সংসদে দাঁড়িয়ে ইস্তফা দীনেশ ত্রিবেদীর, কী তাঁর রাজনৈতিক গুরুত্ব?

সংসদে দাঁড়িয়ে ইস্তফা দীনেশ ত্রিবেদীর, কী তাঁর রাজনৈতিক গুরুত্ব?

নয়াদিল্লি: একুশের বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে রাজ্যের শাসক দলের আকাশে যে দলবদলের কালো মেঘ দেখা দিয়েছে তার জেরে রীতিমতো বিপর্যস্ত তৃণমূল কংগ্রেস। শাসক দলকে আরো কোণঠাসা করতে উঠে পড়ে লেগেছে বিজেপিও। এমতাবস্থায় দলের হাল ধরতে যখন স্বয়ং মাঠে নেমেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখনই দলীয় ভাবমূর্তিতে ফের লাগল জোর ধাক্কা। পদত্যাগ করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সদস্য দীনেশ ত্রিবেদী।

তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে যে বিশৃঙ্খলা নৈরাজ্য চলছে তা আর মেনে নিতে পারছেন না, এদিন রাজ্যসভার সভাকক্ষে এমনটাই জানিয়েছেন ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী। তিনি বলেন, “তৃণমূলে চুপ করে থাকতে থাকতে আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে। আমি আর চোখে দেখতে পারছি না। ওদিকে অত্যাচার চলছে। আমি বাংলায় গিয়ে মানুষের কথা বলতে চাই।” সংসদের উচ্চকক্ষে এহেন বিস্ফোরক মন্তব্যের পরই দল থেকে ইস্তফা দেন দীনেশ ত্রিবেদী।

কিন্তু, একুশের ভোটের আগে উত্তপ্ত রাজনৈতিক আবহে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেওয়া এই দীনেশ ত্রিবেদী কে? বাংলায় কী তাঁর রাজনৈতিক গুরুত্ব? আসুন একবার চোখ রাখা যাক সেদিকে।

রাজ্যসভা থেকে পদত্যাগ করা দীনেশ ত্রিবেদীর রাজনৈতিক আনুগত্য নিয়ে রয়েছে বিস্তর বিতর্ক। শোনা যায় আশির দশকে কংগ্রেসী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এই প্রবীণ নেতা। কিন্তু পরে ৯০-এর দশকের শেষ দিকে তিনি যোগ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে। ২০১১ সালে দল ক্ষমতায় এলে রেলমন্ত্রী নির্বাচিত হন দীনেশ ত্রিবেদী। তখন থেকেই শুরু হয়েছিল খানিক মতানৈক্য। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে রেলের ভাড়া না বাড়ায় বাজেটে তা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিলেন দীনেশ ত্রিবেদী। কিন্তু তাতে দলনেত্রী রুষ্ট হয়েছিলেন বলেই শোনা যায়। এর পরের বছরেই রেলমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন দীনেশ ত্রিবেদী।

দলের হয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ক্ষুরধার সমালোচনায় একাধিকবার প্রশংসা কুড়িয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের এই নেতা। ২০০৯ সালে ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন দীনেশ ত্রিবেদী। ২০১৪ সালেও টিকিট পান। বস্তুত তাঁকে ব্যারাকপুরের প্রার্থী ঘোষণা করা নিয়েই অর্জুন সিংয়ের সঙ্গে বিরোধ বেঁধেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। পরে গেরুয়া শিবিরের টিকিটে ভোটে জেতেন অর্জুন সিং। এহেন দীনেশ ত্রিবেদীর মুখে ভোট পূর্ববর্তী আবহে ফের শোনা যাচ্ছে দল বিরোধী সুর। তবে কি এবার গেরুয়া রাজনীতির দিকে ঝুঁকতে চলেছেন দীনেশ ত্রিবেদী? শুরু হয়েছে জল্পনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen + 6 =