কলকাতা: সকলকে স্তম্ভিত করে আচমকা তৃণমূল থেকে ইস্তফা দিলেন দীনেশ ত্রেবেদী৷ অন্তরাত্মার ডাকে সাড়া দিয়ে তৃণমূল ছাড়ার কথা জানালেন রাজ্যসভার সাংসদ৷ বললেন, দলে আমার দম বন্ধ হয়ে আসছিল৷ দলের জন্য কাজ করতে পারছিলাম না৷ তিনি বলেন, কখনো না কখনো অন্তরাত্মার ডাক শুনতে হয়৷ আমার জীবনেরও এখন সেই মুহূর্ত এসেছে৷ দীনেশ ত্রিবেদী বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলেই খবর৷ তবে সম্ভাব্য দলত্যাগীদের তালিকায় তিনি একেবারেই ছিলেন না৷ ফলে বলা যেতে তাঁর এই ইস্তফায় সারপ্রাইডজ রাজনৈতিক মহল৷ রাজনীতির কারবারিরা বলছেন অত্যন্ত সন্তর্পণে বিজেপি’র সঙ্গে গাঁটছাড়া বাঁধেছেন তিনি৷ তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে৷
আরও পড়ুন- সংসদে দাঁড়িয়ে ইস্তফা দীনেশ ত্রিবেদীর, কী তাঁর রাজনৈতিক গুরুত্ব?
তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘‘আমি দুঃখিত৷ দীনেশবাবু আগে দলের কাউকে পদত্যাগ করার কথা জানাননি৷ গত রবিবারও ওঁর সঙ্গে দিল্লিতে গিয়েছিলাম৷ তখনও উনি ওঁনার অসন্তোষের কথা বলেননি৷ কোনও ভাবেই দলকে কিছু বুঝতে দেননি৷ উনি ইস্তফা দেবেন কেউ বুঝতে পারেনি৷ তবে দু’একজনের কাছে ক্ষোভ করেছিলেন বলে জানা গিয়েছিল৷’’
আবার বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং বলেন, ‘‘দীনেশ ত্রিবেদী বিজেপি’তে এলে তাঁকে স্বাগত জানানো হবে৷ উনি অনেক দিন ধরেই তৃণমূলে অস্বস্তিতে ছিলেন৷ তৃণমূলে সকলের গলা টিপে রাখা হয়৷ কেউ কোনও কথা বলতে পারবে না৷ একজন বলবেন, আর সকলকে শুনতে হয়৷ দীনেশ ত্রিবেদী সত্যি কথা বলায় ওঁনাকে পদ থেকে সরানো হয়েছিল৷’’ তবে উনি কবে বিজেপি’তে যোগ দিচ্ছেন সে সম্পর্কে তাঁর কাছে কোনও তথ্য নেই বলেই জানান অর্জুন সিং৷
তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ‘‘এদিন রাজ্য সভায় নজির বিহীন ভাবে সময় শেষ হওয়ার পরেও ওঁনাকে বলতে দেওয়া হয়েছে৷ এটা বিস্ময়কর৷’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে পরাজিত হওয়ার পর দিদির পায়ে এসে বলেছিলেন আমাকে উদ্ধার করুন৷ আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে৷ তাঁকে উদ্ধার করে রাজ্যসভায় পাঠানো হল৷ এখন ফের বলছেন দম বন্ধ হয়ে আসছে৷ এত ঘন ঘন দমবন্ধ হয়ে গেলে মুশকিল৷ শারীরিক অসুস্থতার কারণে নাকি রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য দলত্যাগ করলেন, সেটা উনিই জানেন৷’’
আরও পড়ুন- রাস্তায় বসে বিক্ষোভ আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থীদের, সেই নিয়োগের দাবি
বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমি জানতাম পাপী, ভোগী, গদ্দাররা তৃণমূল ছেড়ে চলে গিয়েছে৷ শুধু ত্যাগীরাই পড়ে রয়েছেন৷ আরও একজন দল ছাড়লেন৷ তাঁর জন্য কী বিশেষণ দেওয়া হবে? এটা তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ বিষয়৷ উনি বর্ষীয়ান নেতা৷ রেলমন্ত্রী ছিলেন৷ সত্য কথা বলায় পদ থেকেও রাতারাতি সরতে হয়েছিল৷ উনি দলে আসতে চাইলে আসবেন৷’’
বঙ্গ বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘উনি মানুষের জন্য কাজ করতে চান৷ উনি দলে আসতে চাইলে আমরা স্বাগত জানাব৷ আমরা সবাইকে নিয়েই নতুন বাংলা, নতুন ভারত গড়তে চাই৷’’