কলকাতা: ২০১৮ সালের নভেম্বর৷ প্রেমের জোয়ারে ভেসে পদ ছাড়লেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়৷ মুখ্যমন্ত্রীর সাফ নির্দেশ ছিল, হয় পদ, নয় প্রেম৷ কলকাতার মেয়রের মতো সম্মানীয় পদ ছেড়ে প্রেমকেই বেছে নেন শোভন৷ যে আসন একদা অলঙ্কৃত করেছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু৷ সেই আসন পরকীয়ায় কালিমালিপ্ত করেন তিনি৷ সকলে এক যোগে তাঁকে ধিক্কার জানায়৷ এই সঙ্কটকালে মুখ্যমন্ত্রীর ক্রাইসিস ম্যানেজ করলেন তাঁর বিশ্বস্ত ববি৷ অন্ধকার পর্ব কাটিয়ে ফের স্বমহিমায় ফিরল কলকাতা পুরসভা৷ এর পর থেকে আপদে বিপদে সর্বদা মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে পাশে পেয়েছে শহরবাসী৷ কখনও ‘হ্যালো ফিরহাদ হাকিম বলছি..’, কখনও দুর্যোগের দিনে কন্ট্রোলরুম থেকে আগলেছেন তাঁর শহরের মানুষকে৷ তাই বিপুল ভোটে লালবাড়ি দখল নেওয়া পর সেই ববিতেই আস্থা রাখলেন তৃণমূল নেত্রী৷
আরও পড়ুন- নামেই ছিল সিসিটিভি! দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ পুলিশ, পুরভোট মামলায় সওয়াল বিরোধীদের
মুখ্যমন্ত্রীর বিশ্বস্ত যোদ্ধা ববি হাকিম বরাবরই পার্টি লাইন ধরে হেঁটেছেন৷ অতিবড় সমালোচকেরাও তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলার আগে দু’বার ভাবেন৷ তিনি কলকাতার ফার্স্ট সিটিজেন৷ তাঁকে দল যখনই যে দায়িত্ব দিয়েছে, তিনি তাতে সফল ভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন৷ এহেন ববিতে মুখ্যমন্ত্রী যে ফের আস্থা রাখবেন, তা বলাই বাহুল্য৷ পুরভোটে জয়ের গন্ধ পেতেই ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন, ‘মানুষ যত বেশি ভরসা দেখিয়েছেন, আমাদের দায়িত্ব তত বেশি বেড়ে গিয়েছে।’ আজ বৃহস্পতিবাদ মহারাষ্ট্র সদনে মেয়র পদে তাঁর নাম সর্বসমর্থনে গৃহীত হওয়ার পরেই ‘মহানাগরিক ফিরহাদ’ বলেন, ‘ভোটের আগে দেওয়া প্রত্যেকটি প্রতিশ্রুতি পালনই আমার প্রথম লক্ষ্য হবে।’
তবে ববি হাকিমের নামের সঙ্গে বিতর্কও ওতোপ্রতোভাবে জড়িয়ে রয়েছে৷ নারদ কাণ্ডে সিবিআই-এর হাতে গ্রেফতার হয়ে জেলে যেতে হয়েছে তাঁকে৷ সেই সময় কলকাতা লড়ছে কোভিডের সঙ্গে৷ চোখে জল নিয়ে তিনি বলে উঠেছিলেন, ‘‘কলকাতার মানুকে বাঁচাতে দিল না। করোনা পরিস্থিতি সামলানোর দায়িত্ব আমার উপরেই দেওয়া হয়েছিল।’’ সেই সময় তাঁর সেই চোখের জল বহু মানুষের মন ছুঁয়েছিল৷ এদিন আরও একবার কলকাতার মেয়র হিসাবে তাঁর নাম মনোনিত হওয়ার পরেই তাঁকে অভিনন্দন জানান শহরের মানুষ৷ আগামী দিনে তিনি শহর কলকাতার জন্য কী কী পদক্ষেপ করবেন, সেটাই লক্ষ্যনীয়৷