কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে বেতন দানকে কেন্দ্র করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে। আমফান ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সাহায্যে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত নেয় যে প্রত্যেক অধ্যাপকের একদিনের বেতন মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে দান করা হবে। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সেই মামলার প্রেক্ষিতে এমন পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাইকোর্টের।
আদালত স্পষ্ট জানাচ্ছে যে, জোর করে যদি কারোর বেতন কেটে নেওয়া হয় এবং তা মুখ্যমন্ত্রীর তহবিলে দান করা হয় তাহলে তা বেআইনি হবে। কারোর ইচ্ছার বিরুদ্ধে বেতন কাটা বেআইনি বলেই পর্যবেক্ষণ আদালতের। কলকাতা হাইকোর্টের এই পর্যবেক্ষণে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের মুখ পুড়ল বলেই মনে করা হচ্ছে। কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করা ওই অধ্যাপকের বক্তব্য ছিল, তার ইচ্ছা বা অনিচ্ছার কথা জানতে না চেয়েই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার এক দিনের বেতন কেটে নিয়েছে। এই অভিযোগ তুলে তিনি কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন যার প্রেক্ষিতে বিচারপতি অমৃতা সিনহার পর্যবেক্ষণ, কেউ নিজের ইচ্ছায় অনুদান দেন, ব্যাপারটি পুরোটাই ইচ্ছার উপরে নির্ভর করে। তাই জোর করে বেতন কেটে কখনো অনুদান দেওয়া যায় না। সেই প্রেক্ষিতেই একদিনের বেতন কেটে নেওয়া অনৈতিক এবং বে-আইনি। তিনি আরো জানিয়েছেন, উদ্দেশ্য ভালো হলেও জোর করে কারোর বেতন কাটা যায় না। এই পুরো ব্যাপারটাই ব্যক্তির নিজস্ব ইচ্ছার ওপরে নির্ভর করে।
আরও পড়ুন- উদ্বেগ বাড়ছে রাজ্যে, করোনা গ্রাফে স্বস্তি মিলছে না
তবে এটাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে বিষয়টি আদতে বেআইনি হলেও ত্রাণ তহবিলে জমা পড়ে যাওয়া টাকা ফেরত পাবেন না ঐ অধ্যাপক। একবার যখন ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য গঠন হওয়ার ত্রাণ তহবিলে টাকা জমা পড়ে গেছে তাই সেখান থেকে সেই টাকা ফেরত দেওয়া সম্ভব নয়। তাই আদালতে নৈতিক জয় হলেও নিজের একদিনের বেতন আর ফেরত পাবেন না বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।