নয়াদিল্লি: সদ্য সমাপ্ত হয়েছে বিহার নির্বাচন৷ বছর ঘুরলেই ভোট বঙ্গে৷ করোনা পরিস্থিতিতে কী ভাবে করা হবে বিধানসভা ভোট৷ কী কী দাবি রয়েছে রাজনৈতিক দলগুলির৷ সেই সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করতেই সোমবার সর্বদল বৈঠক করলেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) আরিজ আফতাব৷ তৃণমূলের তরফে এই বৈঠকে যোগ দিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সি৷ কংগ্রেসের তরফে উপস্থিত ছিলেন ঋজু ঘোষাল, সৌম্য আইচ। সিপিএমের তরফে ছিলেন রবিন দেব৷ মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে বসে এই বৈঠক৷
আরও পড়ুন- ‘মিথ্যে’ টুইটে অপপ্রচারের অভিযোগ, কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে আইনি নোটিশ দিলীপ ঘোষের
এদিন বৈঠকের পর পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকা সংশোধনের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ নতুন ভোটার তালিকা তৈরির কাজ শুরু হবে ১৮ নভেম্বর থেকে৷ চলবে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত৷ তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে বারবার ত্রুটি মুক্ত ভোটার তালিকা তৈরি করার আর্জি জানানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনকে৷ এই প্যান্ডেমিক পরিস্থিতির মধ্যে সমস্ত ভোটার যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন এখন থেকেই সেই ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে৷ কোনও ভোটার যাতে বঞ্চিত না হয়, সেই বিষয়টির নিশ্চিত করতে হবে৷ রাজ্য স্তর থেকে জেলা স্তরের উপরে মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা রাখতে হবে৷ যে সকল পরিযায়ী শ্রমিক দীর্ঘদিন পর রাজ্যে ফিরেছেন এবং এখানেই থাকার পরিকল্পনা করছেন, তাঁদের বিষয়েও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে৷
বৈঠকের পর বাম নেতা রবিন দেব বলেন, ভোটার তালিকা তৈরির জন্য বিএলও দের নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত থাকার দাবি জানানো হয়েছে৷ পূর্ব অভিজ্ঞতা বলছে, বিএলওরা ঠিক মতো উপস্থিত থেকে কাজ করেন না৷ এছাড়াও যে সকল বিএলও-কে নিয়োগ করা হবে, তাঁরা যাতে স্থায়ী কর্মী হন, সেই দাবিও জানানো হয়েছে৷ তাঁদের বিকল্প যে কর্মীরা থাকবেন, তাঁদেরকেও স্থায়ী কর্মী হতে হবে৷ রবিন দেব বলেন, অগাস্ট মাসে ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য সময় দেওয়া হেয়ছিল৷ কিন্তু কী সংশোধন হয়েছে তা জানা যায়নি৷ জানা গিয়েছে এই বার ৯৯টি নতুন বুথ যুক্ত হয়েছে৷ কোন কোন জায়গায় ভোটার তালিকায় কী হেরফের হল, সেই তালিকাও কিন্তু পাওয়া যায়নি৷ কারণ, ৭ কোটি ১৯ লক্ষ ভোটার আগেও ছিলেন, এখনও রয়েছেন৷ এদিন বৈঠকে তালিকা থেকে ভুতুড়ে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার দাবিও জানান বাম নেতারা৷ এছাড়াও তাঁদের দাবি, যে সকল ছাত্রছাত্রী বা পরিযায়ী শ্রমিকরা বাইরে রয়েছেন, তাঁদের নাম যেন বাদ না যায়৷ এছাড়াও গঙ্গা ভাঙনের জেরে মালদা, মুর্শিদাবাদে বহু মানুষের ঠিকানা বদলে যাচ্ছে, সেই বিষয়টি বিএলও দের নজর দিতে হবে৷ তা না হলে অনেকেরই নাম বাদ পড়ে যাবে৷ প্রকৃত ভোটাররা যেন বঞ্চিত না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে৷ অন্যদিকে, কংগ্রেসের ঋজু ঘোষালও বিএলওদের বসার সময় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন৷
আরও পড়ুন- তৃণমূলে ভাঙনের ইঙ্গিত! দল ছাড়ার হুঁশিয়ারি রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের
এদিকে বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, নির্বাচন অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ হবে কিনা, সেটা পরের প্রশ্ন৷ তার আগে ত্রুটিহীন ভোটার তালিকা প্রকাশ করাটাই আসল কাজ৷ সিইও অফিসের নিজস্ব লোকবল নেই৷ তাঁদের সম্পূর্ণ কাজটাই করতে হবে রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের সাহায্যে৷ সরকারি কর্মীরা কী পরিমাণ শাসক দলের চাপে আছেন, তা সকলেরই জানা৷ আসলে সরষের মধ্যেই ভূত লুকিয়ে রয়েছে৷ নিরপেক্ষ কাজ হবে কা ভাবে? তাঁর কথায়, শাসক দল প্রশাসনকে গ্রাস করলে কী ভাবে হবে? তিনি বলেন, আগামীকাল বিহার বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশিত হবে৷ যেই জিতুক না কেন, কোনও রিগিং বা হিংসা বিহারে হয়নি৷ পশ্চিমবঙ্গে কি এমন ভোট হতে পারে না?