রানিগঞ্জ: পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সেই সঙ্গে কয়লা খনির ধসে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের হাতে ফ্ল্যাট তুলে দিলেন তিনি৷
রানিগঞ্জে ২৯ হাজার মানুষের পুর্বাসনের বন্দোবস্ত করা হয়েছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ এদিন আরও একবার কৃষক আন্দোলনকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যা৷
আরও পড়ুন- ‘দু’পয়সার সাংবাদিক’ মন্তব্যে অটল মহুয়া! ড্যামেজ কন্ট্রোলে সুব্রত
কৃষি আইনের বিরুদ্ধে লড়াই চালানো কৃষকদের নামে আজকের দিনটি উৎসর্গ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, তৃণমূল বনধ সমর্থন না করলেও আজ কৃষকদের ডাকা ধর্মঘটকে সমর্থন জনিয়েছে রাজ্যের শাসক দল৷ তাদের ডাকা বনধের সময় পেরনোর পরই এই অনুষ্ঠান শুরু করা হয়েছে৷ রনিগঞ্জের মঞ্চ থেকে তুলে ধরেন তৃণমূল সরকারের কাজের খতিয়ান৷ তিনি বলেন, রাজ্যের ১০ কোটি মানুষরে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা হবে৷ দুয়ারে সরকার অনুষ্ঠানসূচির মাধ্যমে মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হবে স্বাস্থ্য সাথী, যুবশ্রী, কন্যাশ্রী, ঐক্যশ্রী, সবুজ সাথী, রেশন কার্ড৷ স্বাস্থ্য সাথীর কার্ডে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করা যাবে বলেও জানান তিনি৷
মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে প্রায় ২৪টি নতুন মেডিক্যাল কলেজ, ৪৩টি মাল্টি সুপার হাসপাতাল, ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়, ৫৭৭টি কলেজ ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৭ হাজার নতুন স্কুল, সকল ছাত্রছাত্রীকে বিনামূল্য বই, স্কুলের পোশাক, জুতো, টেস্ট পেপার সবকিছু দেওয়া হয়েছে৷ দ্বাদশ শ্রেণির ১২ লক্ষ পড়ুয়াকে ট্যাবলট দেওয়া হবে৷
তিনি আরও জানান, তফশিলি জাতি ও উপজাতিদের মানুষের জন্য পেনশন চালু করা হয়েছে৷ আদিবাসী মানুষদের জন্য রয়েছে জয় জহর প্রকল্প৷ রয়েছে কৃষক বন্ধু প্রকল্প৷ বাংলায় ৭০ লক্ষ কন্যাশ্রী আছে৷ জুন মাস পর্যন্ত বিনা পয়সায় রেশন দেওয়া হবে৷ তৃণমূল সরকার থাকবে এবং বিনা পয়সায় রেশন দেবে৷ কাউকে খাবার জন্য চিন্তা করতে হবে না৷ শিক্ষা-স্বাস্থ্য কোনও কিছুর জন্য চিন্তা করতে হবে না রাজ্যের মানুষকে৷
আরও পড়ুন- কৃষকদের সমর্থনে জায়গায় জায়গায় বনধ পালন পশ্চিমবঙ্গে
রাজ্যের উন্নয়নের খতিয়ান দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানান কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভকে আমি বাঁচিয়েছি৷ দিল্লি সেই চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ বন্ধ করে দিতে চায়৷ বিজেপি সরকার ইসিএল প্রাইভেটাইজড করে দিতে চায়৷ বিএসএনএল বেচে দিতে চায়৷ আমরা যত দিন বেঁচে থাকব, রেলকে বেচতে দেব না, ইসিএল বেচতে দেব না৷
তোপ দেগে তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে অনেক প্রতিশ্রুতি দেয়৷ আসানসোলে বিজেপির সাংসদ কী দিয়েছে আপনাদের? কিছুই দেয়নি ৷ আমরা কেন্দ্রকে বলেছিলাম, বেআইনি খাদানগুলো যৌথ ভাবে কাজ করে আইনি করে দিই৷ কিন্তু কেন্দ্র সেই প্রস্তাব মানেনি৷ অথচ ডিপিএল প্রায় ১১ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে৷ তবু বসিয়ে মাইনে দিচ্ছি৷ কারও রুজি রোজগার বন্ধ করে দিইনি৷ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, কয়লা মাফিয়াদের নিয়ে বড় বড় কথা বলা হচ্ছে৷ বিজেপি’র সঙ্গেই রয়েছে বড় বড় কয়লা মাফিয়া৷ কয়লা তো দিল্লির অধীনে৷ তাহলে কে লুঠ করছে?