কলকাতা: হাইভোল্টেজ নারদ মামলায় অবশেষে ৪ নেতামন্ত্রীর অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করল কলকাতা হাইকোর্ট৷ সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খাওয়ার পর কলকাতা হাইকোর্টেই চলছিল নারদ মামলার শুনানি৷ পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে চলছিল নারদ মমলা৷ এই মামলায় শুক্রবার ৪ অভিযুক্ত ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়কে অন্তর্বর্তী জামিনের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ৷
আরও পড়ুন- ত্রাণ নিয়ে কোনও বঞ্চনা নয়, হিঙ্গলগঞ্জে প্রশাসনিক কর্তাদের সাফ নির্দেশ মমতার
সিবিআই এই চার নেতামন্ত্রীকে গ্রেফতার করার পর সিবিআই-এর নিম্ন আদালত তাঁদের জামিন দিয়েছিল৷ কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত বিচারপতি রাজীব জিন্দলের ডিভিশন বেঞ্চ জামিনের উপর স্থগিতাদেশ জারি করে৷ নারদ মামলার শুনানি শুরু হয় কলকাতা হাইকোর্টে৷ নারদ মামলা অন্য রাজ্যে স্থানান্তর করার আর্জি জানায় সিবিআই৷ প্রভাবশালীর তত্বও খাড়া করা হয়৷ পরে সুপ্রিম কোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করে সিবিআই৷ কিন্তু সেখান সুবিধা করতে পারেনি তারা৷ মামলা প্রত্যাহার করে নেয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা৷ মামলা ফিরে আসে পাঁচ সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চে৷ আজ চার নেতামন্ত্রীর অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করা হল৷ ২ লাখ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন মঞ্জুর করে কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ৷
শুরু থেকেই সিবিআই এই জামিনের প্রবল বিরোধিতা করেছিল৷ অভিযুক্তদের জেল হেফাজতে রাখার পক্ষে ছিল সিবিআই৷ কিন্তু তাঁদের জেলের বদলে গৃহবন্দি থাকার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট৷ আজ অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করা হয়৷ এদিন শুনানি শুরু হওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জানান, শর্ত সাপেক্ষে এই চার নেতাকে জামিন দেওয়া যায় কিনা, সে বিষয়ে ভাবছে আদালত৷ এই বিষয়ে সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতার মতামত জানতে চায় পাঁচ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ৷ এর পরেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, অনেক দিন এই মামলা চলতে পারে৷ তত দিন পর্যন্ত এই চার নেতামন্ত্রীকে অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া যেতে পারে৷ চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পর প্রয়োজনে জামিন খারিজ করা যেতে পারে৷ ভারপ্রাপ্ত বিচারপতি সলিসিটার জেনারেলকে আরও বলেন, জামিন দেওয়া অর্থ এই মামলাকে অন্ধকারে পাঠিয়ে দেওয়া নয়৷ মামলা একই ভাবে চলবে৷
প্রভাবশালী তত্ত্বে অন্তর্বর্তী জামিনের বিরোধিতা করেছিলেন তুষার মেহতা৷ কিন্তু তাতে মান্যতা দেয়নি আদালত৷ এর পরেই তুষার মেহতার আবেদন, জামিন দেওয়া হলেও এই চার নেতা যেন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি না হয়৷ অন্যদিকে বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় বলেন, এই নেতারা মানুষের পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত৷ ২০১৭ সালে যখন মামলা শুরু হয়েছিল, তখন তাঁদের গ্রেফতার করা হয়নি৷ তাঁরা সেই সময় যতটা প্রভাবশালী ছিলেন, এখনও তাই আছেন৷ তাহলে এখন কেন গ্রেফতার হবে? এর পরেই আলোচনা সাপেক্ষে ৪ নেতা মন্ত্রীর অন্তর্বর্তী জামিনের নির্দেশ দেওয়া হয়৷