কলকাতা: এসএসসির সচিবকে তীব্র ভর্ৎসনা করল কলকাতা হাইকোর্ট৷ স্কুলে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় ভর্ৎসনা৷ এদিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, আপনাদের উপর আমাদের ভরসা নেই৷ আপনারা কী তদন্ত করবেন আমরা জানি৷ রোজই কিছু না কিছু অনিয়ম সামনে আসছে৷ এই মামলায় সিবিআই-কে তদন্ত করতে বলব৷ সিআইএসএফ-কে বলব আপনাদের অফিস দখল নিতে৷ পুরো কমিশন বরখাস্ত করে দেব৷ নিয়োগ নিয়ে এই দুর্নীতি চলতে পারে না৷
আরও পড়ুন- তল্লাশির নামে মহিলাদের গোপনাঙ্গে হাত দেয় BSF, উদয়ন মন্তব্যে বিতর্ক
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, সেন্ট্রাল স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির জন্য যে অতিরিক্ত সময় চাওয়া হয়েছিল, আদালতের পক্ষে সেই সময় দেওয়া সম্ভব নয়৷ আদালতের আশঙ্কা, তদন্তের আড়ালে অন্য কিছু হচ্ছে৷ আজ বিচারপতি স্পষ্ট বলেন, এসএসসি’র উপর আর তাঁদের কোনও ভরসা নেই৷ কী তদন্ত হবে তা তিনি জানেন৷ প্রতি দিনই কিছু না কিছু অনিয়মের খবর আসছে৷ এটা হতে পারে না৷ এই প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, সিবিআই-কে বলবেন গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে৷ পাশাপাশি সিআইএসএফ দিয়ে এসএসসি’র দফতরের দখল নেওয়ার কথাও বলেন তিনি৷ যাতে কম্পিউটার বা অন্য কোনও সামগ্রী নিয়ে কেউ সেখান থেকে বেরতে না পারেন৷ সিআইএসএফ সেটা নিশ্চিত করবে৷ বিতারপতি বলেন, এই দুর্নীতির সঙ্গে কারা কারা জড়িত রয়েছেন তা খুঁজে বার করতে হবে৷ এর জন্য কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে গোটা অফিসের দখল নিতে হবে৷
এদিন রাজ্যের তরফে বলা হয়েছিল, আরও কিছু সময় দেওয়া হোক৷ উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিশেষ কমিটি গঠন করে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে৷ কিন্তু রাজ্যের এই আবেদন মানা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়৷ দুপুর ৩টে পর্যন্ত কমিশনকে চূডান্ত সময় দেওয়া হয়েছে৷ যে যে নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছে সেই নিয়োগের চিঠি এসএসসি’র আঞ্চলিক অফিস থেকে দেওয়া হয়েছিল কিনা, দেওয়া হলে কোন অফিস থেকে কোন প্রেক্ষিতে দেওয়া হয়েছিল সে বিষয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে এসএসসি-কে৷ এর পরেই পরবর্তী নির্দেশ দেবে হাইকোর্ট৷
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে রাজ্যের স্কুলগুলিতে চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ শরু হয়৷ ২০১৯ পর্যন্ত সেই নিয়োগ চলে৷ অভিযোগ, নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরনোর পরেও বহু লোক নিয়োগ করা হয়েছে৷ এই দুর্নীতির ঘটনাতেই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়৷