কলকাতা: বন সহায়ক পদে নিয়োগে কারসাজির হয়েছে৷ দল ছাড়তেই দুর্নীতির অভিযোগে প্রাক্তন বনমন্ত্রীকে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এবার বনসহায়ক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করলেন কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী।
আরও পড়ুন- বিপুল শূন্যপদে নিয়োগ, দেড় কোটি কর্মসংস্থানের ‘বড়’ আশ্বাস মমতার
তাঁদের অভিযোগ, কী ভাবে বন সহায়ক পদে নিয়োগ করা হল তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে৷ সম্পূর্ণ বেআইনি ও অবৈধ ভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলেছে। তাঁদের দাবি, এই নিয়োগ প্রক্রিয়া অবিলম্বে বাতিল করতে হবে৷ আগামী সপ্তাহে এই মামলার শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷ চাকরি প্রার্থীদের তরফে মামলাটি লড়ছেন আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী৷
বনদফতরের নিয়োগ প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেছেন চাকরিপ্রার্থীদের৷ সজল দে সহ ১২ জন মামলাকীর চাকরিপ্রার্থীর পক্ষে আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী জানান, ২০০০ শূন্য পদে বনসহায়ক নিয়োগ করা হবে এই বলে গত ৮ই আগস্ট ২০২০ সালে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল রাজ্যের বনদপ্তর। কিন্তু সেই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দূর্নীতি হয়েছে। এই নিয়োগে প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা।
আরও পড়ুন- বিরোধীদের জবাব দিয়ে কর্মসংস্থানে কল্পতরু মমতা, ‘যুব শক্তি’ প্রকল্পে চাকরির সুযোগ
রাজ্যের বন দফতরের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার আগে যোগ্য প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হবে৷ তালিকা প্রকাশ না করেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করে দেয় বন দফতর। যা সম্পূর্ণ বেআইনি। পরীক্ষার্থীরা বার বার রাজ্যের কাছে আবেদন করেও কোন লাভ না হওয়ায় SAT এর দ্বারস্থ হন৷
এদিকে, বনসহায়ক নিয়োগে কারসাজির তদন্ত হবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এদিন সেই সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিল রাজ্য মন্ত্রিসভা৷ ৩ তারিখ আলিপুর দুয়ারের জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, আগামী চার-পাঁচ দিনের মধ্যে নির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়ে যাবে ঠিকই, কিন্তু নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত চলবে৷ গোটা বিষয়টি রিভিউ করে দেখা হবে৷ যাঁরা বঞ্চিত হয়েছেন, তাঁদের সকলকে সুযোগ দেওয়া হবে৷ নাম না করেই রাজীবকে খোঁচা দিয়ে মমতা বলেন, ‘‘আজ বাইরে গিয়ে বড় বড় কথা বলছে৷ কিন্তু বন সহায়ক পদে নিয়োগ নিয়ে কী করে গিয়েছেন, সেই বিষয়ে তাঁকে আগে প্রশ্ন করা হোক৷’’
আরও পড়ুন- বাজেট: পার্শ্ব শিক্ষকদের ৩ শতাংশ হারে বেতন বৃদ্ধি, ঘোষণা মমতার
ওই দিন বিকেলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জবাব দেন গেরুয়া শিবিরের নবাগত সদস্য রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়৷ পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, কার সঙ্গে কি কথা হয়েছে এবং কোথা কোথা থেকে সুপারিশ এসেছে সব কিছুই তিনি জানেন৷ সব কিছুর রেকর্ড তাঁর কাছে রয়েছে। যদি তিনি দুর্নীতি করেই থাকেন তাহলে কেন তাঁকে দল থেকে তাড়ানো হয়নি? সেই নিয়েও প্রশ্ন তোলেন রাজীব৷ তবে কাঙ্খিত পথেই এবার বন সহায়ক দফতরের ‘দুর্নীতি’ নিয়ে তদন্তের অনুমোদন দিল নবান্ন।