কলকাতা: যোগব্যায়াম, শরীরচর্চা এবং এনসিসির মতো গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনিং থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষ ছাত্র-ছাত্রীদের কখনই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বঞ্চিত করতে পারে না। এমনটাই পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাইকোর্টের। এই সংক্রান্ত এক মামলার শুনানিতে সোমবার এমনটাই জানিয়েছেন, বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়। নির্দিষ্ট একটি স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং পরিচালন কমিটির বিরুদ্ধে পড়ুয়াদের বঞ্চিত করে রাখার অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন- ‘তিহারে গেলে লুচি-ডাল, কচি পাঁঠার ঝোল বেরিয়ে যাবে…’, বীরভূমে দাঁড়িয়ে কেষ্টকে খোঁচা শুভেন্দুর
হুগলির ভদ্রেশ্বরের তেলনিপাড়া ভদ্রেশ্বর হাইস্কুলে ২০০৮ সাল থেকে এনসিসি’র ট্রেনিং ভালভাবেই চলছিল। কিন্তু ২০১১ সাল এবং ২০১৪ সালের রাজ্য-কেন্দ্র সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর থেকে বিষয়টি পরিবর্তিত হল। কেন্দ্রের সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর যোগব্যায়াম, শারীরশিক্ষা, স্বাস্থ্য সচেতনতার ওপরও জোর দেওয়া বাধ্যতামূলক হল। এই মর্মে সমস্ত রাজ্যগুলিতে নির্দেশিকা পাঠায় কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার। পশ্চিমবঙ্গেও সেই নির্দেশিকা এসেছিল যে সমস্ত স্কুলগুলিতে ছাত্রছাত্রীদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে যোগব্যাম শরীরচর্চা এবং এনসিসি করা বাধ্যতামূলক। কেন্দ্রের এই ফরমানের রাজ্যের বেশ কিছু স্কুল বিরোধিতা করে এবং এনসিসি’র ট্রেনিং দেওয়ার ক্ষেত্রে অনীহা প্রকাশ করে। যার মধ্যে অন্যতম তেলনিপাড়া ভদ্রেশ্বর হাইস্কুল।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”দুর্নীতির শিকড় কত গভীরে? ধরা পড়বে মূল মাথা? Will SSC scam mastermind be caught?” width=”560″>
স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালন কমিটির সিদ্ধান্ত নিয়ে এনসিসি’র কার্যক্রম ২০১৬ সালে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেয়। এনসিসি’র শিক্ষক দিব্যেন্দু বিশ্বাস বারবার আবেদন করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং ডিআইকে। তাতেও টনক নড়েনি স্কুল কর্তৃপক্ষের বলে অভিযোগ ওঠে। এমনকি অভিভাবকরা এবং এনসিসি’র শিক্ষক স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং হুগলির স্কুল পরিদর্শকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। পরে সেই অভিযোগ পেয়ে ডিআই স্কুলকে নির্দেশ দিলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ এনসিসি’র প্রোগ্রাম চালু করেনি বলে অভিযোগ। এরপরই দিব্যেন্দু বিশ্বাস কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।
আরও পড়ুন- ‘দেশে থাকার অধিকার নেই!’, ডিএ আন্দোলনাকারীদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক ফিরহাদ
মামলা শুনানি পর্বে দিব্যেন্দু বিশ্বাসের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী আদালতে অভিযোগ করেন, ২০০৮ সাল থেকে স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের যোগব্যায়াম ,শরীরচর্চা এবং এনসিসির ট্রেনিং হয়ে আসছিল। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং পরিচালন কমিটির উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের এই সমস্ত সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করে রেখেছে। করোনা মহামারীর পর অন্যান্য স্কুল-কলেজ স্বাভাবিক ছন্দে ফিরলেও তেলনিপাড়া ভদ্রেশ্বর হাইস্কুল ছাত্র-ছাত্রীদের শরীরচর্চা এবং এনসিসি ট্রেনিং থেকে বঞ্চিত করে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি অবিচার করছেন। এই কথা শোনার পর স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতিকে কলকাতা হাইকোর্ট তলব করেছিল। কিন্তু সেই নির্দেশ পালন করেনি স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং তারা আদালতেও হাজিরা দেয়নি। এরপর বিচারপতির নির্দেশ, হুগলির স্কুল পরিদর্শকের নির্দেশ মেনে অবিলম্বে স্কুল কর্তৃপক্ষ অতি শীঘ্র এনসিসি চালু করবে।