কলকাতা: মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লি তলব নিয়ে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা৷ এর আগে ডিসেম্বর মাসে একইভাবে বিবাদে জড়িয়েছিল কেন্দ্র-রাজ্য৷ মাঝে ৫ মাসের বিরতি৷ ফের আইএএস, আইপিএস বদলি নিয়ে শুরু সংঘাত৷
আরও পড়ুন- বলতে গিয়ে ধরে এল গলা, প্রধানমন্ত্রী পা ধরতেও রাজি, অন্য রূপে মমতা!
২০২০-র ডিসেম্বর মাসে দক্ষিণ ২৪ পরগণায় বিজেপি’র সর্বভারতীয় সভাপতি জিপি নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনায় তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৩ আইপিএস অফিসারকে দিল্লিতে তলব করা নিয়ে তুঙ্গে উঠেছিল সংঘাতের রাজনীতি৷ মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে পোস্টিং দেওয়া নিয়েও একই ধরনের বিবাদ দেখা দিয়েছে৷ কিন্তু প্রশ্ন হল কোনও রাজ্য থেকে আইপিএস, আইএএস অফিসারকে দিল্লিতে ডেপুটেশন দেওয়ার নিয়মটা কী?
এ প্রসঙ্গে প্রসার ভারতীয় প্রাক্তন সিইও জহর সরকার বলেন, বদলির ক্ষেত্রে কোনও নিয়ম মানা হয়নি৷ এই বদলি আইন সম্মত ভাবেও হয়নি৷ আবার প্রাক্তন মুখ্য সচিব অর্ধেন্দু সেন বলেন, প্রশাসনের কাজ হতে হবে যুক্তিযুক্ত৷ একটা প্রশাসনিক অর্ডার বার করে তাতে আইনের একটি ধারা যোগ করে দিলেই সেই অর্ডার আইনসিদ্ধ হয়ে যায় না৷ রাজ্য সরকার এখন কোভিড ও দুর্যোগ মোকাবিলায় ব্যস্ত৷ কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার সহমত হয়েছিল যে এই সময় আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনের শীর্ষে থাকা দরকার৷ সে কারণেই আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাকরির মেয়াদ ৩ মাস বাড়ানো হয়েছে৷ এর ৩ দিন পর কেন্দ্রীয় সরকার যদি তাঁকে দিল্লিতে তলব করে, তাহলে বলতেই হয় এটা অযৌক্তিক ও বেআইনি কাজ৷
আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লি তলবের পিছনে যে রাজনীতির অঙ্ক রয়েছে, তা মনে করছেন অবসরপ্রাপ্ত অনেক আইপিএস, আইএএস অফিসারই৷ প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার তুষার তালুকদার বলেন, মুখ্যসচিব প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে৷ তাঁকে নিয়ে এই ধরনের টানাটানি আমার পছন্দ হয়নি৷
আরও পড়ুন- ‘প্রাধানমন্ত্রী পা ধরতে হবে না’, অপমান করছেন, মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ শুভেন্দুর
করোনা পরিস্থিতিতে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাকরির মেয়াদ ৩ মাস বাড়ানোর ক্ষেত্রে সম্মতি দেওয়ার পরেও রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত অনেকেই ভালো চোখে দেখেনি৷ প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার গৌতমমোহন চক্রবর্তী বলেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে আলোচনাক্রমে এগ্রি লিস্ট করা হয়৷ এবং এই এগ্রি লিস্ট থেকেই আফিসারদের ডেপুটেশনে পাঠানো হয়৷ তবে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে অসহমত হলে, কেন্দ্রের নির্দেশই মানতে হবে৷ অন্যদিকে, কোনও অফিসারকে রাজ্য সরকার রিলিজ না করলে তিনি কী ভাবে দিল্লিতে গিয়ে কাজে যোগ দেবেন?
প্রাক্তন অতিরিক্ত মুখ্যসচিব প্রসাদ রঞ্জনের কথায়, এটা শুধু অশোভন নয়৷ আইন বিরুদ্ধও বটে৷