পুলিশে ভরসা নয় কেন? SSC-র গ্রুপ ডি নিয়োগ দুর্নীতিতে CBI তদন্তের বিরোধিতা রাজ্যের

পুলিশে ভরসা নয় কেন? SSC-র গ্রুপ ডি নিয়োগ দুর্নীতিতে CBI তদন্তের বিরোধিতা রাজ্যের

কলকাতা: স্কুল সার্ভিস কমিশনের গ্রুপ ডি পদে কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট৷ ডিভিশন বেঞ্চে সিবিআই তদন্তের তীব্র বিরোধিতা করে তদন্ত কমিশন গঠন করে প্রাক্তন বিচারপতিকে দিয়ে তদন্তের পক্ষে জোড় সওয়াল করেন রাজ্যে অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্র নাথ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, রাজ্যে সরকার চায় এই ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। প্রাক্তন বিচারপতিদের নিয়ে  কমিটি গঠন করে পুরো বিষয়টির তদন্ত করার পক্ষেও সওয়াল করেন তিনি।  

আরও পড়ুন- সপ্তাহান্তে নামবে পারদ, কবে জাঁকিয়ে বসবে শীত? জানিয়ে দিল হাওয়া অফিস

এদিন অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, বোর্ড বলছে আমরা রেকমেন্ডেশন লেটারের ভিত্তিতে নিয়োগ করেছি। সবাই হলফনামা জমা দিয়েছে। কিন্তু বলার পরেও হলফনামা জমা দেওয়ার সুযোগ পাইনি রাজ্য। তিনি আরও বলেন, অবসর প্রাপ্ত বিচারপতিদের দিয়েও তদন্তের আর্জি জানানো হয়েছে৷ তাছাড়া পুলিশ তদন্ত করতে না পারলে ব্যতিক্রমী পর্যায়ে সিবিআই তদন্ত দেওয়া হয়৷ এক্ষেত্রে তেমনটা হয়নি৷ এজি আরও জানান, তিনি এবং তাঁর আগে সম্রাট সেন এই মামলায় বারবার বিচার বিভাগীয় তদন্তের আবেদন জানিয়েছেন৷ 

এর পরেই বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের পাল্টা প্রশ্ন, গ্রুপ ডি নিয়োগ দুর্নীতিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে অনুসন্ধান করালে সরকারের সমস্যা কোথায়? জবাবে এজি বলেন, উত্তর প্রদেশ লখিমপুর খেরীর ঘটনায় সুপ্রিমকোর্টও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিতে পারত৷ কিন্তু দেয়নি৷ নিজের যুক্তির সপক্ষে আরও পাঁচটি বিষয় তুলে ধরেন তিনি৷ এজি বলেন, রাজ্যের দক্ষ পুলিশ অধিকারিকরা থাকা সত্বেও রাজ্যের ওপর আস্থা রাখা হয়নি। এই মামলায় সিবিআই তদন্তের কোনও প্রয়োজন ছিল না।একমাত্র নজিরবিহীন ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়ে থাকে৷

তিনি আরও বলেন, সিবিআই স্থানীয় পুলিশের সাহায্য ছাড়া কী ভাবে তদন্ত করবেন? এক্ষেত্রে রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়েই স্বচ্ছ ভাবে তদন্ত করানো যেত৷ সিবিআই যদি রাজনীতির উর্ধে থাকে তাহলে পুলিশ থাকবে না কেন? সিবিআই তদন্তের বিরোধিতা করে অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্র নাথ মুখোপাধ্যায় আদালতকে আরও বলেন, সিবিআইয়ের মত পুলিশও স্বাধীন সংস্থা।

মধ্যশিক্ষা পর্ষদ যখন হলফনামা দিয়েছিল, তাতে বলা হয় স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে নির্দিষ্ট সুপারিশ মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে দেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু তার আসল কপি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না৷ এর পরেই বিস্ময় প্রকাশ করে হাইকোর্ট৷ আদালত বলে, তাহলে এতজনের নিয়োগ কী ভাবে হল? সেদিনও এজি আদালতের কাছে অনুরোধ করেছিলেন, সিবিআই দেবেন না। রাজ্য পুলিশের উপর ভরসা করতে পারেন৷ রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই৷ সিবিআই তদন্ত একটা সময় গিয়ে থেমে যায়।” কিন্তু বিচারপতি বলেন, “ এই ঘটনার সঙ্গে রাজ্যের সম্পর্ক রয়েছে৷ তাই রাজ্যের কোনও সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করানো যাবে না।”
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

