কলকাতা: রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের বিরুদ্ধে মুখ খুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টেনে এনেছেন সেই নয়ের দশকের জৈন হাওয়ালা মামলা। দাবি করেছেন যে, বাংলার রাজ্যপাল দুর্নীতিগ্রস্ত এবং তিনি এই মামলার সঙ্গে যুক্ত, তাঁর নাম এই মামলার চার্জশিটে ছিল। যদিও পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যপাল দাবি করেছেন যে, তাঁর নাম চার্জশিটে ছিল না, যাদের নাম ছিল তাঁরা অব্যাহতি পেয়েছে। কিন্তু এই কেলেঙ্কারির যিনি পর্দাফাঁস করেছিলেন সেই বিশিষ্ট সাংবাদিক বিনীত নারায়ণ ফেসবুকে দাবি করেন, নৈতিকতার খাতিরে পদত্যাগ করা উচিত জগদীপ ধনখড়ের। কারণ, জৈনের হিসাব খাতায় তাঁর নামে ৫.২৫ লক্ষ টাকা নেওয়ার কথা লেখা রয়েছে। একইসঙ্গে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানান কারণ তিনি এত বছর পর এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে এনেছেন।
বিশিষ্ট ওই সাংবাদিক জগদীপ ধনকড়ের উদ্দেশে বলেছেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মৌচাকে ঢিল মেরেছেন! নৈতিকতার খাতিরে পদত্যাগ করা উচিত তাঁর। এদিন আবার তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে জানান হয়, গতকাল যে মামলার প্রসঙ্গ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তুলেছিলেন সেই প্রসঙ্গ নিয়ে বিশিষ্ট সাংবাদিক বিনীত নারায়ণ নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে জানিয়েছেন যে, ওই মামলার আদতে কোন ট্রায়াল হয়নি। ৩০ বছর হয়ে যাওয়ার পরেও ওই মামলার এখনো পর্যন্ত কোন নিষ্পত্তি হয়নি। সিবিআই এবং ইডি মামলা করলেও আইনের গোলকধাঁধার মধ্যে পড়ে গিয়ে আদতে এই জৈন হাওয়ালা মামলা নিয়ে কোন পদক্ষেপ হয়নি এত বছরে। এই প্রেক্ষিতে ওই বিশিষ্ট সাংবাদিক বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বলেও জানান শুখেন্দু শেখর রায় কারণ এতদিনেও ভারতের অন্য রাজনৈতিক কোনো ব্যক্তিত্ব এই ব্যাপারে মুখ খোলেননি। সুতরাং এক কথায়, তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদের দাবি রাজ্যপাল গতকাল যা বলেছেন তা পুরোপুরি অসত্য।
আরও পড়ুন- জঙ্গিদের গুলিতে ঝাঁঝরা পুলিশ অফিসার, প্রাণ হারালেন স্ত্রী ও কন্যা
জৈন হাওয়ালা মামলা প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় জানিয়েছেন, ১৯৯০ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত রাজস্ব দফতরের ডেপুটি মিনিস্টার ছিলেন জগদীপ ধনকড় নামের এক ব্যক্তি। সেই ব্যক্তির নাম এই মামলায় জড়িয়ে গিয়েছিল। এবার পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় সেই ব্যক্তি কিনা এর উত্তর তিনি নিজে দিতে পারবেন। গতকাল রাজ্যপাল স্বয়ং দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পূর্ণ ভুল তথ্য দিচ্ছেন। তাঁর মন্তব্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। রাজ্যপাল জানান, যে ঘটনার কথা মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন সেই মামলায় এখনো কেউ দোষী প্রমাণিত হননি। আর এই মামলার চার্জশিটে কখনোই রাজ্যপাল ছিলেন না। রাজ্যপাল স্পষ্ট দাবি করে বলছেন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে অভিযোগ করেছেন তার কোনো সত্যতা নেই। একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো একজন নেতা এই ভাবে সাংবাদিক বৈঠক করে ভয়ঙ্কর অভিযোগ করবেন এটা তিনি কখনোই ভাবেননি।