কলকাতা: বিচারপতিদের নিয়োগ নিয়ে কেন্দ্রের ভূমিকার সমালোচনা করতে দেখা যায় রাজ্যকে। বারবার এই ইস্যুতে প্রশ্ন তোলে তারা। কিন্তু নিজের রাজ্যে বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্যের উৎসাহ দেখা যায় না! এই অনীহা কেন? এবার প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ। তবে শুধু প্রশ্ন তুলেই ক্ষান্ত থাকেনি তারা, রাজ্যের থেকে তার উত্তরও চাওয়া হয়েছে। আর এই বিষয়ে জানাতে কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে সময় পর্যন্ত বেঁধে দিয়েছে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ।
আরও পড়ুন- শব্দ দূষণ নিয়ে কী পদক্ষেপ? রাজ্যের কাছে উত্তর চাইল হাইকোর্ট
বিষয় হল, স্টেট অ্যাডমিনি্ট্রেটিভ ট্রাই্যুনাল বা স্যাটের চেয়ারম্যান অবসর গ্রহণ করার পর থেকে আজও এই চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ হয়নি। যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ মামলা শুনানি করা সম্ভব হচ্ছে না বলে অভিযোগ। আসলে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের কর্মক্ষেত্রে সুবিধা-অসুবিধে সংক্রান্ত যাবতীয় মামলার সুরাহা পাওয়া যায় স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালে। কিন্তু এখানে কোনও ডিভিশন বেঞ্চ নেই। তাই সরকারি কর্মচারীদের নিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় মামলার শুনানিতে বাধা আসছে। যে কারণে মামলাকারী জাহাঙ্গীর আলী সহ বেশ কয়েকজন কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। জানা গিয়েছে, রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়কে এই মামলায় তলব করা হয়েছিল। রাজ্য সরকারের ভূমিকা জানতে চেয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ। কিন্তু এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কোনও সদত্তুর পাওয়া যায়নি।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের গলায় রবীন্দ্রনাথের কবিতা! Justice Gangopadhyay recites Tagore’s poem” width=”560″>
বৃহস্পতিবার বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি পর্বে মামলাকারী জাহাঙ্গীর আলীর সহ অন্যান্যদের পক্ষের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী জানান, মামলাকারীরা যোগ্য প্রার্থী হওয়া সত্বেও তাদের আবেদন দীর্ঘদিন শুনানি হচ্ছে না, শুধুমাত্র স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রে ট্রাইব্যুনালে কোনও চেয়ারম্যান না থাকার কারণে। পাশাপাশি তিনি এও জানান, বিচারপ্রার্থীরাই দিনের পর দিন বিচার থেকে বঞ্চিত। এই ইস্যুতেই রাজ্যের কাছে উত্তর চেয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আগামীকাল এই মামলার পরবর্তী শুনানি। শুক্রবার সকালেই কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্টার জেনারেলকে নির্দেশ মতো রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
আরও পড়ুন- ব্যঙ্গচিত্র মামলায় ১১ বছর পর ‘মুক্তি’, ‘গণতন্ত্রপ্রিয় নাগরিকের জয়’ বললেন অম্বিকেশ
উল্লেখ্য, ওয়েস্ট বেঙ্গল কনস্টেবল পদে নিয়োগের জন্য ২০১৮ সালে রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেখানে শূন্যপদ ৫ হাজার ৭০২। সিভিক ভলেনটিয়ার এবং এনভিএফ (হোম গার্ড)- র জন্য সংরক্ষিত আসন বরাদ্দ ছিল। কিন্ত এই নিয়োগের ক্ষেত্রে সংরক্ষণ নীতিকে মান্যতা না দিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু হয় বলে অভিযোগ ওঠে। পরবর্তী সময়ে ২০১৯ সালে নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে স্টেট অ্যাডমিনি্ট্রেটিভ ট্রাই্যুনালে (SAT) মামলা দায়ের হয়। স্যাটে মামলা চলাকালীন বার বার পক্ষে বিপক্ষে হলফনামার নির্দেশ প্রেক্ষিতে শুনানি বিলম্ব হয়ে যায়। এরই মধ্যে ২০২২সালের জুলাই মাসে স্যাটের চেয়ারম্যান কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি সৌমিত্র পাল অবসর গ্রহণ করেন।