Aajbikel

মেরেকেটে দু-আড়াই হাজার পেমেন্ট! লোহার কারবারি-কাঠ মিস্ত্রিকে ধরে পরিচালকদের নজরে এসেছিলেন হৈমন্তী

 | 
haimanti

কলকাতা:  খুব সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে৷ কেরিয়ার শুরু করেন মডেলিং দিয়ে৷ করেছেন অভিনয়ও৷ হঠাৎ করেই নিয়োগ দুর্নীতি চক্রে নাম জড়িয়ে ফোকাস কাড়লেন হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়৷ তিনি নিয়োগ দুর্নীতির সাক্ষী গোপাল দলপতির দ্বিতীয় স্ত্রী৷ বৃহস্পতিবার আদালত থেকে বেরিয়ে জেল হেফাজতে ফেরার পথেই হৈমন্তীর নাম প্রকাশ্যে আনেন হুগলি জেলার যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ। আর রাতারাতি লাইমলাইট কেড়ে নেন টলিপাড়ার এই ‘স্ট্রাগলিং অ্যাক্টর’। 

আরও পড়ুন- হাওড়ার মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে, কী ভাবে হৈমন্তীর ওপর নজর পড়ল গোপাল দলপতির


কুন্তুলের মুখে হৈমন্তীর নাম উঠে আসার পরই তদন্ত শুরু করেন কেন্দ্রীয় সংস্থার অফিসাররা৷ তাঁরা জানতে পারেন, হৈমন্তীর সঙ্গে টলিউড যোগসূত্র রয়েছে৷ মডেলিংয়ের মাধ্যমে কেরিয়ার শুরু হৈমন্তী সিনেমাতেও কাজ করেছেন৷ সমীরকুমার পণ্ডিত নামে এক ব্যক্তি হৈমন্তীর সিনেমাতে বিনিয়োগ করেছিলেন বলে জানা গিয়েছে৷ ওই ব্যক্তি হৈমন্তীর পরিচিত বলেই দাবি করেছেন পরিচালক শ্যামল বোস। 


সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা হৈমন্তীর টলিগঞ্জের ফ্ল্যাটে গিয়ে জানতে পারেন, এখানেই গোপাল দলপতির সঙ্গে থাকতেন হৈমন্তী৷ ফ্ল্যাটের বাইরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছিল বেশ কিছু জঞ্জাল। সেখান থেকেই উদ্ধার হয় একটি স্ক্রিপ্ট৷ খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেটি ‘অচেনা উত্তম’ নামে একটি সিনেমার স্ক্রিপ্ট। ওই ছবিতে নার্সের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন হৈমন্তী। কিন্তু ওই সিনেমাকে ঘিরে কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছিল। পরিচালক অতনু বোসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “এটা পুরোটাই বম্বের প্রোডাকশন। ওদের কারোর ইনভেস্টমেন্ট লাগেই না। আমার বাড়িতে সিরাজ বলে একজন কাঠের মিস্ত্রি কাজ করতেন, সেই আমাকে বারবার এই মেয়েটার কথা বলেন। আমার একটা নার্সের চরিত্রের প্রয়োজন ছিল। মেয়েটা একদিনই কাজ করেছিল। এর পরেই তাঁরা অন্য লোক নিয়ে হোটেলে পৌঁছে যায়। ওকে অফ করে দিই। আমার কাছ থেকে দুই-আড়াই হাজার টাকা পেমেন্ট পেয়েছিল। ওকে দিয়ে ডাবিং পর্যন্ত করাইনি আমি। ডাকিইনি আর।”

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় অভিনীত ‘জাল’ নামক একটি ছবিতেও অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছিলেন হৈমন্তী। সেই ছবির পরিচালক শ্যামল বোস বলেন, “হৈমন্তীর পরিচিত সমীরকুমার পণ্ডিত এই ছবিতে টাকা ঢেলেছিল৷ ওই নিয়ে এসেছিল তাঁকে। ওঁর বোধহয় হাওড়ায় লোহার কারবার রয়েছে। ওই হায়ার করেছিল।” এছাড়াও ‘আনটোল্ড লাভ’ নামে আরও একটি ছবির কথা জাানা গিয়েছে৷ ওই ছবির পরিচালক প্রীতম মুখোপাধ্যায়। সেখানেও একটা ছোট্ট চরিত্রে অভিনয় করার কথা ছিল হৈমন্তীর।

মডেলিং, অভিনেত্রী হিসেবে টলিউডে খুব ধীরে ধীরে মুখ চেনা হচ্ছিল হৈমন্তীর। বছর আটেক আগে গোপাল দলপতির সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। তারপর ঘনিষ্ঠতা, প্রেম এবং বিয়ে। হৈমন্তী ছিলেন গোপালের দ্বিতীয় স্ত্রী৷ বিয়ের পর তাঁর কথাতেই নিজের নাম বদলে আরমান গঙ্গোপাধ্যায় হন গোপাল দলপতি। দীর্ধদিন তাঁরা টালিগঞ্জের ফ্ল্যাটে থাকত৷ তবে এখন আর সেখানে কেউই আসে না৷ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত কুন্তল ঘোষ, তাপস মণ্ডলদের থেকে গোপাল দলপতির নাম উঠে আসে  সিবিআই-এর হাতে। তবে গোপালের দাবি, তাঁর সামনে টাকাপয়সার লেনদেন হলেও তিনি কোনও টাকা নেননি।

Around The Web

Trending News

You May like