করুণাময়ীকাণ্ডের প্রতিবাদে সোচ্চার বিদ্বজ্জনেরা, টেট ইস্যুতে পথে নাগরিক সমাজ

করুণাময়ীকাণ্ডের প্রতিবাদে সোচ্চার বিদ্বজ্জনেরা, টেট ইস্যুতে পথে নাগরিক সমাজ

কলকাতা:  মধ্যরাতে পুলিশি সক্রিয়তায় ছত্রভঙ্গ বিক্ষোভকারীরা। পুলিশেি অ্যাকশনে ছেদ পড়ে ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণ নন-ইনক্লুডেড আন্দোলনকারীদের আমরণ অনশনে। ওই রাতে টেনে হিঁচড়ে  তুলে দেওয়া হয়েছিল ২০১৭-র টেট পাশ করা বিক্ষোভকারীদেরও। টেট আন্দোলনকারীদের তুলতে বৃহস্পতিবারের মাঝরাতে সল্টলেকের করুণাময়ীতে পুলিশ যে ভূমিকা নিয়েছিল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ রাতের অন্ধকারে কী ভাবে মহিলাদের আটক করা হল, তা নিয়ে শুরু হয়েছে তরজা৷ এবার সেই ঘটনার প্রতিবাদে পথে নামলেন শহর তথা বাংলার বিদ্বজ্জনরা। সেই মিছিলে পা মেলালেন বাদশা মৈত্র, কবি মন্দাক্রান্ত সেন, শ্রীলেখা মিত্র, দেবজ্যোতি মিশ্র সহ বহু বিশিষ্টরা। মিছিলের অগ্রভাগে দেখা গেল শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার, অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র,  পরিচালক অনীক দত্ত, অভিনেতা দেবদূত ঘোষের মতো ব্যক্তিত্বদের। একইসঙ্গে পা মেলালেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, কংগ্রেস নেতা আবদুল মান্নানের মতো রাজনীতিবিদরাও। কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা ছাড়াই এই প্রতিবাদ মিছিলে হাঁটলেন তাঁরা৷ অ্যাকাডেমির সামনে গিয়ে এই মিছিল থামবে৷ সেখান থেকে পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন- শহরে ডেঙ্গির বলি আরও এক, মৃত্যু ২৪ বছরের যুবকের

এদিন টেট চাকরিপ্রার্থীদের সমর্থনে গান গাইতেও শোনা যায় মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের। রাজ্য সরকারের ভূমিকা এবং পুলিশি অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার তাঁরা৷ কংগ্রেস নেতা আবদুল মান্নান বলেন, “ইতিহাসে অনেক স্বৈরাচারী শাসক সম্পর্কে পড়েছি। তাঁদের বিরুদ্ধেও গণআন্দোলন গণবিক্ষোভ হয়েছে। আজকে পশ্চিমবঙ্গে যা ঘটছে তা ব্যতিক্রমী ঘটনা।” নাম না করেই মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, “টাটাকে নাকি তাড়িয়েছে সিপিএম৷ উনি প্রলাপ করছেন। উনি বলেন সব জানি, শুধু এটাই জানেন না কোথায় টাকা লুকানো আছে।”

শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেন, “অন্যায় অপশাসনের বিরুদ্ধে নাগরিকদের এই মিছিল।” আবার কবি মন্দাক্রান্তা সেন বলেন, “জনমানুষের বিরুদ্ধে অন্যায় চলছে। নির্যাতন নেমে এসেছে। টেট পরীক্ষার্থীদের উপর নারকীয় এবং বর্বর আক্রমণের বিরুদ্ধেই এই বিদ্রোহে নাম লিখিয়েছি আমরা।’’ 

অন্যদিকে, কার্যত চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানিয়ে অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র বলেন, ‘‘যাঁরা অনশন করছিল, তাঁরা বিশাল বড় অপরাধ করে ফেলেছে। কেন অধিকারের কথা বলছে? উনি তো চান না। তাই তাঁদের তুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা কোন জায়গায় এসে পৌঁছেছি সেটা একবার ভাবুন৷ আগামীদিনে যেন এই মন্ত্রিসভা না থাকে৷ আমরা সেটাই আমরা চাই।”

অভিনেতা বাদশা মৈত্রর কথায়, “গোটা রাজ্যজুড়ে যে দুর্নীতি চলছে সেটা দিনের আলোর মতো পরিস্কার। যাঁরা অন্যায় করল, তাঁরাই পুলিশ পাঠিয়ে নায্য প্রার্থীদের রাস্তা থেকে তুলে দিল। এটা হতে পারে না। যাঁদের টাকা দিয়ে চাকরি দেওয়া হল তাঁরা যে স্কুলে পড়াবে সে স্কুলে কারা পড়তে যাবে?”