কলকাতা: হাইভোল্টেজ নারদ মামলার শুনানি ছিল বুধবার৷ কিন্তু দীর্ঘ সওয়াল জবাবের পরও আজ ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ভাগ্য নির্ধারিত হল না৷ তাই আগামীকাল পর্যন্ত জেল হেফাজতেই থাকতে হবে চার হেভিওয়েট নেতাকে৷ বৃহস্পতিবার দুপুর ২টোর পর হবে পরবর্তী শুনানি৷
আরও পড়ুন- নারদ কাণ্ডে সিবিআই নজরে তৃণমূল সাংসদরাও! কী পদক্ষেপ হবে তাদের
এদিন একাধিক বিষয় নিয়ে সওয়াল জবাব হয়েছে৷ এর মধ্যে সিবিআই পক্ষের আইনজীবী তুষার মেহতার বক্তব্য, এই চার অভিযুক্ত অত্যন্ত প্রভাবশালী৷ সোমবার ইচ্ছাকৃতভাবে আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটানো হয়েছিল৷ চার জনের মেডিক্যাল করানো যায়নি৷ এর উপর আইনমন্ত্রী নিজে নিম্ন আদালতে উপস্থিত থেকে মামলা প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন৷ সিবিআই আধিকারিকদের কেস ডায়েরি পেশ করতে বাধা দেওয়া হয়েছে৷ তদন্তকারীদের উপর চাপ সৃষ্টি করার কৌশল নেওয়া হয়েছিল৷ তিনি আরও বলেন, তদন্তের স্বার্থেই সিবিআই মদন মিত্র, শোভন চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে নিজাম প্যালেসে নিয়ে গিয়েছিল৷ কিন্তু সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গিয়ে ধরনা দেন৷ ‘আমাকে গ্রেফতার করুন’ বলে সিবিআই অফিসারদের চাপ দেন৷ দেশের ইতিহাসে এটা বিরলতম ঘটনা৷ তুষার মেহতার কথায়, যেভাবে নিজাম প্যালেসের সামনে জমায়েত হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে ধরনা দিয়েছেন, তাতে এ রাজ্যে নারদ মামলা সুরক্ষিত নয়৷ সিবিআই একটি দায়িত্বপূর্ণ নিরপেক্ষ তদন্তকারী সংস্থা। তাদের কাজে যে ভাবে বাধা দেওয়া হয়েছে তাতে তদন্তকারী আধিকারিকরা এরাজ্যে সুরক্ষিত নয়। তাই আমরা চাইছি এরাজ্যে বাইরে মামলা নিয়ে যেতে৷
অন্যদিকে, আদালত এদিন জানতে চায়, এই চার নেতাকে আগেও জেরা করা হয়েছে৷ এই চার নেতা অসহযোগিতা করেছেন এমন উদাহরণ আছে কি? করোনাকালে এদের শুধু শুধু জেলে ফেলে রাখার কোনও প্রয়োজন আছে কি? সিবিআই কৌশলে চার অভিযুক্তকে জেলে ঢোকাতে চাইছে বলে পাল্টা দাবি করেন অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি৷ তবে এদিন মুখ্যমন্ত্রীর অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন তোলে আদালত৷ বিক্ষোভ চলাকালীন নেতারা কী ভূমিকা পালন করছিলেন, তাও জানতে চাওয়া হয়৷ এদিন আদালতে মুকুল-শুভেন্দুর নামেও ওঠে৷ চার্জশিটে নাম থাকা সত্বেও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলেও আদালতকে জানানো হয়৷
আরও পড়ুন- হেভিওয়েটদের গ্রেফতারি বেআইনি! পাল্টা পদক্ষেপের ভাবনা বিধানসভার
তবে যে দুটি বিষয়ে আজ মূলত শুনানি ছিল, সেই দুটি বিষয়ই অমীমাংসিত৷ অর্থাৎ চার নেতার জামিন নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছয়নি আদালত৷ এছাড়া মামলা ভিন রাজ্যে সরানো হবে কিনা, সেই বিষয়েও কোনও সিদ্ধান্ত আজ নেয়নি কলকাতা হাইকোর্ট৷