে ফেলা হচ্ছে৷
অন্যদিকে দুই মহিলা এজেন্টকে মারধর ও মুখ ফাটানোর অভিযোগে বেলেঘাটা থানার বাইরে বিক্ষোভ দেখান বাম সমর্থকরা৷ রাজীব বিশ্বাস বলেন, পুলিশ যথাযথ পদক্ষেপ না করলে আমরা ৩৩ নম্বর ওআর্ডের প্রার্থী পদ প্রত্যাহার করতে বাধ্য হব৷ কারণ এখানে গণতন্ত্র লুঠ হচ্ছে৷ এজেন্টরা রক্তাক্ত হচ্ছে৷ তারা বসতে পারছে না৷ বস্তি থেকে ভোটারদের বেরতে দেওয়া হচ্ছে না৷ যার জেরেই ১২টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে মাত্র ২০ শতাংশ৷
আক্রান্ত এক মহিলা এজেন্ট বলেন, ‘‘আমি ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিআইএম প্রার্থীর এজেন্ট হিসাবে ২৬ নম্বর বুথে বসেছিলাম৷ সেখানে সকাল থেকেই ভোট লুঠের চেষ্টা চলছিল৷ আমি তাতে বাধা দিই৷ এর জেরেই শাসকদলের কর্মী ক্ষুব্ধ হয়৷ প্রিসাইডিং অফিসারও কিছু করতে পারেননি৷ এর পরেই ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী চিনু বিশ্বাসকে ডেকে আনা হয়৷ তাঁর সঙ্গে থাকা লোকজন আমাকে মারধর করে৷ অন্যদিকে, বোমাবাজির অভিযোগও উঠেছে পুরভোটে৷ বোমের আঘাতে আহত হন দীপু দাস নামে এক ব্যক্তি৷