‘আমি এখনও একটা দলের সক্রিয় সদস্য, নীতি বিসর্জন দেব না’, বললেন শুভেন্দু

মুখ্যমন্ত্রী এখনও আমাকে তাড়াননি, মন্ত্রী রেখেছেন৷ আমিও পদ ছাড়িনি৷ 

রামনগর: বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরের রামগড়ে অনুষ্ঠিত হল সমবায়ীদের ‘মেগা শো’৷ অনেকেই আশা করেছিলেন এই মেগা শো থেকে হয়তে আগামীর ইঙ্গিত দেবেন শুভেন্দু অধিকারী৷ কিন্তু তেমনটা ঘটল না৷ এদিন সমবায় সংগঠনের মঞ্চ থেকে তিনি জানিয়ে দিলেন, এটা সমবায়ীদের মেগা শো৷ রাজনৈতিক সভা নয়৷ ফলে এখান থেকে রাজনীতির কথা বলবেন না তিনি৷ তাঁর কথায়, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী স্থান-কাল-পাত্র, ব্যানার জানে৷’’  

আরও পড়ুন- তুফানগঞ্জে বিজেপি সমর্থককে খুন, ১২ ঘণ্টার বনধ ডাকল দল

এনিদি শুভেন্দু অধিকারী বলেন, সমবায় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে শুধু ঝাড়গ্রাম, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর নয়৷ বাঁকুড়া, হাওড়া ও হুলীর গ্রামীণ অঞ্চলের পাঁচ লক্ষ পরিবারের সঙ্গে আমার যোগাযোগ রয়েছে৷ কো-অপারেটিভ এর হাতেখড়ি হয়েছে ১৯৯৬ সালে কন্টাই কো-অপারেটিভে ভোটে জিতে৷ আমি যে পদগুলিকে আছে প্রত্যোকটি ইলেকটেড, সেলকটেড বা নমিনেটেড নয়৷ 

রাজনীতি নিয়ে সরাসরি কোনও কথা না বললেও এদিন তিনি বলেন, ‘‘আজ ভারতরত্ন প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর জন্মদিন৷ তাঁকে পুষ্পার্ঘ্য দিয়েছে৷ তাই মিডিয়ার লোকজন ভাবছেন আমি দল পরিবর্তন করছি৷ সমবায় মঞ্চ থেকে এগুলো করা যায় না৷ টিআরপি’র জন্য আপনি যা খুশি করতে পারেন৷ আমি এখনও একটি দলের সক্রিয় সদস্য৷ আমি এখনও মন্ত্রিসভার সদস্য৷ মুখ্যমন্ত্রী আমাকে মন্ত্রী রেখেছেন৷ উনিও তাড়াননি৷ আমিও ছাড়িনি৷’’ এদিনের মেগা শো-এর আগে তৃণমূলের মুখপাত্র তথা সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় জানিয়েছিলেন, রাজ্যের মন্ত্রিসভা তো বটেই, দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক কমিটিতেও রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। দলের এক বর্ষীয়ান সাংসদের সঙ্গেও সম্প্রতি কলকাতায় ‘বিশেষ’ বৈঠক হয়েছে তাঁর। সেই বৈঠকেই শুভেন্দু নাকি দলকে জানিয়েছেন, তিনি এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি। তবে কি বরফ গলতে শুরু করেছে৷ দূরত্ব ঘুঁচিয়ে দলেই থাকবেন তিনি? 

শুভেন্দু আরও বলেন, ‘‘রাজনৈতিক কথাবার্তা দলের ভিতরে থেকে, মন্ত্রিসভায় থেকে বলা যায় না৷ আমরা বিদ্যাসাগরের দেশের মানুষ৷ আমরা এতটা অনৈতিক কাজ করি না৷ বহুদলীয় গণতন্ত্রে সময়ে সময়ে রাজনৈতিক মতান্তর বিভেদ হয়৷ বিভেদ থেকে বিচ্ছেদও হয়৷ কিন্তু যতক্ষণ দলে আছি, মন্ত্রিসভায় আছি, যতক্ষণ নিয়ন্ত্রকরা আমাকে ছাড়ায়নি বা আমি নিজে ছাড়িনি, ততক্ষণ এসব মঞ্চে থেকে রাজনীতির কোনও কথা বলা যায় না৷ নীতী আদর্শ বিসর্জন দিয়ে কাজ করার লোক আমরা নই৷’’ 

আরও পড়ুন- মালদহের প্লাস্টিক কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে মৃত পাঁচ, জখম চার কর্মী

ফের ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি বসন্তের কোকিল নই৷ অনেক পুরনো লোক৷ সকলের সঙ্গেই আত্মিক পরিচয় আছে৷ ভোট চাই ভোট দাও, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও এ কথাও বলি না৷ আমি লকডাউনে থাকি, কোভিডে থাকি, নিজেও কোভিড আক্রান্ত হয়েছি৷ আবার আম্পানের ঝড়েও থাকি৷ আম্পানের দিন মনে হচ্ছিল প্রচণ্ড হাওয়ায় উড়িয়ে নিয়ে যাবে৷ তারপর ভাবলাম নন্দীগ্রাম করা লোক তো, ভারী হয়ে গিয়েছি৷ এত সহজে উড়িয়ে নিতে পারবে না৷’’ 

তাঁর কথায়, বিকল্প অর্থনীতিকে জোড়দার করতে হবে৷ সমস্যা যেমন আছে তেমন সমাধানও আছে৷ সকলে একসঙ্গে মিলিত ভাবে লড়াই করতে হবে৷ কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে হবে, বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে৷ মার্চ মাস থেকে শুরু লকডাউন ও তার জেরে সৃষ্ট অর্থনৈতিক বিপর্যয় কাটিয়ে উঠে ফের আর্থিক বিকাশ ঘটাতে হবে৷ নিষ্ক্রীয় সমিতিগুলিকে ফের সক্রিয় করার কথাও উল্লেখ করেন তিনি৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *