উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে হাই কোর্টে ধাক্কা রাজ্যের, আদালত বলল, পুনর্নিয়োগ বেআইনি

কলকাতা: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্ট সাফ জানিয়েছিল, নিয়োগ প্রক্রিয়া অবৈধ৷ এবার কলকাতা হাই কোর্ট জানিয়ে দিল, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্যের নিয়োগ বা পুনর্নিয়োগের ক্ষমতা নেই রাজ্যের। মঙ্গলবার এই রায় দেয় প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ৷ হাই কোর্টের নির্দেশ, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্যদের নিয়োগ করার ক্ষমতা একমাত্র রয়েছে আচার্যের। উপাচার্য নিয়োগের কোনও ক্ষমতা রাজ্য সরকারের নেই। পাশাপাশি, রাজ্যের নিয়োগ করা সকল উপাচার্যকে পদ থেকে অপসারণ করার নির্দেশও দিয়েছে উচ্চ আদালত৷ এদিন আদালত সাফ জানায়, যাঁদের মেয়াদ ফুরনোর পর সরকার নতুন করে মেয়াদ বাড়িয়েছিল, তা বাতিল করা হল। এই নির্দেশ মেনেই রাজ্যের ২৯ জন উপাচার্যকে অপসারণ করা হবে৷
আরও পড়ুন- 'এই পার্থদাকে আমি চিনতাম না,' নিয়োগ দুর্নীতিকে প্রাক্তন সতীর্থকে নিয়ে বিস্ফোরক ফিরহাদ
তবে এমনটা যে ঘটতে চলেছে তা নিয়ে সংশয় ছিল না বললেই চলে৷ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে আলোচনার পর শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছিলেন, রাজ্য সরকার এই সমস্ত উপাচার্যকে ইস্তফা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। তাঁরা তেমনটাই করবেন৷ এর পর ইউনিভার্সিটি গ্রান্ট কমিশন বা ইউজিসি-র নিয়ম মেনে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করা হবে। রাজ্যপাল এ ব্যাপারে সহমত পোষন করে শিক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করেন৷ তিনি বলেন, শিক্ষাঙ্গনে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনাটা জরুরি।
প্রশাসনিক আধিকারিকদের একাংশের মতে, আদালতের রায়ে মেনে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের ২০১৮ সালের গাইডলাইন অনুযায়ী যাঁদের নিয়োগ হয়নি, তাঁদের সকলেরই নিয়োগ ‘অবৈধ’ হয়ে গেল। অর্থাৎ তাঁদের সকলেরই চাকরি গেল! তবে অপর এক একাংশের বক্তব্য, আদালতের রায়ের সম্পূর্ণ বয়ান না-দেখা পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনো উচিত নয়।
জগদীপ ধনকড়ের জমানায় উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সচিবালয় ও রাজ্যপালের মধ্যে সংঘাত বেঁধেছিল। রাজভবনকে উপেক্ষা করেই উপাচার্য নিয়োগ করতে গিয়েই সমস্যায় পড়েছিল সরকার। আজকের এই রায়ের পরে আচার্য তথা রাজ্যপাল উপাচার্যদের অন্তর্বর্তীকালীন যে নিয়োগ করেছিলেন, তা-ও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ল কি না, তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে৷