কলকাতা: গত ২২ জুন কসবার ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডে একটি ভ্যাকসিন ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছিল৷ তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ, রূপান্তরকামী, বিশেষভাবে সক্ষম কিছু বাচ্চা ও দুঃস্থদের সেখানে টিকা দেওয়ার আয়োজন করা হয়। ওই ক্যাম্পে উপস্থিত ছিলেন মিমিও। সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে সেখান থেকে ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজও নেন যাদবপুরের তৃণমূল সাংসদ। এর পরেই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসে। জানা যায়, এই টিকাকরণ কেন্দ্রটি কলকাতা পুরসভার অনুমতি ছাড়াই চলছে৷ এমনকী ওই ক্যাম্পের আয়োজক দেবাঞ্জন দেবও একজন ভুয়ো আমলা৷ প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, মিমি সহ বিগত কয়েকদিন ধরে যত মানুষ এই কেন্দ্র থেকে ভ্যাকসিন নিয়েছেন তারা কি সকলে ভুয়ো ভ্যাকসিন পেলেন? আদৌ কী গেল তাদের শরীরে? আতঙ্ক শহরের মানুষের মনে।
জানা গিয়েছে, বিগত কয়েকদিন ধরে এই কেন্দ্র থেকে গড়ে অন্তত ১০০ জন করে ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন। কিন্তু এখন পুরসভার তরফ থেকে জানান হয়েছে যে, তারা কোনও ভ্যাকসিন পাঠায়নি সেখানে! তাই রাতারাতি সকলের মনে মুখে একটাই প্রশ্ন যে, এতদিন তাহলে যারা ভ্যাকসিন নিলেন, তারা আদতে কী ঢোকালেন শরীরে? এক্ষেত্রে দুটি জিনিস হতে পারে। এক, কোথাও থেকে আলাদা ভাবে ভ্যাকসিন নিয়ে এসে সেখানে দেওয়া হচ্ছিল, দুই, ভ্যাকসিনের বদলে অন্য কিছু দেওয়া হচ্ছিল সেখান থেকে। তবে এই ব্যাপারে স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন ওঠে যে, যদি অন্য কোথাও থেকে ভ্যাকসিন এনে দেওয়া হয় তাহলে সেই তথ্য পুরসভার কাছে ছিল না কেন? আর যদি জাল ভ্যাকসিন দেওয়া হয়, তাহলে মানুষের শরীরে আদতে কী দেওয়া হল এতদিন ধরে? সন্দেহ তৈরি হচ্ছে। এলাকার যে সমস্ত বাসিন্দা এই কেন্দ্র থেকে ভ্যাকসিন নিয়েছেন তারা এখন ভীত, সন্ত্রস্ত। কী করবেন, কার কাছে যাবেন, কিছুই বুঝতে পারছে না। একই রকম ভাবে আতঙ্কিত তৃণমূল সাংসদও। মিমি বলছেন, তার শরীরে যেটি দেওয়া হল তা কি আদৌ ভ্যাকসিন? ইতিমধ্যেই পুলিশ এই ব্যাপারে তদন্ত করতে শুরু করেছে। কারণ, পুরসভা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, এখানে ভ্যাকসিন তারা পাঠায়নি।
আরও পড়ুন- সাংবিধানিক সীমা লঙ্ঘন করেছেন রাজ্যপাল, লোকসভার স্পিকারের কাছে নালিশ অধ্যক্ষ বিমানের
গোটা ঘটনার প্রেক্ষিতে মিমি জানান, মঙ্গলবার কসবার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ভ্যাকসিন ড্রাইভে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল৷ ওই ক্যাম্পে গিয়ে ভ্যাকনিন নেন তিনি নিজেও৷ কিন্তু টিকা নেওয়ার পর মিমির খটকা লাগে৷ তিনি বলেন, সাধারণত টিকা নেওয়ার পরেই মোবাইলে মেসেজ আসে৷ কিন্তু তাঁর মোবাইলে কোনও মেসেজ আসেনি৷ তিনি ভেবেছিলেন কোনও কারণে হয়তো আসেনি৷ পরে নিশ্চয় আসবে৷ এর পর সার্টিফিকেটের কথা বলতেই বলা হয়, তিনি বাড়ি পৌঁছতে পৌঁছতেই সার্টিফিকেট চলে আসবে৷ কিন্তু তাও আসেনি৷ এর পর নিজের টিমকে এ বিষয়ে বলেন মিমি৷ তাঁরা জানান, ৩-৪ দিন পর সার্টিফিকেট দেওয়ার কথা বলা হয়েছে৷ এর পর নড়েচড়ে বসেন সাংসদ৷ ওই ক্যাম্প থেকে যাঁরা টিকা নিয়েছেন তাঁরা সকলে রেজিস্ট্রেশন করেছেন কিনা, খোঁজ নেন৷ তিনি আরও জানতে পারেন, ওই ক্যাম্প থেকে যাঁরা টিকা নিয়েছেন তাঁর কেউই সার্টিফিকেট পাননি৷