15 − fourteen =

‘নাক ঘষে ঘষে BJP-তে ফিরতে হবে’, দলত্যাগী তন্ময়কে তীব্র কটাক্ষ সৌমিত্রের

‘নাক ঘষে ঘষে BJP-তে ফিরতে হবে’, দলত্যাগী তন্ময়কে তীব্র কটাক্ষ সৌমিত্রের

বাঁকুড়া:  দিন কয়েক আগেই ব্রাত্য বসুর হাত ধরে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন দলীয় বিধায়ক তন্ময় ঘোষ৷ বৃহস্পতিবার বিষ্ণুপুরের দলত্যাগী বিধায়কের বিরুদ্ধে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রামণ শানালেন সাংসদ সৌমিত্র খাঁ৷ তোপ দেগে বিষ্ণপুরের বিজেপি সাংসদ বলেন, ‘‘নাক ঘষতে ঘষতে বিজেপি’তে ফিরে আসতে হবে তন্ময়কে৷’’ শুধু তাই নয়, তাঁর কথায়, খুব শীঘ্রই নাকি উঠে যাবে তৃণমূলের নামের দলটা৷ 

আরও পড়ুন- কর্মীদের গায়ে হাতে দিলে বুকে পা তুলে দেব: দিলীপ

নিজের বক্তব্যের সমর্থনে যুক্তিও খাড়া করেছেন তন্ময়৷ তিনি বলেন, ‘‘কোনও রাজনৈতিক দলই ২০ বছররের বেশি টিকতে পারেনি৷ ইতিহাস তার সাক্ষী৷ সেই প্রেক্ষিতে আর মাত্র কয়েকটা বছর৷ তার পরেই পশ্চিম বাংলা থেকে তৃণমূলের অস্তিত্ব মুছে যাবে৷ ক্ষমতা হারাবে তৃণমূল সরকার৷ রাজ্যে সরকার গড়বে ভারতীয় জনতা পার্টি৷ ’’ শুধু তাই নয়, তাঁরই নির্বাচনী কেন্দ্রের বিধায়ক তন্ময় ঘোষকে নিয়ে বিস্ফোরক সৌমিত্র৷ তন্ময়ের বিরুদ্ধে একের পর এক আক্রমণ শানিয়েছেন তিনি৷ সৌমিত্র বলেন, ‘২০২২-এর বিধানসভায় বিষ্ণপুর থেকে তন্ময়কে টিকিট দেওয়া নিয়ে দলের একাংশের আপত্তি ছিল৷ কিন্তু সেই আপত্তি উপেক্ষা করেই তাঁকে টিকিট দেওয়া হয়েছিল৷ এটাই ছিল বড় ভুল৷’ তোপ দেগে সৌমিত্র আরও বলেন, ‘কয়লা’ থেকে ‘হিরে’ খুঁজতেই তন্ময়কে প্রার্থী করা হয়েছিল৷ কিন্তু উনি সবটাই কয়লা করে ছাড়বেন৷ 

আরও পড়ুন- স্কুল নিয়ে তথ্য নেই সরকারের কাছে! ‘অবাক’ হাইকোর্টের তীব্র ভর্ৎসনা

ভোট পর্ব মিটতেই সপুত্র ঘরওয়াপাসি করেছিলেন মুকুল রায়৷ সেই সময় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, তালিকায় আরও বিধায়ক আছেন৷ তা ক্রমশ সত্য প্রমাণিত হচ্ছে৷ একের পর এক বিজেপি বিধায়ক তৃণমূলে ফিরতে শুরু করেছেন৷ সেই সরণী ধরেই তৃণমূলে ফেরেন তন্ময়৷ দলে যোগ দিয়েই তিনি বলেছিলেন, ‘‘বিজেপি ফাঁকা গলায় বেশি আওয়াজ দেয়৷ বুথ স্তরে সংগঠন বলে কিছুই নেই৷ যাঁরা বিজেপি’র টিকিটে জিতেছেন তাঁরা নিজেদের ক্যারিশ্মায় জিতেছেন৷’’ অন্যদিকে বৃহস্পতিবার সৌমিত্র বলেন, ‘‘বিষ্ণুপুরে তৃণমূল কংগ্রেস চার ভাগে বিভক্ত। আগামী পুরসভা নির্বাচনে এটাকেই হাতিয়ার করতে হবে আমাদের।”
 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen − 13 =